বলা হয়, ভিটামিন-সি-র রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাংঘাতিক। তাই সারাবছর তো বটেই, বিশেষ করে শীতকালে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে এই ভিটামিন খাওয়া দরকার। সবুজ শাক-সবজি আমরা খাই ঠিকই, তবে তা নিয়ম করে নয়। তাই শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন-সি-র ঘাটতি পূরণ হয় না। সেক্ষেত্রে, সাকাটা শীতকাল সর্দিকাশি আর খুচরো অসুখবিসুখ লেগেই থাকে। এক্ষেত্রে অযথা কড়া-কড়া ওষুধ খেয়ে বিশেষ লাভ হয় না। দু-দিন বাদেই আবার যে-কে সেই।
এমতাবস্থায় তাই পাতিলেবু আর আমলকির দ্বারস্থ হলে তা রোগ প্রতিরোধের কাজ করে। অহেতুক বেশি খরচ করে মুসাম্বি লেবু খাওয়ার কোনও দরকারই নেই। পাতিলেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি থাকে। আর আমলিককে তো ভিটামিন-সির ভাণ্ডার বলা হয়। বলাই বাহুল্য, আমলকির দাম এই অগ্নিমূল্যের বাজারেও যথেষ্ট কম।
সকালে উঠে নিয়ম করে এক গ্লাস ঈষদষ্ণু গরম জলে একটা গোটা পাতিলেবুর রস মিশিয়ে দিন। পারলে তাতে একচামচ মধু দিন। ব্যস। এবার খালিপেটে খেয়ে নিন। এতে করে রোগবিসুখ বা সর্দিকাশির হাত থেকে তো আপনি বাঁচবেনই। এমনকি আপনার বাড়তি মেদও অনায়াসে ঝরে যাবে। যা টের পাবেন কিছুদিনের মধ্যেই।
আর হ্যাঁ, এই শীতকালে অন্তত নিয়ম করে আমলকি খান। আবারও বলছি, আমলিক কিন্তু ভিটামিন-সি-র ভাণ্ডার। সেদ্ধ করে হোক কি কাঁচা নুন দিয়ে, আপনার যেমন খুশি আপনি খান। যতটা পারেন ততটা খান। আর যদি টক লাগে বা কোনও সমস্যা হয় তাহলে এক কাজ করে দেখতে পারেন। তাতেও উপকার পাবেন। যে কোনও নির্ভরযোগ্য সংস্থার চ্যবনপ্রাশ কিনে খান। খেতে বেশ ভাল। দিনে এক থেকে দু-চামচ করে খান। জেনে রাখবেন, এই চ্যবনপ্রাশ কিন্তু আদতে আমলকির ঘ্যাঁট। সেইসঙ্গে আরও অনেককিছুই এতে থাকে। পারলে সারাবছরই খেতে পারেন।
শীতের দিনে রোজ লেবু, মধু আর আমলকি খেলে খুসখুসে কাশি আর ঘুষঘুষে জ্বর থেকে আপনি রেহাই পেতে পারবেন সহজেই। এ কথা গ্যারান্টি দিয়ে বলা যায়। সঙ্গে, আরও অনেক উপকারই পাবেন। আর পারলে, যেদিন সম্ভব হবে, যখন সম্ভব হবে, গোটাকতক তুলসী পাতা বা এককুঁচো কাঁচা আদা খেয়ে নেবেন। তুলসী পাতা মধুর সঙ্গেও খেতে পারেন। আবার আলাদাও খেতে পারেন। আর আদা খান চায়ের আগে বা চায়ের সঙ্গে। দেখবেন, এই সামান্য ক-টা জিনিস একটু মেনে চলতে পারলেই কিন্তু আপনাকে সারাটা শীতকাল খুকখুকে কাশি নিয়ে আর বেঁচে থাকতে হবে না।