একদিন পরও টাটকা বিস্ফোরণের চিহ্ন, নিমতিতার তদন্তে নেমে ধোঁয়াশায় CID

Published : Feb 18, 2021, 07:35 PM IST
একদিন পরও টাটকা বিস্ফোরণের চিহ্ন, নিমতিতার তদন্তে নেমে ধোঁয়াশায় CID

সংক্ষিপ্ত

বুধবার রাতে মন্ত্রীর উপর হয়েছিল প্রাণঘাতী হামলা তার চিহ্ন এদিনও স্পষ্ট মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশনে তদন্তে এল সিআইডি প্রত্ক্ষদর্শীদের বয়ান ও সিসিটিভি ফুটেজ ঘিরে ধোঁয়াশা

মন্ত্রীর উপর প্রাণঘাতী বোমা হামলা। বুধবার রাতের দুঃস্বপ্নের স্মৃতি পরের দিনও টাটকা মুর্শিদাবাদের নিমতিতা স্টেশনে। বৃহস্পতিবারও ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল বোমার স্প্লিন্টারের অংশ, রক্তের দাগ। এদিন সেখানেই তদন্ত করতে আসেন সিআইডি (CID) এবং ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার দিনভর নিমতিতা স্টেশনে খানাতল্লাশি চালান সিআইডি আধিকারিকরা। স্টেশন চত্বর পরিদর্শন করেন। বিশেষ করে স্টেশনের যে অংশে বিস্ফোরণ ঘটেছিল, সেই এলাকাটি খতিয়ে দেখেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে ছড়িয়ে থাকা বিস্ফোরণের চিহ্নের সূত্র ধরে, বুধবার রাতে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটেছিল তার আঁচ পাওয়ার চেষ্টা করেন। রেললাইনে নেমেও তাঁরা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালান। বিষয়টি নিয়ে সিআইডি আধিকারিকদের সঙ্গে জঙ্গিপুর পুলিশের দফায় দফায় আলোচনাও হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও রুদ্ধদ্বার কথাবার্তা চালান তদন্তকারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান এবং প্ল্যাটফর্ম চত্বরে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ নিয়ে তদন্তে নানান ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, বলে জানা গিয়েছে। আদৌ স্টেশনে আগে থেকে বোমা মজুদ করে রাখা ছিল কিনা, নাকি মন্ত্রী আসার আগেই দুষ্কৃতীরা সেখানে ঘাঁটি গেড়েছিল - সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিস্ফোরণের মাত্রা পরীক্ষা করতে ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে ফরেনসিক দলও।

এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঁধে দেওয়া সুরে সুর মিলিয়ে, এই বিস্ফোরণের জন্য রেলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আরপিএফ (RPF) কর্মীদের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছে মুর্শিদাবাদের স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, সব জেনেশুনেও স্টেশনে পড়ে থাকা ব্যাগ (যাতে বোমা ছিল বলে সন্দেহ) সরায়নি আরপিএফ। যার ফলে ওই বিস্ফোরক রাখা ব্যাগে কোনওভাবে পা পড়ে, কিংবা দূর থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।

আরপিএফ অবশ্য পাল্টা দাবি করেছে, তারা সবসময়ই তৎপর ছিল। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ভার থাকে জিআরপি (GRP)-র হাতে। কে বা কারা কোন জিনিস কোথায় রাখছে, প্রাথমিকভাবে তাদেরই খতিয়ে দেখার কথা। বাড়তি ওজনের মাল নিয়ে স্টেশনে ঢুকলে তার দায় আরপিএফ কর্মীদের। কোনও সমস্যায় পড়লে সাধারণত জিআরপি-র পক্ষ থেকে আরপিএফ-কে চিঠি লিখে সাহায্য চাওয়া হয়। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে তেমন কোনও আবেদন আসেনি করেনি জিআরপি। দুই নিরাপত্তা সংস্থার মধ্যে এই বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ায়, আরপিএফ-এর পক্ষ থেকেও পৃথকভাবে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন রাজ্যের শ্রম দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। নিমতিতা স্টেশন থেকে তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস ধরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু, মন্ত্রী সপারিষদ স্টেশনে পৌঁছতেই আচমকাই ওই বিস্ফোরণ ঘটে। মন্ত্রী জাকির হোসেন, তাঁর দেহরক্ষীরা, ভাগ্নে এবং দলীয় কর্মী-সর্মথকরা অনেকেই সেই বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন। গভীর রাতে মন্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। এদিন, সেখানে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। অন্যদিকে, জাকির হোসেনের উপর এই হামলার প্রতিবাদে এদিন তাঁর অনুগামীরা মুর্শিদাবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান।

 

PREV
click me!

Recommended Stories

পৌষমেলা: শান্তিনিকেতনে পর্যটকদের জন্য সরকারি উদ্যোগে খুলে দেওয়া হল বাউল বিতান
সৌমিকদের গ্রেফতারি তাহলে কেন ছাড় প্যাটিস বিক্রেতাকে? প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন শুভেন্দু