Virat Kohli RCB: একাগ্রতা, আত্মবিশ্বাস এবং সফলতা। এই বিশেষণগুলো যেন একে অপরের পরিপূরক (rcb vs pbks final 2025)। অন্তত ২০২৫ সালের আইপিএল ফাইনালের পর, তা যেন আরও জীবন্ত হয়ে উঠল (pbks vs rcb ipl 2025 final)।
মঙ্গলবার, আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশ্বের অন্যতম মেগা টি-২০ ক্রিকেট লিগ আইপিএল-এর ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল পাঞ্জাব কিংস বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (Punjab Kings vs Royal Challengers Bangalore)। নিঃসন্দেহে টানটান উত্তেজনার ক্রিকেট উপভোগ করলেন দর্শকরা (rcb vs pbks final 2025)। আক্ষরিক অর্থেই যেন ক্রিকেটের মহারণ। কার্যত, ২২ গজে হাইভোল্টেজ এবং ধুন্ধুমার লড়াই (royal challengers bengaluru vs punjab kings) দেখা গেল।
সমস্ত ট্রফি পাওয়ার মাঝেও আক্ষেপ ছিল, আইপিএল ট্রফি অধরা থেকে যাওয়ার। টানা ১৮টা বছরের অপেক্ষা এবং অবশেষে জয়। অন্যান্য অনেক ক্রিকেটারের মতো তিনি কিন্তু দল বদলে ফেলেননি। বরং, প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত খেলে গেছেন সেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স জার্সিতেই (Royal Challengers Bangalore)।
বছরের পর বছর ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু হাল ছাড়েননি। গোটা দলকে নিয়েই লেগে ছিলেন জয়ের লক্ষ্যে। সমগ্র বিশ্ব জুড়ে তাঁর কোটি কোটি ফ্যান। আরসিবি ভক্তরাও বারবার হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। কিন্তু ঐ যে, ভরসা এবং ভালোবাসা। তবে হতাশ কোহলি একটা সময় বেঙ্গালুরু দলের অধিনায়কত্বও ছেড়ে দেন। সালটা ছিল ২০২১। তারপর আরও দুটো বছর কেটে গেছে। সবাই মনেপ্রাণে চেয়েছেন এবং চেষ্টা করে গেছেন। আসলে পরিশ্রমের যে কোনও বিকল্প নেই।
যে মরশুমে শুরু থেকেই বেঙ্গালুরুকে একটু অন্যরকম লাগছিল। বলা ভালো, পরিণত ব্যাটিং এবং টিম গেমে ক্রমশই তারা যেন পারফেক্ট হয়ে উঠছিল। ওপেনিং জুটি, মিডল অর্ডার, টেল এন্ডার ব্যাটিং এবং বোলিং, সবদিক দিয়ে শক্তিশালী লাগছিল আরসিবি-কে।
সর্বোপরি বিরাট কোহলি, যিনি দলের স্বার্থে এবং দলের জন্য এই বছর আইপিএল-এর শুরু থেকেই দাপট দেখাতে শুরু করেন। এমনও অনেক ম্যাচ গেছে, যেখানে মিডল অর্ডারে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করেছেন। পিচে পড়ে থেকেছেন এবং ম্যাচ বের করে এনেছেন। অন্যদিকে, চলতি আইপিএলে বিরাটের সংগ্রহে মোট ৬৫৭ রান। ব্যাটিং গড় ৫৪.৭৫ এবং স্ট্রাইক রেট ১৪৪.৭১। সর্বাধিক ৭৩ রানের একটি ঝকঝকে ইনিংসও রয়েছে।
সেইসঙ্গে, ক্রমাগত উৎসাহ দিয়ে গেছেন অধিনায়ক রজত পাতিদারকে এবং অন্যান্য সতীর্থদের। তাঁর অভিজ্ঞতাকেও দল পুরোপুরিভাবেই কাজে লাগিয়েছে। এমনকি, কোহলির বিধ্বংসী ইনিংস বেঙ্গালুরুকে বহু ম্যাচে সুবিধাজনক জায়গাতেও পৌঁছে দিয়েছে। চাপের মুখেও ঠাণ্ডা মাথায় কাজ হাসিল করেছেন। আর তার ফলাফলই যেন হাতেনাতে পাওয়া গেল এদিনের ম্যাচে।
এই জয়টা যেন তাঁর প্রাপ্যই ছিল। একটি মুহূর্ত ক্রিকেটপ্রেমীরা হয়ত ভুলতে পারবেন না। খেলা তখনও শেষ হয়নি। বিরাট তখন বাউন্ডারিতে ফিল্ডিং করছেন। হটাৎই নিজের চোখ ঢেকে ফেললেন তিনি। পরিষ্কার বোঝা গেল, চোখের কোনায় তাঁর জল। আরসিবি তখন প্রায় জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। তাই নিজের আবেগকে আর ধরে রাখতে পারলেন না।
ম্যাচ শেষে হতেই কোহলি মাথা ছোঁয়ালেন মাটিতে। সতীর্থরা ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন তাঁকে। ততক্ষণে আহমেদাবাদের গ্যালারিতে টিফো দেখা যাচ্ছে। সেখানে দেখা গেল, বিরাট কোহলির মাথায় সেরার মুকুট। আর পাশে লেখা রয়েছে, ‘Every single one of us loves Virat Kohli’.
এরপর খেলা শেষে মাঠে ঢুকলেন বিরাট কোহলির অন্যতম প্রিয় বন্ধু এবি ডিভিলিয়ার্স এবং তারপর আসলেন ক্রিস গেইল। এই জয় যেন মিলিয়ে দিল সবাইকে, উৎসবে মাতল বেঙ্গালুরু।
কিং কোহলি, যিনি নেপথ্যে অনেকটা বড় ভূমিকা নিলেন। যিনি দিনের পর দিন কভার ড্রাইভ এবং বড় স্ট্রোক নেওয়ার মাঝেও নিজের জেদকে অক্ষুন্ন রেখে লক্ষ্যে অবিচল থাকলেন। যিনি গোটা প্রতিযোগিতায় দায়িত্ব নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন, সেই বিরাট কোহলি, আজ তৃপ্ত! আসলেন, জয় করলেন এবং মন জিতলেন।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।