Virat Kohli RCB Celebration: সকাল থেকেই রীতিমতো উৎসবের মেজাজে ছিল বেঙ্গালুরু। মঙ্গলবার, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ফাইনাল জিততেই শহর জুড়ে শুরু হয়ে যায় সেলিব্রেশন এবং দেখা যায় বাজির রোশনাই। আর বুধবার সকাল থেকে যেন গোটা বেঙ্গালুরু কার্যত, আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে। এমনিতে আগেই আরসিবি-র তরফ থেকে ঘোষণা করা হয় যে, ভিকট্রি প্যারেড হবে। আর সেই মতোই আসতে আসতে ভিড় বাড়তে শুরু করে রাস্তায় (rcb celebration live event)।
গোটা বেঙ্গালুরু শহর যেন রাস্তায় নেমে আসে। শুরু হয়ে যায় ‘বিরাট’ উৎসব (ipl 2025)। এদিন আরসিবি-কে স্বাগত জানাতে বেঙ্গালুরুর বিমানবন্দরে পৌঁছে যান কর্ণাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে ডিকে শিবকুমার। সেখান থেকে হোটেলে যান কোহলিরা। তারপর হোটেল থেকে বিধান সৌধের দিকে রওনা দেয় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। কিন্তু রাস্তার দুদিকে বিপুল পরিমাণ সমর্থকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। রীতিমতো উপচে পড়া ভিড়। সেইজন্য টিম বাস নড়তেই পারল না দীর্ঘক্ষণ। এরপর পাইলট কার এবং পুলিশ কর্মীদের সহযোগিতায় বিধানসভাতে পৌঁছন কোহলিরা। গোটা দলকে স্বাগত জানান কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীরা।
বলা চলে, বেঙ্গালুরু যেন কার্যত, অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে এদিন। শুধু কালো মাথার সারি এবং সেলিব্রেশন মুডে আট থেকে আশি সকলে। এরপর সেখান থেকে দলের গন্তব্য ছিল সোজা চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। বাইরে এত মানুষের ভিড় যে, সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। তবে চিন্নাস্বামীতে কিছুটা বৃষ্টি হলেও, তা পরে থেমে যায়। সেখানেই তৈরি করা হয় বিশেষ মঞ্চ। সেখানে একে একে দলের সবাই আসেন।
অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এরপর বিরাটকে কিছু বলার জন্য মাইক এগিয়ে দেন। কিন্তু বিরাট কোহলি কথা বলা শুরুই করতে পারছিলেন না। শুরু করতে গিয়েও থমকে গেলেন। গোটা চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম জুড়ে তখন চলছে গর্জন। আর এটাই তো স্বাভাবিক। টানা ১৮ বছরের খরা কাটিয়ে জয়। সেলিব্রেশন তো হবেই। বৃষ্টির জলকেও যেন মনে হচ্ছিল আনন্দের কান্না।
বছরের পর বছর ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু হাল ছাড়েননি। গোটা দলকে নিয়েই লেগে ছিলেন জয়ের লক্ষ্যে। সমগ্র বিশ্ব জুড়ে তাঁর কোটি কোটি ফ্যান। আরসিবি ভক্তরাও বারবার হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। কিন্তু ঐ যে, ভরসা এবং ভালোবাসা। তবে হতাশ কোহলি একটা সময় বেঙ্গালুরু দলের অধিনায়কত্বও ছেড়ে দেন। সালটা ছিল ২০২১। তারপর আরও দুটো বছর কেটে গেছে। সবাই মনেপ্রাণে চেয়েছেন এবং চেষ্টা করে গেছেন। আসলে পরিশ্রমের যে কোনও বিকল্প নেই।
সর্বোপরি বিরাট কোহলি, যিনি দলের স্বার্থে এবং দলের জন্য এই বছর আইপিএল-এর শুরু থেকেই দাপট দেখাতে শুরু করেন। এমনও অনেক ম্যাচ গেছে, যেখানে মিডল অর্ডারে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করেছেন। পিচে পড়ে থেকেছেন এবং ম্যাচ বের করে এনেছেন। অন্যদিকে, চলতি আইপিএলে বিরাটের সংগ্রহে মোট ৬৫৭ রান। ব্যাটিং গড় ৫৪.৭৫ এবং স্ট্রাইক রেট ১৪৪.৭১। সর্বাধিক ৭৩ রানের একটি ঝকঝকে ইনিংসও রয়েছে। কিং কোহলি, যিনি নেপথ্যে অনেকটা বড় ভূমিকা নিলেন।
যিনি দিনের পর দিন কভার ড্রাইভ এবং বড় স্ট্রোক নেওয়ার মাঝেও নিজের জেদকে অক্ষুন্ন রেখে লক্ষ্যে অবিচল থাকলেন। যিনি গোটা প্রতিযোগিতায় দায়িত্ব নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন, সেই বিরাট কোহলি, আজ তৃপ্ত! আসলেন, জয় করলেন এবং মন জিতলেন।
বুধবার, চিন্নাস্বামীর মঞ্চে কোহলি যখন বলা শুরু করলেন তখনও তিনি যেন অনেকটাই আবেগতাড়িত। তাঁর কথায়, “এ সালা কাপ নামদু। আমরা করে দেখিয়েছি। টানা ১৮ বছরের অপেক্ষা। এই জয় শুধু ক্রিকেটারদের নয়। এই জয় আপনাদেরও, ফ্যানদের এবং এই সুন্দর শহরের সব মানুষদের জন্য। যারা দলের ভালো এবং খারাপ সময়ে অনবরত সাপোর্ট করে গেছেন, আমাদের পাশে থেকেছেন, এই জয় তাই ভীষণ স্পেশ্যাল আপনাদের জন্য। আপনাদের ভালোবাসা খুব খুব স্পেশ্যাল। আমি এইরকম ফ্যান বেস বিশ্বের কোনও দলের দেখিনি। অভিনন্দন সবাইকে।"
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।