ইস্টবেঙ্গলের আরও একটি হতাশাজনক মরসুম শেষ হল। সুপার কাপের গ্রুপ থেকেই বিদায় নিল লাল-হলুদ। কেরালায় অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় কোনও ম্যাচেই জয় পেল না ইস্টবেঙ্গল।
সদ্য পয়লা বৈশাখ গিয়েছে। রীতি মেনে গড়ের মাঠে বারপুজো হয়েছে। ইস্টবেঙ্গল মাঠে এখনও পুজোর ফুল শুকোয়নি। কিন্তু নববর্ষও লাল-হলুদ সমর্থকদের জন্য কোনও ভালো খবর আনতে পারল না। কারণ, ক্যালেন্ডারের পাতায় শুধু বছরই বদলেছে, লাল-হলুদের খেলার ধারায় কোনও বদল হয়নি। মরসুমের শুরুতে যেমন দ্বিতীয়ার্ধ নিয়ে শঙ্কিত থাকতেন সমর্থকরা, মরসুমের শেষ ম্যাচেও সেই আশঙ্কা দূর হল না। গোল খাওয়ার রীতিও বদলাল না। এই মরসুমে কোনও ম্যাচে গোলকিপার, আবার কোনও ম্যাচে ডিফেন্ডারদের ভুলে গোল খেতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। সোমবার আইজল এফসি-র বিরুদ্ধেও সেভাবেই গোল হজম করল ইস্টবেঙ্গল।
এবারের সুপার কাপে গ্রুপ বি-তে প্রথম ম্যাচে ওড়িশা এফসি এবং দ্বিতীয় ম্যাচে হায়দরাবাদ এফসি-র সঙ্গে ড্র করার পর সেমি ফাইনালে যেতে হলে আইজলের বিরুদ্ধে ৪ গোলের ব্যবধানে জিতে ওড়িশা-হায়দরাবাদ ম্যাচ ড্র হওয়ার আশায় থাকতে হত ইস্টবেঙ্গলকে। ম্যাচের শুরুটা ভালোই হয়। ১৬ মিনিটে প্রথম গোল করে দলকে এগিয়ে দেন এই লাল-হলুদ দলের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র নাওরেম মহেশ সিং। ২২ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান লাল-হলুদের প্রধান কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইনের প্রিয়পাত্র সুমিত পাসি। শুরুতেই দল ২-০ এগিয়ে যাওয়ায় বড় ব্যবধানে জয়ের আশায় ছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। কিন্তু তাঁদের হতাশই করল দল।
২-০ এগিয়ে যাওয়ার পরেই হঠাৎ ডিফেন্সিভ খেলতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল। এরই সুযোগ নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে আইজল। ৪২ মিনিটে ব্যবধান কমান হ্রুয়েইতিয়া। এই গোলের জন্য দায়ী লাল-হলুদ গোলকিপার কমলজিৎ সিং। তিনি বক্সের মধ্যে একটি বল সেভ করেও নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। বল কোথায় গিয়েছে সেদিকে চোখই ছিল না কমলজিতের। সেই বল ধরে ঠান্ডা মাথায় গোল করে যান হ্রুয়েইতিয়া। প্রথমার্ধ শেষে ২-১ গোলে এগিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল।
সোশ্যাল মিডিয়া, বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা আলোচনা করছিলেন, দ্বিতীয়ার্ধে দল আরও গোল খাবে। তাঁদের সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। ৪৮ মিনিটে ফের কমলজিতের মারাত্মক ভুলে গোল খেতে হয় ইস্টবেঙ্গলকে। অপ্রয়োজনে বক্সের বাইরে বেরিয়ে এসে একটি বলে শট করে বিপদমুক্ত করার চেষ্টা করেন লাল-হলুদ গোলকিপার। সেই বল গিয়ে পড়ে আইজলের ডেভিডের পায়ে। তাঁর নিয়ন্ত্রিত শট ফাঁকা গোলে চলে যায়। গোললাইনে ফেরার চেষ্টাও করেননি কমলজিৎ। এরপর আর ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে ম্যাচে ফেরা সম্ভব ছিল না। বরং আইজল একাধিক সুযোগ নষ্ট করে। না হলে হেরেই মরসুম শেষ করত ইস্টবেঙ্গল।
যে ম্যাচে ৪ গোলে জিততেই হবে, সেই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণভাগকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করলেন না কোচ। বিদেশি স্ট্রাইকার জেক জার্ভিসের বদলে প্রথম একাদশে রাখা হল পাসিকে। ব্যাক পাস, স্কোয়্যার পাসই বেশি দেখা গেল। সঙ্গে ছিল মিস পাস। এর ফলেই জয় পেল না ইস্টবেঙ্গল।
আরও পড়ুন-
চিনের যাবতীয় অভিযোগ মিথ্যা, দলাই লামার পাশে দাঁড়িয়ে কড়া বার্তা বাইচুংয়ের
জামশেদপুর এফসি-র কাছে ০-৩ হার, সুপার কাপ থেকে বিদায় এটিকে মোহনবাগানের
চুনী গোস্বামীর নামাঙ্কিত গেট উদ্বোধন, সুনীল গাভাসকরের মুখে জয় মোহনবাগান