নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসনের ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দায়ের করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ আদালতে বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। যদিও ২৪ জুন পর্যন্ত এই মামলার শুনানি পিছিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি। আর এবার এই মামলা হাইকোর্টের অন্য বেঞ্চে সরানোর আর্জি জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী সঞ্জয় বসু। মামলা অন্যত্র সরানোর জন্য কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। কারণ হিসেবে বিচারপতি কৌশিক চন্দের রাজনৈতিক যোগের কথা উল্লেখ করেছেন সঞ্জয় বসু।
আরও পড়ুন- নন্দীগ্রামের পর আরও চার কেন্দ্রের গণনায় কারচুপির অভিযোগ, হাইকোর্টে গেল তৃণমূল
আজ বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে উঠেছিল নন্দীগ্রাম মামলা। শুনানির আগে বিচারপতি কৌশিক চন্দ জানান, জনপ্রতিনিধি আইন অনুযায়ী নির্বাচনী আর্জিতে মামলাকারীকে আদালতে উপস্থিত থাকতে হয়। মুখ্যমন্ত্রী হাজির থাকতে পারবেন কি না তা জানতে চান বিচারপতি। তখন সঞ্জয় বসু বলেন, "আইনে যা সংস্থান আছে তা মেনে চলব"।
এরপরই দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বিচারপতি কৌশক চন্দকে একটি অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল বলে ছবি প্রকাশ করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন। সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল এই ছবি। এদিকে ২৪ জুন এই মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানি হবে। সেদিন মামলাকারী অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীকে আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে। তারই মধ্যে ওই মামলার বেঞ্চ বদলের দাবিতে শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লেখেন সঞ্জয় বসু।
এ প্রসঙ্গে আইনজীবীদের একাংশের অভিযোগ, বিচারপতি কৌশিক চন্দে আগে বিজেপির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তাই তাঁর এজলাসে নন্দীগ্রাম মামলা উঠলে বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। তাই আজ নন্দীগ্রাম মামলা বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে পাঠানোর প্রতিবাদে মুখে কালো মাস্ক এবং হাতে পোস্টার নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেন আইনজীবীরা। পোস্টারে লেখা ছিল, "বিচারব্যবস্থার সঙ্গে রাজনীতি করবেন না"।
আরও পড়ুন- মমতা বনাম শুভেন্দু হাইকোর্ট পর্ব, স্থগিত মহাগুরুত্বপূর্ণ নন্দীগ্রাম মামলার শুনানি
এদিকে কোন মামলা কার এজলাসে হবে তা সাধারণত ঠিক করেন প্রধান বিচারপতি। নন্দীগ্রাম মামলার ক্ষেত্রে তিনি বিচারপতি কৌশিক চন্দকে বেছে নিয়েছেন। তাই এই মামলা অন্যত্র সরানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী শুক্রবার প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখেছেন। তবে এই আর্জি প্রধান বিচারপতি গ্রহণ করেন কি না সেটাই এখন দেখার।