কথা রেখেছে মেসি, দীর্ঘ লড়াই শেষে বিশ্বকাপ হাতে এবার বাড়ির পথে লিও

১৮ ডিসেম্বর ২০২২, এক স্বপ্নপূরণের রাত। ৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান হওয়ার রাত, স্পর্ধার রাত। বিশ্বকাপের শুরু থেকেই লক্ষ্য ছিল কাপ জয়। দেশের জার্সিতে শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের তকমা এনে দিলেন মেসি। কাতারের নতুন ইতিহাস লিখলেন ফুটবলের জাদুকর।

Web Desk - ANB | Published : Dec 19, 2022 6:08 PM IST

110

১৮ বছর আগে বার্সেলোনা ক্লাবের হয়ে প্রথম মাঠে নেমেছিলেন মেসি। তখনও কেউ ভাবতে পারেননি এই ছেলেটাই একদিন আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দেবে। ছাপিয়ে যাবে ফুটবলের ঈশ্বর দিয়েগো মারাদোনার গোল সংখ্যাকেও। ভাঙবে ব্রাজিলীয় কিংবদন্তি পেলের রেকর্ডও। ১৮ বছর পর আজ আর্জেন্টিনার দীর্ঘকালের যাবতীয় যন্ত্রণা, গ্লানি, পরাজয়ের একটাই ওষুধ, লিওনেল মেসি। 
 

210

 বিশ্বকাপের শুরুর আগেই মেসি জানিয়েছিলেন এটাই দেশের জার্সিতে তাঁর শেষ বিশ্বকাপ। ২০২৬-এর বিশ্বকাপে থাকবেন না তিনি। শেষ খেলায় জিততে মরিয়া ছিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে অপ্রত্যাশিত হার। তবু ভেঙে পড়েনি নীল-সাদা বাহিনী। দ্বিতীয় ম্যাচে মেক্সিকোর বিরুদ্ধে নামার আগে মেসির মুখে একটাই কথা ছিল, 'আমরা হয় জিতব, নাহয় জিতব'। হলও তাই ফাইট ব্যাক করল আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় ম্যাচে দূরন্ত জয়। তারপর আর ফিরে তাকায়নি মেসি, দি মারিয়া, মার্টিনেজরা। 
 

310

গ্রুপ পর্বের সবকটি ম্যাচে দাপটের সঙ্গে খেলল নীল-সাদা বাহিনী। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে  রুদ্ধশ্বাস লড়াই। অবশেষে টাই ব্রেকারে ফিরলেন মেসিরা। শেষ আটে পৌঁছেও এতটুকু লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি আর্জেন্টিনা। একে একে কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল পেরিয়ে গোটা বিশ্বের সমর্থকদের আশা বাঁচিয়ে রেখে ফাইনালে পৌঁছল মেসিরা। 

410

৩৬ বছরের ব্যর্থতার ইতিহাসকে মুছে তখন নতুন ইতিহাস লেখার সুযোগ মেসিদের সামনে। অন্যদিকে দেশের হয়ে সাফল্য এনে দেওয়ার শেষ সুযোগ মেসির সামনে। মেসির হাতে বিশ্বকাপ দেখার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল সমর্থকদের থেকে শুরু করে সতীর্থরা। সেদিন গোটা দল মাঠে নেমেছিল জিততে। মেসির জন্য জিততে। অবশেষে ফ্রান্সের বিপক্ষে মরণপন লড়াইয়ের পর স্বপ্ন সত্যি হল মেসিদের। হাতে কাপ নিয়ে বাড়ি ফিরল আর্জেন্টিনা। 

510

১৯৮৬ সালের পর ২০২২ সালে ফের ট্রফি হাতে নিল আর্জেন্টিনা। নিজের শেষ বিশ্বকাপের শেষটা রাজার মতোই করল স্বপ্নের নায়ক মেসি। এই বিশ্বকাপই শেষ। ২০২৬-এর বিশ্বকাপে আর খেলবেন না মেসি। জানিয়েছিলেন সেমিফাইনালের পরেই। শেষ বিশ্বকাপে পাখির চোখ ছিল বিশ্বকাপ জয়। লক্ষ্যভেদও করলেন। পাশাপাশি আরও একবার সেরা ফুটবলার হিসেবে গোল্ডেন বল উঠল মেসির হাতেই। 
 

610

এর আগে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে গোল্ডেন বল পেয়েছিলেন মেসি। ২০২২ সালে ফের এই সম্মান পাওয়ায় দু'টি গোল্ডেন বল প্রাপ্ত বিশ্বের প্রথম ফুটবলারের সিরোপা উঠল মেসির মাথায়। এইবারের বিশ্বকাপে গোল্ডেন বুট পেয়েছেন ফরাসি ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপে। আর্জেন্টিনার সামনে তরুণ ফুটবলার এমবাপের লড়াই মুগ্ধ করেছে গোটা বিশ্বকে। 

710

দেশের হয়ে কাপ জেতার এটাই শেষ সুযোগ ছিল মেসির কাছে। গত ৩৬ বছরের ইতিহাসে একের পর এক ব্যর্থতার দেখেছিল আর্জেন্টিনা। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে পরাজয়। ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠেও জার্মানির কাছে হার। ২০১০ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ। ২০০৬ সালে প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছিলেন মেসি। প্রথম ম্যাচে নেমে গোলও করেছিলেন তিনি। তাঁরপর ২০১০ সালে ফের বিশ্বকাপের মঞ্চে নামেন মেসি। খেলেছিলেন প্রধান ফুটবলার হিসেবেই। তখন আর্জেন্টিনার দায়িত্বে দিয়েগো মারাদোনা। তাঁরপর মোট পাঁচটি বিশ্বকাপে মোট ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। মোট গোলসংখ্যা ১১। ষষ্ঠবারের লড়াইয়ে অবশেষে সেইসব পরাজয়ের যন্ত্রণা ভুলে জয়ের হাসি হাসল আর্জেন্টিনা।
 

810

শুধু তাই নয় এই বিশ্ব কাপেই ব্রাজিলীয় কিংবদন্তি পেলের রেকর্ডও ভাঙলেন মেসি। ১৮ ডিসেম্বর ২০২২-এর আগে বিশ্বকাপে ২০টি গোলের অবদান ছিল মেসির। এর মধ্যে ১১টি নিজের গোল এবং ৯টি সহযোগী। অন্যদিকে পেলের বিশ্বকাপে গোলের অবদান ২০টি। ১২টি নিজের গোল  ১৮ তারিখের ম্যাচের পর মেসির বিশ্বকাপে গোল সংখ্যা দাঁড়াল ২১, ১৩টি নিজের গোল এবং ৮টি সতীর্থদের দিয়ে করানো। শুধু তাই নয় সতীর্থদের দিয়ে সবচেয়ে বেশি গোল করানোর রেকর্ডও গড়লেন মেসি। 
 

910

বিশ্বকাপ জয়ের পর আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না মেসি। শিশুর মত দোলাতে থাকেন কাপটিকে। আবেগে ভাসলেন মেসির মা ও স্ত্রী আন্তোনেল্লা। তিন ছেলেকে নিয়ে এতদিন দোহাতেই ছিলেন তিনি। বাবার এই সাফল্য দেখে খুশি মেসির ছেলেরাও। বাবার সঙ্গে ছবি তুলতে দেখা গেল তাদের। 

1010

অবশেষে একমাস পর বিশ্বকাপ হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন মেসি। মেসি কথা রেখেছে।  আর্জেন্টিনা তথা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা সমর্থকদের দেওয়া কথা রেখেছে মেসি। গত ১৮ বছর ধরে নিজেকে দেওয়া কথা রেখেছে মেসি। শেষ যুদ্ধে ব্যর্থতার দাগ মুছে দিয়ে রাজার মতো ফিরছে মেসি।

Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos