দিলীপের সর্বনাশে শুভেন্দুর পৌষমাস - নন্দীগ্রাম হল রাজ্য বিজেপির নয়া ভরকেন্দ্র

সোমবার দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে দেওয়া হল রাজ্য বিজেপির সভাপতির পদ থেকে। এতে করে রাজ্যে দলের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি শুভেন্দু অধিকারীর হাতেই গেল বলে মনে করা হচ্ছে।

২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তারপর থেকে বঙ্গ বিজেপিতে তার প্রভাব ক্রমশ বেড়েছে। রাজ্যজুড়ে বিজেপির ভরাডুবির মধ্যে নন্দীগ্রাম আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে জয়ের পরে তো বটেই। শুবেন্দু অধিকারীর গেরুয়া শিবিরে সেই উত্তরণের ষোল কলা সোমবার পূর্ণ হল, রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিকর রদবদলের পর এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। 

বিধানসবা নির্বাচনে বিজেপির হতাশাজনক ফলাফল এবং তারপরেও দিলীপ ঘোষের মুখে লাগাম না লাগা - দুই মিলে বাংলার রাজ্য সভাপতির পদ থেকে দিলীপ ঘোষের অপসারণ প্রত্যাশিতি ছিল। তারপরও এই পদক্ষেপকে আকস্মিকই বলতে হবে। তবে তাঁর 'পদোন্নতি' ঘটিয়ে দলের জাতীয় সহ-সভাপতি করা হয়েছে। যে পদে কয়েক মাস আগে পর্যন্ত ছিলেন মুকুল রায়। এটা পদোন্নতি হলেও রাজ্য বিজেপিতে যে তাঁর প্রভাব এর ধাক্কায় অনেক ধাপ কমে গেল, তা বলাই বাহুল্য। 

Latest Videos

"

তাঁর বদলে বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে রাজ্যের দলীয় শীর্ষপদে নিযুক্ত করেছেন। বিজেপির পক্ষ থেকে এই বদলকে স্বাভাবিক বা 'রুটিন' বদল বলা হচ্ছে। তবে এই পদে দিলীপ ঘোষের মেয়াদ ছিল ২০২২ সালের শেষ পর্যন্ত। কাজেই পরের মাসে তিনটি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনের আগের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এই প্রতিস্থাপনকে রুটিন কতটা বলা যায়, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। 

রাজ্য সভাপতি হিসাবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলকে দারুণ সাভফল্য এনে দিয়েছিলেন। ২০১৪ সালে যেখানে রাজ্যে বিজেপির মাত্র ২ জন সাংসদ ছিল, সেখানে সর্বশেষ সাধারণ নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির সাংসদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ১৮। কিন্তু, তাঁর সেই জনপ্রিয়তার বেলুন ফুটো হয়ে গিয়েছে শেষ বিধানসভা নির্বাচনে। ২০০-র বেশি আসন জেতার কথা বলে জিতেছেন মাত্র ৭৭টিতে। তার থেকেও ৪ জন ইতিমধ্যে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। 

এর সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী দলের তো বটেই, দলীয় সাংসদ এবং অন্যান্য নেতাদের নামে প্রকাশ্যে বিভিন্ন আলপটকা মন্তব্য করে দিলীপ ঘোষ দলকে তো বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেইছেন, সেইসঙ্গে নিজের কবরও খুঁড়েছেন। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে দিলীপ ঘোষের বিবাদের কথা তো প্রকাশ্য়েই চলে এসেছিল। রবিবারই বাবুল তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বাবুলের গেরুয়া শিবির ত্যাগ করার অন্যতম প্রধান কারণ দিলীপ ঘোষ বলেই মনে করা হচ্ছে। 

 

আর দিলীপ ঘোষ সরে যেতেই রাজ্য বিজেপির নিয়ন্ত্রণ নন্দীগ্রামের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর হাতেই যে যাচ্ছে, তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। বঙ্গের বিরোধী নেতার পাশাপাশি দলের সাংগঠনিক বিষয়েও এবার থেকে তার বক্তব্য বড় হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। দলের অনেকেরই মতে শুভেন্দুই আসন্ন ভবিষ্যতে রাজ্যে বিজেপির অবিসংবাদিত নেতা হতে চলেছেন। 

৪১ বছরের সুকান্ত মজুমদারের পক্ষে শুভেন্দুকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তাকে নিযুক্ত করা, দলের নেতৃত্বে তাজা রক্ত আমদানির বার্তা দিতেই। আর সেই রাস্তা ধরেই আগামী দিনে সংগঠনের হাল তুলে দেওয়া হতে পারে অধিকারী পরিবারের বড় ছেলের হাতে। শুধু তাই নয়, আরএসএস-ঘনিষ্ঠ এবং এবিভিপি তেকে উঠে আসা সুকান্ত মজুমদারকে এখন নিয়োগ করা হল, শুধুমাত্র দলের বিক্ষুব্ধ অংশকে এই বার্তা দিতে, যে বাইরে থেকে আমদানি করা নেতাদের শীর্ষপদ দেওয়া হচ্ছে না।
 

Share this article
click me!

Latest Videos

'একত্রিত হতে হবেই, ওরা ৫০ পেরলেই শরিয়া আইন চালু করবে' গর্জে উঠলেন শুভেন্দু | Suvendu Adhikari | News
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury