
উত্তরপ্রদেশে বন্যা ত্রাণ: টানা মুষলধারে বৃষ্টিপাত আবারও উত্তর প্রদেশের অনেক জেলায় জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। পাহাড়ি ও সমতল এলাকা থেকে আসা দ্রুতগতির জল অনেক গ্রামে প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অবিলম্বে ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান দ্রুত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেছেন, কোনও ব্যক্তিকে যেন বন্যার সমস্যার মুখোমুখি হতে না হয়, তার জন্য पुख्ता ব্যবস্থা করা হোক। বন্যা-পীড়িত পরিবারগুলিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাদের সব মৌলিক চাহিদা পূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি গবাদি পশুর জন্যও আলাদা ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে।
ত্রাণ কমিশনার ভানু চন্দ্র গোস্বামী জানিয়েছেন, বর্তমানে রাজ্যের ২২টি জেলা, ৪৩টি তহশিল এবং ৭৬৮টি গ্রাম বন্যার কবলে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত ২,৫২,৮৩৯ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আর ৩৩,৩৭০টি গবাদি পশুকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্যায় ৩৭,২৭৯ হেক্টরেরও বেশি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৫৫০টি নৌকা এবং মোটরবোট लगातार কাজ করছে। শুধু মঙ্গলবারই ৬,৪৫৮টি খাদ্য প্যাকেট এবং ৭,১৪৩টি মধ্যাহ্নভোজের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে।
সরকার বন্যা-পীড়িতদের জন্য ২৭৮টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র সক্রিয় করেছে, যেখানে বর্তমানে ৩,০৮৯ জন অস্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ৫৮৬টি মেডিকেল টিম মোতায়েন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, জলবাহিত রোগ প্রতিরোধের জন্য ১১,০২২টি ক্লোরিন ট্যাবলেট এবং ৫,০৪৯টি ওআরএস প্যাকেটও বিতরণ করা হয়েছে। মোট ১,০২২টি বন্যা চৌকি তৈরি করা হয়েছে, যা পরিস্থিতির উপর চব্বিশ ঘণ্টা নজর রাখছে।
বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের এই জেলাগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত: বারাণসী, প্রয়াগরাজ, আউরাইয়া, বাহরাইচ, বান্দা, মির্জাপুর, কানপুর গ্রামীণ, চান্দৌলি, ফতেহপুর, কানপুর নগর, বারাবাঙ্কি, বাদাউন, ফারুখাবাদ, গোন্ডা, হারদোই, কাসগঞ্জ, লখিমপুর খেরি, মিরাট, মোরাদাবাদ, মুজাফফরনগর, শাহজাহানপুর এবং উন্নাপুর। সব জেলায় ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে।
উত্তরপ্রদেশ সরকার বন্যা-পীড়িত নাগরিক এবং গবাদি পশুর সুরক্ষার জন্য ত্রাণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করেছে। যোগী সরকারের দাবি, কোনও ব্যক্তিই যেন ক্ষুধার্ত বা অসুরক্ষিত না থাকেন এবং প্রতিটি জেলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।