সমুদ্রে বাড়ছে বিপদ - ২০৫০-এর মধ্যেই মহা-বিপর্যয়, ডুবে যাবে এই শহরগুলি

জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate Change) অবস্থার অবনতির কারণে আগের অনুমানের থেকে অনেক দ্রুত  বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর (Sea Level)। নাসা (NASA) এবং এনওএএ (NOAA)-র মূল্যায়নে উঠে এল ভয়াবহ চিত্র।
 

Web Desk - ANB | Published : Feb 18, 2022 3:50 PM IST / Updated: Feb 18 2022, 09:26 PM IST

যত দিন যাচ্ছে ততই জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate Change) অবস্থার অবনতি ঘটছে। বর্তমানে এর প্রভাবগুলি ভীষণভাবে চোখে পড়ছে। নাসা (NASA) এবং বেশ কয়েকটি মার্কিন সংস্থার এক নতুন মূল্যায়নে উপকূলীয় অঞ্চলগুলির এক ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। তাঁদের দাবি, গত ১০০ বছরে সমুদ্রের জলস্তরের উচ্চতার যতটা বৃদ্ধি ঘটেছিল, পরবর্তী ৩০ বছরে ততটাই বৃদ্ধি ঘটতে চলেছে। ফলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ গোটা বিশ্বের উপকূলীয় অঞ্চলগুলিতে আগামী কয়েক বছরে ঘন ঘন ভয়াবহ বন্যা (Flood) দেখা দেবে, আর সবশেষে এলাকাগুলি চলে যাবে জলের নিচে। 

গত ২০০০ বছরের মধ্যে দ্রুততম বৃদ্ধি

আমেরিকার নাসা (NASA), ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এনওএএ (NOAA) এবং অন্যান্য ফেডারেল এজেন্সির প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত এই সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটলান্টিক (Atlantic Ocean) উপকূল বরাবর সমুদ্রের জলস্তর গত ২০০০ বছরের মধ্যে দ্রুততম হারে বাড়েছে। নাসার বিজ্ঞানী বিল নেলসন বলেছেন, এই প্রতিবেদনটি আগের গবেষণাগুলিকে সমর্থন করে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা যে ক্রমাগত উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে উপকূলীয় শহর, গ্রামগুলি বিপন্ন - দীর্ঘদিন ধরেই জানা। বিজ্ঞানী মহলে এই নিয়ে কোনও সংশয় ছিল না। জলবায়ু সংকট প্রশমিত করার জন্য জরুরী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

ওয়েক-আপ কল

তবে, এই প্রতিবেদনের প্রধান লেখক, উইলিয়াম সুইট জানিয়েছেন, অ্যান্টার্কটিকা (Antarctica) এবং গ্রিনল্যান্ডের (Greenland) বরফের চাদর পুরোপুরি গলে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সবচেয়ে খারাপ অবস্থাটা আসবে সম্ভবত ২১০০ সালের পরে। তবে স্বল্পমেয়াদী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির মোকাবিলার জন্য নাসা একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে। তারা, হিমবাহ এবং বরফের চাদর গলা, মহাসাগর, স্থলভাগ এবং বরফের মধ্যে জটিল মিথস্ক্রিয়ার মতো বিষয়গুলি মাথায় রেখে, এই বিষয়ে বিভিন্ন অনুমান নির্ভর মডেল তৈরি করে তৈরি করেছে। এনওএএ-র প্রশাসক রিক স্পিনরাড বলেছেন, এই রিপোর্ট সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি 'ওয়েক-আপ কল'।

বিপদে আমেরিকা

এই মডেল বলছে, এই শতাব্দীর অর্ধেক যেতে না যেতেই, আমেরিকার ফ্লোরিডা (Florida), মেরিল্যান্ড (Meriland), ভার্জিনিয়া (Varginia) প্রদেশের উপকূলীয় শহরগুলিতে প্রতি বছর বেশ কিছু মধ্যমশক্তির বন্যা হবে। যার ফলে ব্যাপক সম্পত্তির ক্ষতি হতে পারে। যেসব এলাকায় এখন বিশেষ বন্যা হয় না, সেই জায়গাগুলিতেও নিয়মিত বন্যা শুরু হবে। ২০৫০ সালের মধ্যে মেক্সিকো উপকূলের (Mexico coast) পশ্চিম উপসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১৬ থেকে ১৮ ইঞ্চি এবং পূর্ব উপসাগরে ১৪ থেকে ১৬ ইঞ্চি সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে। এই অঞ্চলগুলিতেও বছরে তিনটির বেশি মাঝারি শক্তির বন্যা দেখা যাবে।

ভারতের অবস্থা কীরকম?

ভারতেও বন্যার ঝুঁকি ব্যাপকভাবে বাড়তে চলেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচির (Climate Change Programme) আওতায়, আইআইটি খড়গপুরের (IIT Kaharagpur) ওশ্যান ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড নাভাল আর্কিটেকচার বিভাগের গবেষকদের একটি দলের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগর, দক্ষিণ চিন সাগর এবং দক্ষিণ ভারত মহাসাগরের উপকুলীয় অঞ্চলগুলিতে অদূর ভবিষ্যতেই সমুদ্রের উচ্চতর তরঙ্গ দেখা দেবে। ফলে উপকূলীয় অঞ্চলগুলিতে বন্যার হুমকি আরও বাড়বে। এতে করে, পরিকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি, ভূগর্ভস্থ জলে সমুদ্রের লবণাক্ত জল মিশে যাওয়া, ফসল ধ্বংস-সহ বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক ক্ষয়ক্ষতি দেখা দিতে পারে। 

Read more Articles on
Share this article
click me!