প্রকাশ্যেই কংগ্রেস কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি
তীব্র চাঞ্চল্য মুর্শিদাবাদের কান্দিতে
অভিযোগের আঙুল তৃণমূলের দিকে
অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক দল
সেই সময় এলাকায় তুমুল চাঞ্চল্য। প্রাণভয়ে ছুটোছুটি করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। একের পর এক বন্ধ হচ্ছে দোকানের শাটার। আর রাতের অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে নয়, ভোটের মুখে একেবারে প্রকাশ্যেই গুলি চলল, মুর্শিদাবাদের কান্দি শহরে। এলোপাথাড়ি গুলি চালানো হয় স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীদের লক্ষ্য করে। এই নিয়ে বুধবার ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় কান্দি শহরে। কংগ্রেস, বিজেপি একযোগে অভিযোগ করেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন কান্দি শহরে সাজো সাজো রব। সব দলের পক্ষ থেকেই চূড়ান্ত প্রচার শুরু হয়েছে। দেওয়াল লিখন, সভা, মিটিং-মিছিল সব কিছুই চলছে। এদিন প্রচারের কাজ করার মাঝে শহরের প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত লোহাপট্টি এলাকার এক চায়ের দোকানে আড্ডা মারছিলেন কয়েকজন কংগ্রেস কর্মী। হঠাতই তাঁদের উপর কয়েকজন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হয়, বলে অভিযোগ।
আক্রান্ত কংগ্রেস কর্মীরা জানিয়েছেন, দলীয় প্রার্থীর হয়ে দেওয়াল লিখন শেষ করে, লোহাপট্টির একটি দোকানে তারা চা খাচ্ছিলেন। সেইসময়ই কয়েকজন দুষ্কৃতী সশস্ত্র অবস্থায় সেখানে হাজির হয়ে তাদের কংগ্রেস করতে নিষেধ করে, হুমকি দেয়। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হতেই দুষ্কৃতীদের একজন কংগ্রেস কর্মীদের লক্ষ্য করে পরপর ৪ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। আরেকজন দুষ্কৃতী তাদের উপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। সেখান থেকে কোনওমতে প্রাণ বাঁচিয়ে পালান ওই কংগ্রেস কর্মীরা। তাদের দাবি, ওই দুষ্কৃতীরা তৃণমূল আশ্রিত।
এরপর স্থানীয় থানার পুলিস এসে ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ইতিমধ্যেই চন্দন দে নামে এক ব্যক্তিকে এদিনের গুলি চালানোর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। কল্যাণপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়, বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন - বঙ্গের কোন কোন কেন্দ্রে সহজে জিতবে বিজেপি, কোথায় লড়াই কঠিন - কী বলছে দলের গোপন বিশ্লেষণ
আরও পড়ুন - মুর্শিদাবাদে বোমাবাজিতে মৃত্যু মহিলাসহ দু'জনের, তৃণমূলকেই দুষলেন কংগ্রেস বিধায়িকা
আরও পড়ুন - বাদ 'জয় শ্রীরাম', ভরসা নিজের কাজ - শুভেন্দুর থেকেও কঠিন পরীক্ষায় এবার রাজীব, দেখুন
এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একযোগে সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি। কান্দির কংগ্রেস প্রার্থী সফিউল আলম খান বলেছেন, কান্দিতে তৃণমূল প্রার্থী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গুন্ডারাজ কায়েম করতে চাইছেন। বিভিন্ন জায়গাতেই কংগ্রেস কর্মীদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর থেকে কান্দি আসনটি কংগ্রেসের দুর্গ বলেই পরিচিত। অন্যদিকে, বিজেপি প্রার্থী গৌতম রায় জানিয়েছেন, ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে তৃণমূল প্রার্থী জিততে পারবেন না।
যদিও তৃণমূল প্রার্থী অপূর্ব সরকারের দাবি, কান্দির সকলেই তাঁকে ভালোবাসেন। তাই বলে, কেউ কোনও ঘটনা ঘটালেই সে তাঁর কাছের মানুষ বলে দাবি করাটা ঠিক নয়। তৃণমূল এই ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবে জড়িত নয়। তাঁর দাবি, গোটা শহরেই ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। সেই ক্যামেরা চেক করে দুষ্কৃতীদের ধরা হোক।