Spain vs Portugal Final 2025: জার্মানির মিউনিখ স্টেডিয়ামে, রবিবার রাতে উয়েফা নেশনস লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয় স্পেন বনাম পর্তুগাল (portugal vs spain final)। কার্যত, রুদ্ধশ্বাস এই ম্যাচে খেলতে নামে বিশ্বের অন্যতম যুযুধান দুই প্রতিপক্ষ।
এদিন শুরু থেকেই জমে ওঠে ম্যাচ। একদিকে পেদ্রি, ইয়ামাল এবং কুকুরেল্লারা ঝড়ের গতিতে আক্রমণ তুলে আনতে থাকেন (spain vs portugal final 2025)। আর ঠিক তার উল্টোদিকে নুনো মেন্ডেজ, ভিটিনহা এবং জোয়াও নাভাসরা সেই আক্রমণকে প্রতিহত করে পাল্টা কাউন্টার অ্যাটাকে আসতে শুরু করেন।
বলা ভালো, ফ্যাবিয়ান রুইজ এবং উইলিয়ামসরা স্পেনের রক্ষণভাগকে ভালোভাবেই সামলান। আক্রমণ এবং প্রতি আক্রমণে খেলা বেশ জমে ওঠে। তবে খেলার ১৩ মিনিটে, পেদ্রি একটি সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে গোল পেয়ে যেতে পারত স্পেন। ঠিক একইভাবে খেলার ১৫ মিনিটে, মিস করেন লামিনে ইয়ামাল নিজেও।
কিন্তু স্পেন যেভাবে আক্রমণে ঝড় তুলছিল, তা সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে থাকে পর্তুগাল ডিফেন্স। ঠিক ম্যাচের ২১ মিনিটে, ইয়ামাল বক্সের ভিতরে বল বাড়ান মার্টিন জুবিমেন্ডির দিকে। আর সেই বল পেয়ে কোনওরকম ভুল করেননি তিনি। সোজা বলকে জালে জড়িয়ে দেন এবং স্পেন ম্যাচে লিড নেয় ১-০ ব্যবধানে।
কিন্তু গোল খেলেও পাল্টা জবাব দেয় পর্তুগালও। খেলার ২৬ মিনিটে, নুনো মেন্ডেজের গোলে সমতা ফেরায় তারা। ম্যাচের ফলাফল তখন ১-১। কিন্তু এরপরেই যেন চূড়ান্ত নাটকীয়তা। সত্যি কথা বলতে গেলে, এদিন পেদ্রি এবং লামিনে ইয়ামালের দাপটে কার্যত, নাজেহাল হয়ে যান পর্তুগাল ডিফেন্ডাররা। একের পর এক শট কিংবা ফ্রি-কিক, লাগাতার অ্যাটাক জারি রাখে স্পেন।
আর সেই সুবাদেই, প্রথমার্ধের একেবারে শেষে পেদ্রির দুর্দান্ত পাস সোজা পৌঁছে যায় মিকেল ওয়ার্জাবালের কাছে এবং তিনি বুদ্ধিদীপ্ত কায়দাতেই বলকে জালে জড়িয়ে দেন। ফলে, স্পেন এগিয়ে যায় ২-১ ব্যবধানে। এরপর আর কোনও গোল হয়নি।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধও বেশ জমকালোভাবেই শুরু হয়। তবে ৪৯ মিনিটে, পর্তুগালের ব্রুনো ফার্নােন্ডজের গোল অফসাইডের অন্য বাতিল হয়। কিন্তু সমতা ফেরানোর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল তারা। আর সেই সুবাদেই ম্যাচের ৬১ মিনিটে, ‘সিআর৭’ ম্যাজিক। সহজ সুযোগ নষ্ট করেননি অভিজ্ঞ এই তারকা ফুটবলার। গোল করে দলের হয়ে সমতা ফেরান ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ম্যাচের ফলাফল তখন ২-২। এরপর পর্তুগাল কোচ রোনাল্ডোকে তুলে নেন।
তবে প্রথমার্ধে যে প্রাণচঞ্চল স্পেনকে দেখা যাচ্ছিল, তা যেন ধীরে ধীরে কিছুটা ম্লান হতে শুরু করে। তবে এদিন পর্তুগিজ গোলকিপার দিয়োগো কোস্টার কথা বলতেই হয়। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে, ইসকোর শট কার্যত, তিনি শরীর ছুঁড়ে বাঁচিয়ে দেন। শেষপর্যন্ত, আর কোনও হয়নি দ্বিতীয়ার্ধে। ফলে, ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তবে একটি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে একটু বাকবিতণ্ডা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু দুই দলই একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও আর কোনও গোল হয়নি।
প্রথম শটেই পর্তুগালের হয়ে গোল করেন গঞ্জালো র্যামোস। এরপর স্পেনের হয়ে সমতা ফেরান মেরিনো। পর্তুগালের হয়ে দ্বিতীয় শটটি নেন ভিটিনহা এবং গোল করেন তিনিও। ঠিক তারপরেই স্পেনের হয়ে গোল করেন বায়েনা। পরবর্তী শটে পর্তুগালকে লিড এনে দেন ব্রুনো ফার্নান্দেজ। এরপর স্পেনের হয়ে ইসকোর শট পর্তুগিজ গোলকিপার দিয়োগো কোস্টা সঠিক দিকে ঝাঁপিয়েও সেভ করতে পারেননি এবং গোল পেয়ে যায় স্পেন।
এরপর মেন্ডেজ ফের গোল করেন পর্তুগালের হয়ে। কিন্তু স্পেনের হয়ে নেওয়া মোরাতার শট রুখে দেন দিয়োগো কোস্টা। আর ঠিক পরের শটেই নাভাসের গোলে জয় নিশ্চিত করে পর্তুগাল। ম্যাচ শেষ রোনাল্ডো মাটিতে মাথা রেখে রীতিমতো বসে পড়েন। তাঁর চোখে তখন জল।
টাইব্রেকারের লড়াইতে স্পেনকে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে উয়েফা নেশনস লিগে জয় পেল পর্তুগাল। আর এই জয়ের পরেই গ্যালারিতে আনন্দে মেতে ওঠেন পর্তুগিজ সমর্থকরা।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।