East Bengal Durand Cup 2025: লাল-হলুদ সমর্থকরা তখন রীতিমতো উচ্ছ্বসিত। সেই চেনা ইস্টবেঙ্গল, ঠিক যেইরকমটা দেখতে চান তারা (durand cup 2025)। হ্যাঁ, নতুন মরশুমে যেন সেই চেনা ইস্টবেঙ্গলকেই দেখা গেল যুবভারতীতে। দাপুটে ফুটবল এবং অনবদ্য জয় মরশুমের শুরুতেই। ম্যাচ শেষে তাই সমর্থকদের দিকে এগিয়ে গেলেন ফুটবলাররাও এবং বুঝিয়ে দিলেন, এইভাবেই পাশে থাকুন (east bengal vs south united fc)।
বুধবার, কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সাউথ ইউনাইটেড এফসি-কে কার্যত, ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ঐতিহ্যবাহী ডুরান্ড কাপে অভিযান শুরু করল ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের আগেরদিন ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজো বলেছিলেন, “এই মুহূর্তে পুরো দলের ফোকাস রয়েছে ডুরান্ড কাপে। সেখানে কোনওরকম ভুল করার জায়গা নেই।"
খেলার পর যেন সেটাই আরেকবার বোঝা গেল। পুরো ফোকাস নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন তারা এবং ম্যাচটিও বড় ব্যবধানে জিতে প্রতিযোগিতার শুরুটা ভালোই করলেন। নিঃসন্দেহে কয়েকটা বিষয়ের দিকে নজর রাখতেই হবে। তা হল, প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেই বেশ নজর কাড়লেন মহম্মদ রশিদ। যুদ্ধবিদ্ধস্ত একটা দেশের নাগরিক, এক বুক স্বপ্ন নিয়ে ইস্টবেঙ্গলে এসেই যেন ফুল ফোটালেন। আরেকজন হলেন বিপিন সিং। অভিষেক ম্যাচেই লাল হলুদ জার্সিতে গোল করে গেলেন। সেইসঙ্গে, জিতে নিলেন সমর্থকদের মন।
এদিন বহু সমর্থকই যুবভারতীতে ভিড় জমিয়েছিলেন। একাধিক ফ্যান ক্লাবের সদস্যরাও হাজির হয়েছিলেন। এক বুক আশা নিয়ে মাঠে আসা সেই সমর্থকদের মনের মধ্যে যে কথাটা ঘুরপাক খাচ্ছিল, ঠিক সেই কাজটাই মাঠে করে দেখাল ইস্টবেঙ্গল। দুরন্ত ফুটবল উপহার দিল তারা এবং বুঝিয়ে দিল, গোটা মরশুম জুড়ে প্রভাব ফেলতে তৈরি লাল হলুদ ব্রিগেড।
রক্ষণভাগ থেকে শুরু করে মাঝমাঠ এবং আক্রমণভাগ, সবক্ষেত্রেই দাপট অব্যাহত ছিল লাল হলুদ ব্রিগেডের। ম্যাচের প্রথম গোলটি আসে ১২ মিনিটে। লাল হলুদ ব্রিগেডকে এগিয়ে দেন লালচুংনুঙ্গা। সেই গোলটি পেয়ে যেতেই, আরও আক্রমণ শানাতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। তবে খেলার ১৮ মিনিটে, সল ক্রেসপোর হেড একটুর জন্য মিস হয় এবং ২১ মিনিটে সুযোগ নষ্ট করেন ডেভিড। নাহলে ব্যবধান আরও বাড়তে পারত।
আর সেই পেনাল্টি থেকেই ম্যাচের ৩৮ মিনিটে, গোল করেন সল ক্রেসপো। এরপর অবশ্য আর কোনও গোল হয়নি। প্রথমার্ধ শেষ হয় ২-০ ফলাফল নিয়েই। দ্বিতীয়ার্ধে যেন আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠল অস্কার ব্রুজোর ছেলেরা। একের পর এক আক্রমণ তুলে আনতে শুর করে তারা। বিশেষ করে মহম্মদ রশিদের ইম্প্রেসিভ টাচ এবং গোলের সুযোগ তৈরির চেষ্টা রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিল সবাইকে। আর যোগ্য সঙ্গত দেখা গেল বিপিনের তরফ থেকেও। গতি বাড়িয়ে উঠে আসা এবং ছোট ছোট ঠিকানা লেখা পাস দেখা গেল তাঁর পা থেকে।
তবে খেলার ৬৩ মিনিটে, মহেশের শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। সেখানেই শেষ নয়। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে, মহম্মদ রশিদের জোরালো শট একেবারে পোস্টের গা ঘেঁষে চলে যায়। কিন্তু তারপরেও নাটক বাকি ছিল। ম্যাচের ৮০ মিনিটে, অনবদ্য গোল করলেন লাল হলুদ জার্সিতে প্রথম মাঠে নামা বিপিন সিং।
তারপর খেলার ৮৬ মিনিটে, দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোসের গোলে ম্যাচের ফলাফল দাঁড়ায় ৪-০। এরপর খেলার একেবারে শেষমুহূর্তে, গোল করেন মহেশ। আর সেই গোলের সুবাদেই, ৫-০ ব্যবধানে সাউথ ইউনাইটেড এফসি-কে হারিয়ে ডুরান্ড কাপ অভিযান শুরু করল ইস্টবেঙ্গল। এদিন তাদের আক্রমণের কাছে কার্যত, খেই হারিয়ে ফেলল সাউথ ইউনাইটেড।
ইস্টবেঙ্গলের পরের খেলা আগামী ৬ অগাস্ট, নামধারী এফসি-র বিরুদ্ধে। কলকাতার কিশোর ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে সেই ম্যাচ।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।