
হাওড়ার আন্দুলে পাওয়ারলিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপ
টান টান উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে শেষ হল ৫১-তম পাওয়ারলিফটিং পূর্বাঞ্চলীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। হাওড়া আন্দুলের পুইল্যা কিশোর ব্যায়াম সমিতির মাঠে ১০ ডিসেম্বর শুরু হয়েছিল এই চ্যাম্পিয়নশিপ। এই প্রতিযোগিতা ঘিরে স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেল।
সেরা অর্পণ-স্নেহা
প্রত্যাশানুযায়ী বাংলার দুই ভারত্তোলক বরানগরের অর্পণ মজুমদার এবং বালির স্নেহা ঘরামী সকলের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। পুরুষদের বিভাগে ১০৫ কেজি ক্যাটিগরিতে ৮৬২.৫ কেজি তুলে প্রথম হয়েছেন অর্পণ। তিনি স্কোয়াটে ৩৫০ কেজি, বেঞ্চপ্রেসে ২২৫ কেজি এবং ডেডলিফটে ২৮৭.৫ কেজি তুলেছেন। অন্যদিকে মহিলাদের ৭৬ কেজি বিভাগে ৫৫০ কেজি তুলে প্রথম হয়েছেন স্নেহা।
প্রথম স্থানে সোমা সরকার রায়
মহিলাদের ৭৬ কেজি বিভাগে দ্বিতীয় স্থানে অসমের রাখি শর্মা (২৯০ কেজি)। ৮৪ কেজি বিভাগে ৪৫২.৫ কেজি তুলে প্রথম হয়েছেন বাংলার সোমা সরকার রায়। ঝাড়খণ্ডের জ্যোতি কুমারী ৩৪৫ কেজি তুলে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছেন। প্লাস ৮৪ কেজি বিভাগে প্রথম হয়েছেন বাংলার সুস্মিতা দাস। তিনি ৪৬৫ কেজি তুলেছেন।
বিহার-ঝাড়খণ্ডের প্রতিযোগীরাও সফল
পুরুষদের ১২০ কেজি বিভাগে প্রথম হয়েছেন বিহারের ভূপেন্দ্র প্রতাপ সিং (৬৪০ কেজি), দ্বিতীয় হয়েছেন ঝাড়খণ্ডের আদিত্য আড়িয়া (৬০০ কেজি), এছাড়াও ১২০ কেজি প্লাস বিভাগে প্রথম হয়েছেন বিহারের অবিনাশ কুমার সিং (৭৮০ কেজি) এবং দ্বিতীয় হয়েছেন ঝাড়খণ্ডের দিবাংশু আনন্দ (৭০০ কেজি)। এক সঙ্গে আয়োজিত হয়েছিল ৫৩তম রাজ্য চ্যাম্পিয়নশিপের আসরও। পুরুষদের সিনিয়র ১২০ কেজি বিভাগে প্রথম হয়েছেন কলকাতার মহম্মদ দয়াম সামস (৭০২.৫ কেজি) এবং ৮৩ কেজি বিভাগে ৬৭৫কেজি ওজন তুলে প্রথম হয়েছেন কলকাতার আমন মিশ্রা (স্কোয়াট ২২৭.৫ কেজি, বেঞ্চপ্রেস ১৬২.৫ কেজি এবং ডেডলিফট ২৮৫ কেজি) এবং মহিলাদের ৮৪ কেজি প্লাস বিভাগে ৪৯০ কেজি তুলে প্রথম হয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার মৌমিতা ঘোষ (স্কোয়াট ২০০ কেজি, বেঞ্চপ্রেস ৯৭.৫ কেজি এবং ডেডলিফট ১৯২.৫ কেজি)। ব্যক্তিগত পদক জয়ের নিরিখে ১২টি সোনা, ১০টি রুপো এবং ৯টি ব্রোঞ্জ নিয়ে পদক তালিকায় শীর্ষে আছে শহর তিলোত্তমা। দ্বিতীয় স্থানে জলপাইগুড়ি এবং যুগ্ম ভাবে তৃতীয় হয়েছে হাওড়া ও উত্তর ২৪ পরগনা।
পূর্ব ভারতের 'স্ট্রংম্যান' বাংলার অর্পণ মজুমদার
পূর্বাঞ্চলের 'স্ট্রংম্যান' খেতাব জেতার প্রসঙ্গে অর্পণ মজুমদার জানিয়েছেন, আগামীদিনে তাঁর একটাই লক্ষ্য জাতীয় দলে প্রবেশ করা এবং দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পদক জেতা। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জিতেছেন অর্পণ। ভবিষ্যতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে আরও সাফল্য পাওয়াই তাঁর লক্ষ্য।
পাওয়ারলিফটিংয়ে দেশের সেরা বাংলা
পূর্বাঞ্চলীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ব্যক্তিগত সাফল্যের নিরিখে পুরুষ বিভাগে ২টি সোনা, ৩টি রুপো এবং ২টি ব্রোঞ্জ নিয়ে ৬৭ পয়েন্টের সঙ্গে পদক তালিকার শীর্ষে আছে আয়োজক রাজ্য বাংলা। দ্বিতীয় স্থানে আছে বিহার, তাদের দখলে ২টি সোনা, ২টি রুপো এবং ২টি ব্রোঞ্জ পদক নিয়ে ৫৮ পয়েন্টের সাথে দ্বিতীয় স্থানে আছে বিহার এবং ৫০ পয়েন্ট নিয়ে ঝাড়খন্ড আছে তৃতীয় স্থানে, যাদের দখলে আছে ২টি সোনা, ২টি রুপো এবং ১টি ব্রোঞ্জ। আগামী মার্চ মাসে কর্ণাটকের মেঙ্গালুরুতে আয়োজিত হবে ক্লাসিক বিভাগের সিনিয়র ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ এবং আগস্ট মাসে তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোরে আয়োজিত হচ্ছে ইকুইপড বিভাগের সিনিয়র ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ। মূলত সদ্য সমাপ্ত চ্যাম্পিয়নশিপে যাঁরা পদক তালিকায় আছেন তাঁদেরই জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য ডিরেক্ট এন্ট্রির সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্য নিয়ামক সংস্থার সচিব কানাইলাল দে।