নির্ভেজাল গ্রাম্য জীবন উপভোগ করতে চান? ঘুরে আসুন সুন্দরবনের কুমিরমারী

Published : Aug 07, 2025, 09:56 PM IST
Sundarban

সংক্ষিপ্ত

নদীর বুকে ভেসে নৌকায় বসে খাওয়া দাওয়া, আর দূর থেকে ম্যানগ্রোভের জঙ্গল দেখলে কি আর সুন্দরবন ঘোরা পোষায়!  প্রতিবেদনে এমন এক জায়গার কথা উল্লেখ করা আছে, যেখানে সুন্দরবনের গ্রাম্য জীবনকে কাছে থেকে উপভোগ করতে পারবেন আপনিও, সাথে থাকবে প্রকৃতির হাতছানি।

সুন্দরবন - নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, খাড়ির কুমির আর ম্যানগ্রোভ অরণ্য। তবে আজকে আর সেই চেনা সুন্দরবনের কথা বলবো না। এবার একটু অন্যরকমভাবে সুন্দরবন ঘুরে দেখতে পারেন, যেখানে থাকবে প্রকৃতির মাঝে নির্ভেজাল গ্রাম্য পরিবেশ।

বইয়ে পড়া শ্বাসমূল, ঠেসমূল, গরান, গেঁওয়ার জঙ্গল, উপকূলীয় পাখির ঝাঁক সবই ভীষণভাবে মনে গেঁথে থাকার মতো। চিকচিক করা নদীর পাড়ে দাড়িয়ে মাছ ধরা, মৌমাছির চাক ভেঙে মধু সংগ্রহ এখন আর শহরে কোথায় দেখা যায়! এই দৃশ্যও চাক্ষুস হবে কুমারমারীতে। এখানকার প্রায় প্রত্যের বাড়িতেই কিছু না কিছু সবজির গাছ, সেখান থেকে নিয়েই টাটকা সব্জি ঘরোয়া রান্না করেন। এতেই তারা দিব্যি খুশি, স্বাস্থ্যসম্পন্ন।

কুমারমারী কেন যাবো! কী আছে এখানে দেখার?

গোসাবা ব্লকে চার দিকে নদী ঘেরা ছোট্ট গ্রাম কুমিরমারী। রায়মঙ্গল, কুরানখালি, পুইজালি এবং সারসা - এই চারটি নদী বেষ্টিত এই দ্বীপে আসতে একমাত্র ভরসা জলপথ। তাই গ্রামের মানুষের জীবীকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম প্রকৃতি ও নদী - চাষবাস, মাছ ধরা। ইদানীং মৌমাছি পালনও শুরু করেছেন বিকল্প জীবিকার পথ হিসেবে।

দেখার মতো পাহাড়, সমুদ্র, স্থাপত্য নেই এখানে। তবে গ্রামের স্নিগ্ধ পরিবেশ, খেত-খামার, নদী, পথ, খালবিল দেখেই দিব্যি সময় কেটে যাবে। হাতে দুদিন সময় নিয়ে গেলেই যথেষ্ট, ভ্রমণ সম্পূর্ণ করা যাবে। একদিন রাখবেন গ্রাম্য জীবন ও প্রকৃতি অনুভব করতে। আর দ্বিতীয় দিনে একটি নৌকা ভাড়া করে বেরিয়ে পড়তে পারেন রায়মঙ্গল নদীর বুকে ভেসে বেড়াতে। সজনেখালি, সুধন্যখালি, ঝিঙেখালি এগুলি দেখে নিতে পারেন।

তবে এর মধ্যে থেকে সবচেয়ে সুন্দর ঝিঙেখালি। রায়মঙ্গল নদী সংযোগকারী খাঁড়ির এক দিকে, তবে বসিরহাট রেঞ্জের মধ্যে পড়ে এই অঞ্চল। এখান থেকে আবার বুড়িরডাবরি এবং হরিখালিও ঘুরে নেওয়া যায়। এই প্রত্যেকটি জায়গাতেই রয়েছে নজরমিনার। সাজানো গোছানো গোটা অঞ্চলের সুন্দর দৃশ্য চোখ জুড়োবে আপনার। ভাগ্য ভালো থাকলে, এই নজরমিনারে বসেই দেখা পেতে পারেন দক্ষিণরায়ের, দ্য রয়েল বেঙ্গল টাইগার।

কুমিরমারী থেকে আরও একটি জায়গায় ঘুরে দেখতে পারেন, সেটি হলো সামশেরনগর, বেশ ভালো জায়গা। এখানে আসতে হলে আগে নৌকো করে সর্দার পাড়া, সেখান থেকে টোটো করে চলে আসুন সামশেরনগর।

ভীষণ সহজ, সরল এখানকার মানুষজন ও তাদের জীবনযাত্রাও। আপনি রোজকার ব্যস্ত, কোলাহলপূর্ণ জীবনে হাপিয়ে উঠলে ক্লান্তি সারাতে আসতেই পারেন কুমিরমারী।

কোথায় থাকবেন?

কুমিরমারীতে থাকার জন্য খুব বিলাসবহুল কিছু আশা করলে পাবেন না। থাকার জন্য একটি মাত্র ইকো রিসর্ট রয়েছে। এছাড়া আরও দু-একটি থাকার জায়গাও পেয়ে যাবেন।

কী ভাবে যাবেন ভাবছেন?

কুমিরমারী পৌঁছতে হলে, কলকাতা থেকে গাড়িতে করে সরাসরি ধামাখালি পৌঁছে যান, সেখান থেকে নৌকায় পারেন কুমিরমারী। খারীয় নদীর বুকে ভাসতে ভাসতে ম্যানগ্রোভ দেখার উত্তেজনা আপনার যাত্রা আরও আনন্দময় ও উপভোগ্য করে তুলবে।

ট্রেনে করে যেতে হলে, শিয়ালদহ থেকে ক্যানিং পৌঁছোন। সেখান থেকে অটো বা বাসে করে যেতে হবে ধামাখালি। এখানে থেকে একইভাবে পৌঁছোন কুমিরমারী।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং পারমিটের জন্য কীভাবে আবেদন করবেন?
শীতের দিনে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে কলকাতা থেকে একদিনে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই জায়গাগুলিতে