গাজোল মালদা জেলায় অবস্থিত, মালদা উত্তর লোকসভার অধীন একটি বিধানসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্রটি তফসিলি জাতিভুক্তদের জন্য সংরক্ষিত। ১৯৭৭ সাল থেকে লাগাতার এই বিধানসভা কেন্দ্র ছিল সিপিএমের দখলে। ২০১১ সালে জমানা বদলের ভোটে এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী জয়লাভ করলেও, ২০১৬ সালে ফের এই বিধানসভাটি ছিনিয়ে নেয় সিপিএম। তার পরেই শুরু হয় নাটক।
২০১৬ সালে গাজোল বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেছিলেন সিপিএমের দীপালি বিশ্বাস। তিনি ২০১৮ সালে দল ছাড়েন এবং ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। তাঁর দলবদলের নেপথ্যে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ২০২০ সালে ফের শুভেন্দুর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন দীপালি বিশ্বাস।
আরও পড়ুন: 'ডিস্কো ডান্সার স্টাইলে মাস্ক', মিঠুন চক্রবর্তীকে খোঁচা তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের
গত ডিসেম্বরে তিনি তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেবার পর উৎসব পালন করেন তৃণমূল কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, দীপালি তৃণমূলে থেকে এলাকার নয়, নিজের উন্নয়ন করেছেন। ২০১৬ সালে সিপিএমের হয়ে ভোটে দাঁড়ানোর সময়ে তিনি যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন, তা থেকে দেখা যাচ্ছে, মাধ্যমিক পাশ, আইসিডিএস কর্মী দীপালির সম্পত্তির পরিমাণ সে সময়ে ছিল ১ কোটি ৩৫ লক্ষ ৩৭ হাজার ৬৮৯ টাকা। সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া দীপালি অবশ্য এবার টিকিট পাননি।
২০১১ সালে গাজোল বিধানসভা থেকে কংগ্রেসের সুশীল চন্দ্র রায় সিপিএমের গোবিন্দ মণ্ডলকে পরাজিত করেন। ৭৪ হাজারের বেশি ভোট পান কংগ্রেস প্রার্থী, সিপিএম প্রার্থী পান ৬৯ হাজারের বেশি ভোট। সেবার বিজেপি প্রার্থী এই কেন্দ্রে ৮৫১৪ ভোট পেয়েছিলেন।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের টিকিটে দাঁড়ানো দীপালি বিশ্বাস ৮৫ হাজার ৯৪৯ ভোট পান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের সুশীল চন্দ্র রায় পান ৬৫ হাজার ৩৪৭ ভোট। ২৮ হাজার ৭৬৮ ভোট পান বিজেপির সুধাংশু সরকার।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে মালদা উত্তর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন, সিপিএম থেকে বিজেপিতে যাওয়া খগেন মুর্মু। গাজোল বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচুর ভোটের ব্যবধানে লিড করেছিলেন তিনি। তৃণমূলের মৌসম বেনজির নূর যেখানে এই কেন্দ্রে ৬৭ হাজার ১৮০ ভোট পেয়েছিলেন, সেখানে ১ লক্ষ ৮ হাজার ৩৫১ ভোট পেয়েছিলেন খগেন।
এবার গাজোল বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন চিন্ময় দেব বর্মণ। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বাসন্তী বর্মণ। সিপিএম এখানে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে অরুণ কুমার বিশ্বাসকে। এই কেন্দ্রের ভোট নেওয়া হবে সপ্তম দফায়, ২৬ এপ্রিল।