তালিবানদের ভয়ে মার্কিন দূতাবাসের ছাদ দিয়ে পালানো মার্কিনীরা। কাবুলের পতন মনে করালো ভিয়েতনাম যুদ্ধের শেষে সাইগনের পতনকে।
শনিবার, কাবুলে ঢুকে পড়েছে তালিবানরা। আফগান রাষ্ষ্ট্রপতির প্রাসাদও তাদের দখলে বলে দাবি করেছে গোষ্ঠীটি। আর তালিবানদের ই অদম্য অগ্রগতির সামনে েকপ্রকার হেলিকপ্টারে করে পালালেন মার্কিন দূতাবাসের কর্মীরা। শুক্রবারই দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপদে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে আনার জন্য কাবুল বিমান বন্দরে ৩০০০ নতুন সেনা সদস্য পাঠিয়েছিলেন জো বাইডেন। ২০ বছর তালিবানদের নিকেশ করার চেষ্টা করে শেষে তাদের ইভাবে পলায়ন অনেকের স্মৃতি থেকেই ঝেড়ে বের করে েনেছে আমেরিকানদের আরেক তড়িঘড়ি পলায়নের ছবি - কাবুলের পতন মনে করিয়ে দিচ্ছে ১৯৭৫ সালে সাইগনের (বর্তমানে হো চি মিন সিটি) পতন এবং ভিয়েতনাম থেকে তাদের পলায়ন।
ভিয়েতনামে আমেরিকার পরাজয় অমর করে রেখে দিয়েছে একটি ছবি। ১৯৭৫ সালে পিএভিএন এবং ভিয়েত কং বাহিনীর কব্জায় এসে গিয়েছে সাইগন। আর সেখানকার মার্কিন দূতাবাসের ভবনের ছাদ থেকে হেলিকপ্টারে করে দূতাবাসের কর্মীদের উদ্ধার করছে মার্কিন সেনা। কাবুল তালিবানদের হাতে চলে যেতেই এদিন সোশ্যাল নেটওয়ার্কে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে ঠিক একই ধরণের আরও একটি ছবি। কাবুলের মার্কিন দূতাবাস থেকেও একইভাবে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করা হচ্ছে দীূতাবাসের কর্মীদের। প্রবেশ করে এমনকি আমেরিকা তার উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখে।
বস্তুত আমেরিকার জন্য ভিয়েতনাম যুদ্ধ এবং আফগানিস্তান যুদ্ধের মধ্য়ে অত্যন্ত মিল রয়েছে। প্রথমত, দুটি ক্ষেত্রেই দীর্ঘদি ধরে লড়াই করে গিয়েছে মার্কিন বাহিনী। ভিয়েতনামে যুদ্ধ চলেছিল দুই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সময় ধরে। আফগানিস্তানের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল প্রেসিডেন্ট বুশের সময়ে। তারপর ওবামা, ট্রাম্প ৯গিয়ে এখন তখতে জো বাইডেন। কিন্তু, দুই ক্ষেত্রেই যুদ্ধ থেকে কোনও লাভ করতে পারেনি মার্কিন বাহিনী। ভিয়েতনামের যুদ্ধ যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের এক লজ্জাজনক অধ্যায় হিসাবে রয়ে গিয়েছে। আফগানিস্তান যুদ্ধকেও আগামী দিনে সেভাবেই দেখতে হবে।
আরও পড়ুন - 75th Independence Day - জঙ্গির বাবা তুললেন জাতীয় পতাকা, বড় পরিবর্তন জম্মু-কাশ্মীরে
আরও পড়ুন - সত্যিই কি ভারতের আগে স্বাধীন হয়েছিল পাকিস্তান, কেন তারা একদিন আগে এই দিনটি উদযাপন করে
তবে, আফগানিস্তানও যে আরেকটা ভিয়েতনাম হতে চলেছে, তা আগেই আশঙ্কা করেছিলেন আফগানিস্তান ও সামরিক বিশ্লেষকরা। মজার বিষয়, গত জুলাই মাসেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, সাইগনে যা ঘটেছিল আবার তেমনই ঘটবে না তো আফগানিস্তানে? এককথায় সেই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বলেছিলেন দুই ঘটনার মধ্যে মিলের সংখ্যা শূন্য। সাইগনে উত্তর ভিয়েতনামের সেনাবাহিনী মার্কিন দূতাবাসের ছয়টি গেট ভেঙ্গে ঢুকে এসেছিল। বাইডেন বলেছিলেন, 'তালিবানরা উত্তর ভিয়েতনামের সেনাবাহিনী নয়। ক্ষমতার দিক থেকে দুই বাহিনীর তুলনাই হয় না। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন দূতাবাসের ছাদ থেকে মানুষদের তুলে নিয়ে আসতে হবে, এমন কোনো পরিস্থিতিই তৈরি হবে না।'