শীতের দিনে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে কলকাতা থেকে একদিনে গিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই জায়গাগুলিতে

Published : Dec 05, 2025, 04:59 PM IST
village women business

সংক্ষিপ্ত

শীত এলেই ঘুরে বেড়াতে মন চায়। কিন্তু সব সময় দূরে যাওয়া যায় না। তাই সপরিবারে সকাল গিয়ে রাতে ফেরা যায়, এমন পাঁচ গন্তব্যের ঠিকানা জেনে নিন।

শীতের দিনে কলকাতার কাছে একদিনে ঘুরে আসার জন্য বেশ কয়েকটি জায়গা টাকি, দেউলটি, মুকুটমণিপুর, এবং হুগলি নদীর ধারের কিছু স্থান দারুণ। সকালে গিয়ে রাতে ফেরা যায় এমন কয়েকটি জায়গা নিয়ে আলোচনা করা হলো। যেমন:

১. টাকি (Taki, North 24 Parganas): ইছামতী নদীর মাঝে ছোট দ্বীপ (গঙ্গাসাগর মেলার সময় বিখ্যাত), নৌকা বিহার, সুন্দর গ্রাম্য পরিবেশ, বনভোজন ও স্থানীয় মাছের স্বাদ।

সকালের দিকে পৌঁছে ইছামতীতে নৌকা বিহার করুন, ছোট দ্বীপ ঘুরে দেখুন, বনভোজন করুন এবং স্থানীয় জেলেদের জীবনযাত্রা দেখুন।

কীভাবে যাবেন : কলকাতার শিয়ালদহ বা হাওড়া থেকে হাসনাবাদ লোকালে গিয়ে টাকি রোড বা বাসিরাবাদ স্টেশনে নামুন, তারপর টোটো বা অটোতে করে টাকিতে পৌঁছানো যায়।

২. দেউলটি (Deulti, Howrah): শান্ত ও নিরিবিলি গ্রাম, পিকনিকের জন্য উপযুক্ত জায়গা, রূপনারায়ণ নদীর কাছাকাছি পরিবেশ, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের স্মৃতিবিজড়িত স্থান।

রূপনারায়ণ নদীর তীরে পিকনিক করুন, শরৎচন্দ্রের ভিটেমাটি দেখুন, সবুজে মোড়া গ্রাম্য পথ ধরে হেঁটে বেড়ান।

কীভাবে যাবেন: হাওড়া থেকে মেদিনীপুর/খড়গপুর লোকালে উঠে দেউলটি স্টেশনে নামুন।

৩. মুকুটমণিপুর (Mukutmanipur, Bankura/Purulia border): সবুজ প্রকৃতি, কংসাবতী ও দ্বারকেশ্বর নদীর মিলনস্থল, বিশাল ব্যারেজ, শান্ত পরিবেশ, পিকনিকের জন্য দারুণ।

ব্যারেজ ও তার চারপাশের প্রকৃতি উপভোগ করুন, নৌকা বিহার করুন, নদীর ধারে পিকনিক করুন।

কীভাবে যাবেন: হাওড়া থেকে বাঁকুড়া বা পুরুলিয়াগামী ট্রেনে চড়ে বিষ্ণুপুর/খড়গপুর/আদ্রা পৌঁছে সেখান থেকে বাস বা গাড়ি করে মুকুটমণিপুর। একদিনে যেতে হলে সকাল সকাল বের হতে হবে।

৪. রিচটার্সডেল (Richtersdal, South 24 Parganas): হুগলি নদীর ধার, সুন্দর সূর্যাস্ত, শান্ত ও মনোরম পরিবেশ, যারা ভিড় এড়িয়ে নিরিবিলিতে সময় কাটাতে চান তাদের জন্য।

নদী তীরে বসে সূর্যাস্ত দেখুন, নৌকায় ঘুরুন, স্থানীয় জেলেদের জীবনযাত্রা দেখুন, পিকনিক করুন।

কীভাবে যাবেন: ডায়মন্ড হারবার বা ফলতার দিক থেকে বাস বা গাড়ি করে যাওয়া যায়, অথবা বারুইপুর/সোনারপুর থেকে লোকাল ধরেও যাওয়া যায়।

৫. ডায়মন্ড হারবার (Diamond Harbour, South 24 Parganas):* হুগলি নদীর মোহনার কাছাকাছি, সুন্দর সূর্যাস্ত, পুরনো পর্তুগিজ দুর্গ, শান্ত পরিবেশ, সুন্দর ওয়াটারফ্রন্ট।

নদীর ধারে হেঁটে বেড়ানো, সূর্যাস্ত দেখা, লঞ্চে করে গঙ্গা ভ্রমণ, সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করা।

কীভাবে যাবেন: শিয়ালদহ থেকে লোকাল ট্রেনে ডায়মন্ড হারবার যাওয়া যায়। সকালে গিয়ে বিকেলে বা সন্ধ্যায় ফেরা যায়।

৬. হংসেশ্বরী মন্দির:

মন্দির তবে আর পাঁচটা মন্দিরের মতো নয়। এর গঠনশৈলীই আলাদা করেছে হুগলির বাঁশবেড়িয়ার হংসেশ্বরী মন্দিরকে। ৫ তলা এই মন্দিরে রয়েছে ১৩টি চূড়া। চূড়ার মাথায় পদ্মের কুঁড়ি। মন্দিরে আরাধ্যা দেবী হংসেশ্বরী। কার্যত তিনি মা কালীরই এক রূপ। পদ্মের উপর দেবী অধিষ্ঠিতা। চতুর্ভুজা মূর্তির গাত্রবর্ণ নীল। উপরের বাম হাতে তরবারি, নীচের বাম হাতে কাটা মুণ্ড, উপরের ডান হাতে অভয় মুদ্রা, নীচের ডান হাতে আশীর্বাদের ভঙ্গিমা। হংসেশ্বরী মন্দিরের নির্মাণশৈলীতে তন্ত্রের নানা বৈশিষ্ট্য চোখে পড়ে।

কীভাবে যাবেন: হাওড়া-কাটোয়া লাইনে বাঁশবেড়িয়া স্টেশনে নেমে হংসেশ্বরী মন্দিরে আসতে পারেন। ব্যান্ডেল স্টেশনে নেমে অটো বুক করেও এখানে আসতে পারেন। কলকাতা থেকে দিল্লি রোড ধরেও গাড়ি নিয়ে আসতে পারেন। দূরত্ব মোটমুটি ৫০ কিলোমিটার।

৭. মাইথন ও কল্যানেশ্বরী মন্দির:

আসানসোল থেকে যেতে হয় মাইথন। তবে জলাধারটি পড়ে ঝাড়খণ্ডে। জায়গাটি বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানাবর্তী। সকালে বেরোলে ২-৩ ঘণ্টাতেই পৌঁছনো যায় মাইথনে। ছোট ছোট টিলা বের দিয়ে রেখেছে জলাধারটিকে। সৌন্দর্য অসাধারণ। জলক্রীড়ার নানা রকম ব্যবস্থা রয়েছে। চাইলে ভেসে পড়তে পারেন শিকারার ধাঁচে তৈরি নৌকোয়। আবার রোমাঞ্চ চাইলে আছে স্পিডবোটও। মাইথনের অদূরে খুব পুরনো কল্যাণেশ্বরী মন্দির। লোকমুখে শোনা যায়, ‘মাই কা থান’ থেকে এই জায়গায় নাম হয়ে গিয়েছে মাইথন। একটি গাড়ি ভাড়া করলে ডিয়ার পার্ক, পাঞ্চেৎ জলাধার-সহ আশপাশে বেশ কয়েকটি জায়গা ঘুরে নেওয়া যায়। চাইলে থাকতেও পারেন। রাতেও থাকার সুব্যবস্থা আছে। দুপুরে খাওয়ার জন্য মাইথনের আশপাশে প্রচুর ভাল হোটেল আছে।

কীভাবে যাবেন: হাওড়া থেকে ট্রেনে আসানসোল, কুমারডুবি বা বরাকর গিয়ে অটো বা গাড়িতে মাইথন। কুমারডুবি স্টেশনটি মাইথনের সবচেয়ে কাছে। আসানসোল দিয়ে গেলে মাইথন এবং কল্যাণেশ্বরী যাওয়ার বাস মিলবে।

এই জায়গাগুলো একদিনে ঘুরে আসার জন্য চমৎকার এবং শীতের দিনে কলকাতার কাছে ভ্রমণের জন্য আদর্শ।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

ভারতেই নরওয়ের মত জায়গার উপভোগ করুন আর শীতের ছুটি কাটিয়ে আসুন
খুব কম খরচে দুবাই ভ্রমণ? বুর্জ খলিফায় চড়ুন