দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে মহিলাদের অনূর্ধ্ব১-২৯ টি-২০ বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফিরছে ভারতীয় দল। বাংলার ৩ ক্রিকেটার আছেন দলে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত মহিলাদের অনূর্ধ্ব-১৯ টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম সংস্করণেই ট্রফি ঘরে তুলেছে ভারত। ফাইনালে শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সেরার শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে ভারত। অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা দল টি-২০ বিশ্বকাপ খেতাব নিজেদের দখলে নেওয়ার পরেই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে আনন্দ-উল্লাস। ৩ বাঙালি কন্যার দাপুটে পারফরম্যান্সে বিশ্বকাপ জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা বাংলাও। হুগলির চুঁচুড়া শহরের তিতাস সাধু, শিলিগুড়ির রিচা ঘোষ ও হাওড়ার হৃষিতা বসু ভারতের হয়ে টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলেন। সারা বিশ্বকাপেই তাঁরা ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফিরছে ভারতীয় দল। বুধবার আমেদাবাদে সংবর্ধনার পর বাড়ি ফিরবেন বাংলার ক্রিকেটাররা। তাঁদের স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি চলছে। পরিবার-পরিজনরা তো আছেনই, সঙ্গে আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব, স্থানীয় বাসিন্দারাও বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারদের ঘরোয়া সংবর্ধনার ব্যবস্থা করছেন। তিতাস, রিচা, হৃষিতারা বাড়ি ফিরলেই তাঁদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হবে। তার প্রস্তুতি সারা।
টি-২০ বিশ্বকাপ ফাইনালে অসাধারণ বোলিং করেন তিতাস। তিনি প্রায় একাই ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারকে ধসিয়ে দেন। প্রথম ঝলকে তিতাসের বোলিং অ্যাকশন দেখলে মনে হবে যেন ঝুলন গোস্বামীর ছোটবেলা। ঝুলনের পরামর্শ কাজে লাগিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এই তরুণী। পোচেস্ট্রমের ২২ গজে নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন তিতাস। তিনি ফাইনালের সেরা ক্রিকেটার হতেই বাড়িতে খুশির বন্যা। একে ভারত মহিলা ক্রিকেটে প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতেছে, তারপর মেয়ে ম্যাচের সেরা। মেয়ের সাফল্যের উচ্ছ্বসিত বাবা রণদীপ সাধু ও মা ভ্রমর মল্লিক। তিতাসের বাড়িতে সবাই মোবাইল ফোনেই খেলা দেখছিলেন। ভারতীয় দল জেতার পরে উচ্ছাসে ফেটে পড়েন তাঁরা।
তিতাস ছাড়াও বাংলার আরও দুই ক্রিকেটার ভারতের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। উইকেটের পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন রিচা। হৃষিতাও ভালো পারফরম্যান্স দেখান। ভারতের জয়ের পর শিলিগুড়ির হাতি মোড়ে রিচার বাড়িতেও আনন্দের রেশ। সিনিয়র দলের নিয়মিত সদস্য রিচা এবার অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ডাক পান। ফাইনালে রিচা ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পেলেও স্টাম্পিং করেছেন। টিভির সামনে বসেই বিশ্বকাপের সমস্ত খেলা দেখেছেন রিচার পরিবারের সদস্যরা। ম্যাচ শেষে বাড়ির সবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছেন রিচা। তাঁর মা জানিয়েছেন, মেয়ে বাড়ি ফিরলে এই জয় উদযাপন করা হবে।
ফাইনাল ম্যাচ শেষ হতেই রংমশাল ও আতসবাজিতে ছেয়ে যায় হাওড়ার মেয়ে হৃষিতার বাড়ির অলিগলি। ভারতের জয়ের আনন্দে পালিত হয় অকাল দীপাবলি। মিষ্টি বিতরণ করা হয় পাড়ায়। হৃষিতার মা মালবিকা বসু বলেন, 'মেয়ে তো মোটামুটি নিশ্চিতই ছিল যে, ওরাই চ্যাম্পিয়ন হবে। মেয়ের আত্মবিশ্বাস দেখে সত্যিই ভালো লাগছিল। কিন্তু ভীষণ টেনশন হচ্ছিল। এই মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।'
আরও পড়ুন-
অনূর্ধ্ব ১৯ মহিলাদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিন বাঙালি কন্যার সাফল্যে খুশির জোয়ার পরিবারে
ঝুলন গোস্বামীর পরামর্শ কাজে লেগেছে, জানালেন বিশ্বকাপ ফাইনালের সেরা তিতাস
শেফালিদের সাফল্যে অনুপ্রাণিত, সিনিয়রদের টি-২০ বিশ্বকাপেও ট্রফি চান হরমনপ্রীত