
India vs England Women's Cricket: মহিলাদের একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপে এই নিয়ে ভারতের টানা তৃতীয় পরাজয়। কার্যত, রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চার রানে পরাজিত হল ভারতের মেয়েরা। ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড প্রথমে ব্যাট করে ২৮৮ রান তোলে।
অর্থাৎ, ২৮৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নেমে, ভারত নির্ধারিত ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৮৪ রান তুলতে সক্ষম হয়। স্মৃতি মান্ধানা (৯৪ বলে ৮৮), হরমনপ্রীত কৌর (৭০ বলে ৭০) এবং দীপ্তি শর্মার (৫০) দুর্দান্ত পারফরম্যান্সও শেষপর্যন্ত, ভারতকে জয় এনে দিতে পারেনি। দীপ্তি আবার সেইসঙ্গে, চার উইকেটও নিয়েছেন।
এর আগে, টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে হিদার নাইটের (১০৯) দুরন্ত সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ড বড় স্কোর খাড়া করে। অ্যামি জোন্স ৫৬ রান করেন। এই জয়ের সুবাদেই ইংল্যান্ড সেমিফাইনালে পৌঁছে গেছে। তবে ভারতের অবস্থা আরও কঠিন হয়ে গেল। পাঁচ ম্যাচে মাত্র দুটি জয়ের গোলে, চার পয়েন্ট নিয়ে ভারত চতুর্থ স্থানে রয়েছে। এদিকে ভারতের পরবর্তী তথা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। যারা আবার চার পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।
রবিবার, ইংল্যান্ডের শুরুটা দারুণ হয়েছিল। প্রথম উইকেটে বিউমন্ট-অ্যামি জুটি ৭৩ রান যোগ করেন। খেলার ১৬ ওভারে, ভারত এই জুটি ভাঙতে সক্ষম হয়। বিউমন্টকে বোল্ড করেন দীপ্তি শর্মা। কিছুক্ষণ পরেই অ্যামিকেও ফেরান সেই ভরসার অপর নাম দীপ্তি।
অপরদিকে, স্মৃতি মান্ধানার হাতে ক্যাচ দেন তিনি। তাঁর ইনিংসে মোট আটটি বাউন্ডারি ছিল। এছাড়াও নাইট-নাতালি স্কিভার ব্রান্ট (৩৮) জুটি ১১৩ রান যোগ করেন। এই জুটি কিন্তু বেশ ভালোমতোই বেগ দেয় ভারতকে। কিন্তু এক্ষেত্রে শ্রীচরণী ভারতকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন। স্কিভারকে কভারে হরমনপ্রীত কউরের হাতে ক্যাচ আউট করান তিনি।
তবে নাইট তাঁর সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। ৪৫তম ওভারে তিনি রান আউট হন। তাঁর ইনিংসে ১টি ছক্কা এবং ১৫টি চার ছিল। তবে এরপর নামা ব্যাটারদের মধ্যে কেউ খুব একটা ভালো পারফর্ম করতে পারেননি। সোফিয়া ডাঙ্কলে (১৫), এমা ল্যাম্ব (১১), অ্যালিস ক্যাপসি (২), সোফি এক্লেস্টোন (৩) বেশ হতাশ করেন এদিন।
শার্লট ডিনের ইনিংস (১৩ বলে অপরাজিত ১৯) ইংল্যান্ডকে একটি সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে দেয়। লিনসে স্মিথ (০) অপরাজিত থাকেন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে, ভারতের শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। তৃতীয় ওভারে প্রতীকের উইকেট হারায় দল। বেলের বলে উইকেটকিপার অ্যামি জোন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্রতীক ফিরে যান। তিন নম্বরে নামা হারলিন ভালো শুরু করেছিলেন। কিন্তু ম্যাচের দশম ওভারে, চার্লি ডিনের বলে এলবিডব্লিউ হন হারলিন।
এরপরই জ্বলে ওঠেন স্মৃতি-হরমন জুটি। চতুর্থ উইকেটে ১২৫ রান যোগ করেন এই দুই তারকা। খেলার ৩১ তম ওভারে, এই জুটিও ভেঙে যায়। স্কিভার ব্রান্ট তখনই হরমনপ্রীতকে আউট করেন। তাঁর ইনিংসে মোট ১০টি বাউন্ডারি ছিল। এরপর দীপ্তি এবং মান্ধানা সঙ্গে জুটি বেঁধে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যান।
দু'জনে মূল্যবান ৬৭ রান যোগ করেন। কিন্তু লিনসে স্মিথের বলে স্মৃতির আউট হওয়াটা ভারতের জন্য অনেক বড় ধাক্কা। স্মৃতির ইনিংসে মোট আটটি বাউন্ডারি ছিল। এরপর নামা রিচা ঘোষ (৮) বেশ হতাশ করেন। ৯ বল খেলে স্কিভারের বলে এক্সট্রা কভারে নাইটের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ফলে, ভারত ২৫৬ রানে ৫ উইকেট হারায়। শেষ চার ওভারে ভারতের জয়ের জন্য ৩২ রান দরকার ছিল। সোফি একলেস্টোনের করা ৪৭তম ওভারে মাত্র পাঁচ রান আসে এবং দীপ্তির উইকেটও পড়ে।
এরপর স্নেহ রানা এবং অমনজোত কৌর চেষ্টা চালান। শেষ তিন ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৭ রান। স্মিথের করা ৪৮তম ওভারে দু'জনে মাত্র চার রান তুলতে পারেন। ঐ ওভারটি ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায় এই ম্যাচে।
শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৩ রান। লরেন বেলের প্রথম বলে রানা একটি বাউন্ডারি মারেন। এরপর একটি সিঙ্গল। তৃতীয় বলে অমনজোতও একটি সিঙ্গল নেন। চতুর্থ বলে রানাও এক রান নেন। পঞ্চম বলে অমনজোত বল মারতে পারেননি। শেষ বলে দুই রান নেন। শেষ ওভারে ভারতের জয়ের জন্য ১৪ রান দরকার ছিল। বল করতে আসেন স্মিথ। প্রথম দুই বলে একটি করে রান। তৃতীয় বলেও রানা এক রান নেন। চতুর্থ বলে কোনও রান হয়নি। শেষ দুই বলে জয়ের জন্য ১১ রান দরকার। পঞ্চম বলে কোনো রান হয়নি। শেষ বলে অমনজোত বাউন্ডারি মারলেও ইংল্যান্ড চার রানে জয় ছিনিয়ে নেয়।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।