এদিন সরাসরি নাম তুলে 'অভিষেকের বিরুদ্ধে লড়ে দেখান শাহ' চ্যালেঞ্জ জানালেন মমতা। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি তুলে আনে জাকির প্রসঙ্গ। প্রশ্ন তোলেন, কেন সেদিন রেল স্টেশনে আলো জ্বালানো ছিল না। নোটবন্দি, ঘরবন্দি, পেট্রোল-ডিজেলের-গ্য়াসের মূল্য বৃদ্ধি করার জন্য বাক্যবাণ ছোড়েন গেরুয়া শিবিরে মমতা।
আরও পড়ুন, 'এতদিন সোনার গুজরাট-রাজস্থান হয়নি কেন'- পৈলানের সভা থেকে প্রশ্ন তুললেন অভিষেক
১৯৮৪ -র স্মৃতির শহরে হারান মমতা
এদিন সভার শুরুতেই ভীড় বেশি হওয়ায়, জায়গা দিতে না পারায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন মমতা। এরপরেই ক্ষণিকের জন্য ১৯৮৪ সালের স্মৃতির শহরে হারান মমতা। বলেন , এই পৈলানেই পুরোনো দিনে আমি রশিদ গাজির বাড়ি আসতাম। বলতে বলতেই অডিয়েন্সের সঙ্গে কথোপকথনে খোঁজ চালান, সে উপস্থিত আছেন কিনা। সে এসেছে জেনে মমতা আরও উৎফলিত হয়ে বলেন, এই মানুষটাই প্রথম, যিনি আমাকে গিয়ে গিয়ে বলতেন যাদবপুরে আপনাকে দাঁড়াতে হবে। আমি ওনার বাড়ি যেতাম বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
কেন সেদিন রেল স্টেশনে আলো জ্বালানো ছিল না, জাকির প্রসঙ্গ
বক্তব্যের শুরুতেই তিনি তুলে আনে জাকির প্রসঙ্গ। প্রশ্ন তোলেন, কেন সেদিন রেল স্টেশনে আলো জ্বালানো ছিল না। কেন ঘটনা ঘটে যাবার পরেও রেলের দেখা মেলেনি বলে প্রশ্ন করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের নিমতিতা স্টেশনে বোমার আঘাতে গুরুতর জখম রাজ্যের শ্রম দফতরের মন্ত্রী জাকির হোসেন সহ ১১ জন সঙ্গী। তিনি বলেন জাকির আমার প্রিয় নেতা। আমার মনে এরা নির্বাচনটা মুর্শিদাবাদ দিয়ে শুরু করবে বলে নিশানা করেন বিজেপিকে। তাই জাকিরকে খুন করে সরিয়ে দেওয়াটাই ছিল এদের টার্গেট। এরপর তিনি বলেন, কারা এর পিছনে ঠিক খুঁজে বার করব।
আরও পড়ুন, 'দিদির নজর শুধুই ভাইপো কল্যাণে', সাগর থেকে মমতার সভায় 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি পাঠালেন শাহ
'ছাই করবে তোমরা'
এরপর তিনি ফের খোঁচা দিয়ে বলেন, যখন সুন্দরবনে কুমির-বাঘের পেটে মানুষ যায় তখন গেরুয়া শিবিরের দেখা মেলে না। এরপরেই সরাসরি শাহ-র গঙ্গাসাগর নিয়ে প্রতিক্রিয়া করায় পাল্টা আক্রমণ করেন মমতা। তিনি এদিন মনে করান, সব তীর্থ বারবার, গঙ্গাসাগর একবার । বলেন, এই গঙ্গাসাগর তো তৃণমূলের সরকারই ঠিক করে দিয়েছে। কেন্দ্র তো এক টাকাও দেয়নি, লজ্জা করে না। ওরা শুধু মুখেই বলে , সব ভাওতাবাজি। 'গঙ্গাসাগর কেয়া হে-হাম এক কর দেগা' বলে নিজেই আবার শাহ মন্তব্যকে নিশানা করে বলেন 'ছাই' করবে তোমরা। প্রসঙ্গত এদিন সভা থেকে মমতা অনেক বেশি সাবলিলভাবে জনতা-জনার্দনের সঙ্গে কথা বলে বিজেপিকে আক্রমণ করছিলেন। তবে কথা মধ্য়ে বারবারই উঠে আশছিল কৌতুক। আর কৌতুক অস্ত্রেই জনতা-জনার্দনকে হাসিয়ে মন জয় করেন পৈলানে মমতা।
'তোমার ছেলেও তো আমার ভাতিজা'
তিনি আরও বলেন, নোটবন্দি, ঘরবন্দি, পেট্রোল-ডিজেলের-গ্য়াসের মূল্য বৃদ্ধি করার জন্য বাক্যবাণ ছোড়েন গেরুয়া শিবিরে। হালকা মেজাজে বৃহস্পতিবার একের পর তোপ কৌতুকে রসে ভরে পাঠান গেরুয়া শিবিরে। এরপরে বলেন, 'খালি দিদি-আর ভাতিজা' অর্থাৎ বারবার পিসি-ভাইপো নিয়ে বিজেপির তোপ প্রসঙ্গে বলেন 'অভিষেকের বিরুদ্ধে লড়ে দেখান শাহ' বলে চ্যালেঞ্জও জানান মমতা। তবে মুহূর্তেই রণভঙ্গিতে হুঙ্কার দিয়ে শাহ-র ছেলেকে নিশানা করেন। বলে ওঠেন, 'তোমার ছেলেও তো আমার ভাতিজা। সে কী করে নেতা হল। এত কোটি টাকার মালিক হয়ে গেল। কী ভাইয়া বাত কহে', বলে আবার কৌতুকে ফিরে, গঙ্গাসাগর নিয়ে বলে যে, চরম ভূল করেছেন স্বরাষ্টমন্ত্রী, বোঝালেন মমতা।
আরও পড়ুন, আজ ময়দানে মুখোমুখি ২, একইদিনে সাগরে শাহ-পৈলানে মমতার সভা, ক্ষুব্ধ BJP
'মাছের তেলে মাছভাজা'
এরপর আসেন আম্ফান প্রসঙ্গে। বলেন, ওরা বলছে তৃণমূল কংগ্রেস নাকি টাকা খেয়ে নিয়েছে। আম্ফানে তৃণমূল কংগ্রেস ১০ লক্ষ লোকের জীবন বাঁচিয়েছে। এদিকে সেসময় মোদী এসে টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন। যে টাকা দিয়েছে সেটা প্রতিবারের প্রাপ্য টাকা। আম্ফানের জন্য কোনও বাড়তি টাকা পাঠায়নি কেন্দ্র। উলটে বলেছে বরাবরের প্রাপ্য টাকা দিয়ে যে অনেক অর্থ বরাদ্দ করেছে। এতে সেই 'মাছের তেলে মাছভাজা' আম্ফানের কেন্দ্রের দান প্রসঙ্গে মোদীকে তোপ দাগলেন এদিন মমতা।