
মাত্র ১৬ বছর বয়সে অনলাইন দাবা প্রতিযোগিতায় ৫ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও নাম্বার ওয়ান দাবারু ম্যাগনাস কার্লসেনকে (Magnus Carlsen)হারিয়ে গোটা বিশ্বকে চমক দিয়েছেন চেন্নাইয়ের আর প্রজ্ঞানানন্দ (R Praggnanandhaa)। এমন মহা অঘটন ঘটানোর পর থেকেই শুভেচ্ছা জোয়ারে ভাসছেন ছোট্ট প্রজ্ঞানানন্দ। কার্লসেনকে হারানো তাও আবার এই বয়সে সত্যি অসাধ্য সাধন। ভারতের প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বিশ্বনাথন আনন্দ থেকে শুরু করে ক্রিকেট ঈশ্বর কিংদন্তী সচিন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar) সকলেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দাবার 'ওয়ান্ডার বয়'-কে। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পিএম মোদীও। কার্লসেনকে হারানোর পর এশিয়ানেট নিউজের (Asianet News) সঙ্গে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে (Exclusive Interview) কার্লসেনেরে বিরুদ্ধে খেলা ও জয়ের অভিজ্ঞতা থেকে আগামি লক্ষ্য সবকিছুই জানালেন প্রজ্ঞানন্দ।
এই জয় আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে-
বিশ্বের এক নম্বর নম্বর ম্যাগনাস কার্লসেনকে পরাজিত করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল সেই প্রশ্নের প্রজ্ঞানন্দ বলেছেন,'আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। অবশ্যই এই জয় আমাকে অনেক আত্মবিশ্বাস দিয়েছে।' কার্লসেনের বিপক্ষে ম্যাচের কৌশল সম্পর্কে প্রজ্ঞানন্দ বলেন,'ওই ম্যাচে বাড়তি কোনো চাপ ছিল না। আমার কাছে এটা ছিল অন্য সাধারণ ম্যাচের মতো।'
প্রধানমন্ত্রী মোদী ও সচিন তেন্ডুলকরের কাছ থেকে প্রশংসা-
কার্লসেনকে হারানোর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ব্য়াটিং কিংবদন্তী সচিন তেন্ডুলকরের প্রশংসা পেয়ে প্রজ্ঞানন্দ বলেন, 'আমি খুব খুশি। এটা একটা বড় পাওনা। দেখে ভালো লাগছে যে এত মহান ব্যক্তিত্বরা আমাকে সমর্থন করেছে ও শুভেচ্ছা জানিয়েছে।'
কী পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্বনাথন আনন্দ-
কিংবদন্তি বিশ্বনাথন আনন্দের সাথে দেখা করেছেন এবং তার কাছ থেকে কী পরামর্শ পেয়েছেন? এই প্রশ্নের জবাবে প্রজ্ঞানন্দ বলেন,'হ্যাঁ, আমি তার সাথে অনেকবার দেখা করেছি। তিনি আমাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, টুর্নামেন্ট চলাকালীন কোন ভিডিও দেখবেন না। এছাড়াও সোশ্যাল মিডিয়ায় কি চলছে সেদিকেও মনোযোগ দেবেন না। এসবই তোমাকে বিভ্রান্ত করে।'
কিভাবে পড়াশোনা এবং দাবার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা হয়-
পড়াশোনা এবং দাবার মধ্যে ভারসাম্যের বিষয়ে, প্রজ্ঞানন্দ বলেন,'আমার স্কুল সবসময় আমাকে সমর্থন করে। তারা আমাকে সব টুর্নামেন্টে খেলতে দেয় এবং আমাকে উৎসাহ দেয়।'পড়ালেখায় বিশেষ কিছু করতে চান কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন,'আমার পড়াশোনায় কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য নেই।'
ক্রিকেট এবং ব্যাডমিন্টনও পছন্দ-
দাবা ছাড়া অন্য কোনও খেলা খেলতে পছন্দ করেন? এর উত্তরে প্রজ্ঞানন্দ বলেন,'হ্যাঁ, আমি অবসর সময়ে অন্যান্য খেলাও খেলি। আমি টেবিল টেনিস এবং ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি। এর পাশাপাশি আমি ব্যাডমিন্টন এবং ক্রিকেট দেখতেও উপভোগ করি।'
নিজের রোল মডেল-
বিশ্বনাথন আনন্দকে নিজের রোল মডেল মানেন। বলেন,'তিনি আমার রোল মডেল এবং আমি তার অনেক খেলতে দেখেছি। আগে আমি শখ হিসেবে দাবা খেলতাম, কিন্তু পরে তা প্যাশনে পরিণত হয়েছিল। প্রথমে আনন্দ স্যারকে পেয়েছিলাম। তাকে দেখেছিলাম। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়ে তিনি যখন বিমানবন্দরে ফিরেছিলেন, সেই মুহূর্তটি আমার জন্য বিশেষ ছিল। আমি তার সঙ্গে অনেকবার দাবা খেলেছি।'
ভবিষ্যতের লক্ষ্য-
'আমি দৈনন্দিন ৭-৮ ঘণ্টা দাবা প্রতিদিন অনুশীলন করি। আমি এই সাফল্য নিয়ে না ভেবে ভবিষ্যতে আরও ভালো দাবা খেলার কথা ভাবছি। আমার লক্ষ্য দাবায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া।'