
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন অধিনায়ক এবং বিস্ফোরক ব্যাটার এবি ডিভিলিয়ার্স ওডিআই ক্রিকেটের ইতিহাসে তাঁর পছন্দের সেরা পাঁচজন ব্যাটারের নাম ঘোষণা করেছেন। এবি ডিভিলিয়ার্স তাঁর পছন্দের ব্যাটারদের সঙ্গে বা তাঁদের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাই তাঁর নির্বাচন ম্যাচ শেষ করার দক্ষতা, ধারাবাহিকতা, নেতৃত্ব এবং অলরাউন্ডার দক্ষতার মিশ্রণকে প্রতিফলিত করে।
এবি ডিভিলিয়ার্সের সেরা ওডিআই ব্যাটারদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় হলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ধোনি ওডিআই ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটার ছিলেন। যিনি সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটে আক্রমণাত্মক পন্থা, ব্যতিক্রমী ম্যাচ শেষ করার দক্ষতা এবং চাপের মুখে অবিচলিত থাকার জন্য পরিচিত। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মিডল-অর্ডারে ব্যাট করতেন এবং প্রয়োজন অনুসারে দলের ইনিংসকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। ধোনি ওয়ানডেতে অন্যতম সেরা অধিনায়ক, যিনি ২০০ ম্যাচে ভারতকে ১১০টি জয় এনে দিয়েছেন। তিনি ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১১ বিশ্বকাপ এবং ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ধোনি ৩৫০ ম্যাচ খেলে ১০৭৭৩ রান করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ১০টি সেঞ্চুরি এবং ৭৩টি হাফ-সেঞ্চুরি, গড় ৫০.৫৭।
এবি ডিভিলিয়ার্সের পছন্দের সেরা ব্যাটারদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর প্রাক্তন সতীর্থ বিরাট কোহলি। দেড় দশক ধরে বিরাট ভারতের ব্যাটিংয়ের অন্যতম মূল ভিত্তি। ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোহলির ওয়ানডে অভিষেক হয় এবং তিনি অন্যতম সেরা ওয়ানডে ব্যাটার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। সম্প্রতি, ৩৬ বছর বয়সি এই তারকা ১৪০০০ ওয়ানডে রান পূর্ণ করেছেন এবং এই মাইলফলক অর্জনকারী দ্রুততম ব্যাটসম্যান (২৮৭ ইনিংস) হয়েছেন। ওয়ানডেতে সর্বাধিক সেঞ্চুরির রেকর্ডও তার দখলে, ৫১টি। বিরাট ৩০১ ম্যাচে ৫৮.১১ গড়ে ১৪১৮০ রান করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ৫১টি সেঞ্চুরি এবং ৭৪টি হাফ-সেঞ্চুরি।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন অধিনায়ক এবি ডিভিলিয়ার্স ব্যাটিং কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকরকে তাঁর পছন্দের সেরা ব্যাটারদের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রেখেছেন। সচিন সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটার। ৪৬৩ ম্যাচে ৪৪.৮৩ গড়ে ১৮,৪২৬ রান করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ৪৯টি সেঞ্চুরি এবং ৯৬টি হাফ-সেঞ্চুরি। সচিন ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্বিশতরান করা প্রথম খেলোয়াড়। ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই কীর্তি অর্জন করেন। তিনি ভারতের অন্যতম আক্রমণাত্মক ওপেনার ছিলেন এবং বীরেন্দ্র সেহওয়াগের সঙ্গে দুর্দান্ত জুটি গড়ে তুলেছিলেন। সচিন ২০০৮ সালে ২৮ বছর পর ওডিআই বিশ্বকাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর কৌশল, অভিযোজন এবং বিভিন্ন যুগে বোলিং আক্রমণে আধিপত্য বিস্তার করার ক্ষমতা তাঁকে খেলার কিংবদন্তি করে তুলেছে।
এবি ডি ভিলিয়ার্সের সেরা পাঁচ ওডিআই ব্যাটারের মধ্যে চতুর্থ অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক রিকি পন্টিং। তিনি ছিলেন আক্রমণাত্মক ব্যাটারদের একজন যিনি প্রথম বল থেকেই প্রতিপক্ষের বোলারদের মোকাবিলা করতেন। তাঁর অস্ত্রাগারে বিভিন্ন আক্রমণাত্মক শট খেলার মাধ্যমে এবং ব্যতিক্রমী ধারাবাহিকতার মাধ্যমে আধিপত্য প্রদর্শন করতেন। পন্টিং পুল-শট নিখুঁতভাবে খেলার জন্য পরিচিত ছিলেন, যা তাঁকে নিজের সময়ের অন্যতম ভয়ঙ্কর ব্যাটার করে তুলেছিল। একজন অসাধারণ ব্যাটার হওয়া ছাড়াও পন্টিং একজন দুর্দান্ত অধিনায়কও ছিলেন। কারণ, তিনি ২০০৩ এবং ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়াকে ওডিআই বিশ্বকাপ শিরোপা জিতিয়েছিলেন। পন্টিং অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৩৭৫ ম্যাচ খেলে ৪২.০৩ গড়ে ১৩৭০৪ রান করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ৩০টি সেঞ্চুরি এবং ৮২টি হাফ-সেঞ্চুরি।
এবি ডিভিলিয়ার্সের পছন্দের সেরা পাঁচ ব্যাটারের তালিকায় শেষ খেলোয়াড় দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় দলের প্রাক্তন সতীর্থ জ্যাক কালিস। তিনি শুধু একজন ব্যাটারই ছিলেন না, একজন অলরাউন্ডারও ছিলেন। যিনি তাঁর ব্যাট এবং বল দিয়ে ওডিআই ফর্ম্যাটে প্রোটিয়াদের সাফল্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। কালিস ছিলেন মিডল-অর্ডার ব্যাটার যিনি ইনিংসকে নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং চাপের মুখে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলতেন। কালিস তাঁর দৃঢ় কৌশল, ধৈর্য এবং উল্লেখযোগ্য ধারাবাহিকতার সঙ্গে ইনিংস গড়ে তোলার ক্ষমতার জন্য পরিচিত ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৩২৮টি ওয়ানডেতে কালিস ৪৪.৩৬ গড়ে ১১,৫৭৯ রান করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ১৭টি সেঞ্চুরি এবং ৮৬টি হাফ-সেঞ্চুরি। বল হাতে, ক্যালিস ৩১.৭৯ গড়ে এবং ৪.৮৪ ইকোনমি রেটে ২৭৩ উইকেট নিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে ২টি পাঁচ-উইকেট এবং ২টি চার-উইকেট। তিনি এখন পর্যন্ত টেস্ট এবং ওয়ানডে ফর্ম্যাটে ১০,০০০ এর বেশি রান এবং ২৫০ টির বেশি উইকেট নেওয়া একমাত্র অলরাউন্ডার।