ইরানে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ দমন করার জন্য একের পর এক আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কাউকে গুলি করে মারা হচ্ছে, আবার কাউকে জেলে পুরে দেওয়া হচ্ছে।
ইরানে মহিলাদের স্বাধীনতা ও সমানাধিকারের দাবিকে সমর্থন করেছিলেন। শাসকের নির্মমতা, অত্যাচার ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। সরকারের চোখে যা অপরাধ। সেই কারণে ২৬ বছর বয়সি প্রাক্তন ফুটবলার আমির নাসর-আজাদানির ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হল। এই ফুটবলারের বিরুদ্ধে ১৭ নভেম্বর কর্নেল ইসমাইল চেরাগি এবং ২ নিরাপত্তারক্ষীকে হত্যার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। যে অঞ্চলে কর্নেল চেরাগি ও নিরাপত্তাবাহিনী বাসিজের ২ সদস্যকে হত্যা করা হয়, তখন সেখানে ছিলেন না আমির। কিন্তু তারপরেও এই ঘটনার জন্য তাঁর সাজা ঘোষণা করা হল। ইরানের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গিয়েছে, ২০ নভেম্বর সরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে হাজির করানো হয় আমিরকে। তাঁকে দিয়ে অপরাধ স্বীকার করানোও হয়। এরপরেই তাঁর সাজা ঘোষণা করা হল। কবে এই সাজা কার্যকর হবে, সেটা এখনও জানা যায়নি। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।
ইরানে নীতি পুলিশের অত্যাচারে ২২ বছরের কুর্দিশ তরুণী মাহসা আমিনের মৃত্যুর পর থেকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। মহিলারা নিজেদের ইচ্ছামতো পোশাক পরার দাবিতে সরব। বহু পুরুষও মহিলাদের এই দাবিকে সমর্থন করছেন। আমিরও মাহসার মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে সামিল হন। তিনি মহিলাদের স্বাধীনতার দাবিকে সমর্থন করছেন। সেই কারণেই তাঁর উপর সরকারের শাস্তির খাঁড়া নেমে এল বলে মনে করছেন আন্দোলনকারীরা। সম্প্রতি কুস্তিগীর মজিদ রেজার প্রকাশ্যে ফাঁসি হয়েছে। তিনি মাহসার মৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভে সামিল হন। একাধিক মিছিলের নেতৃত্বেও ছিলেন মজিদ। সেই কারণে তাঁকে গ্রেফতার করে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেয় সরকার। ইরানের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এবার আমিরকেও হয়তো প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে। বিক্ষোভ দমন করার জন্যই এই ঘৃণ্য পন্থা অবলম্বন করেছে ইরান সরকার।
আন্তর্জাতিক ফুটবলারদের সংগঠন আমিরের ফাঁসির সাজা রদ করার দাবি জানিয়েছে। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বলা হয়েছে, 'ইরানে মহিলাদের অধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার দাবিকে সমর্থন করায় পেশাদার ফুটবলার আমির নাসর-আদাদানির ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনায় হতবাক। আমরা আমিরের পাশে আছি। আমরা তাঁর শাস্তি রদ করার দাবি জানাচ্ছি।'
ইরানে এখন যাঁরাই সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁদেরই শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বাধিক গোলদাতা আলি দাইকেও সরকারের রোষে পড়তে হয়েছে। মাহসার মৃত্যুর প্রতিবাদ এবং সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে সামিল হওয়ায় এই বিখ্যাত ফুটবলারের মালিকানাধীন গয়নার দোকান ও রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন-
রাগত মেসিকে দেখে মারাদোনার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে, জানালেন পাবলো জাবালেতা
লাতিন আমেরিকার পতাকা মেসিদের হাতে, বিশ্বকাপে ইউরোপের আধিপত্য খর্ব করার লড়াই
আর্জেন্টিনাই বেশি চাপে থাকবে, সেমি ফাইনালের আগে বলছেন ক্রোয়েশিয়ার কোচ