'জেলার মানুষ আর ওদের পাশে নেই', অধীর গড় ধরে রাখতে নয়া স্ট্রাটেজি কি 'দাদা'-র

  •  মুর্শিদাবাদে রাজনীতিতে 'দাদা'র দাপটই বরাবরই বেশি 
  •  দাদা বলে পরিচিত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী
  •   শাসকদলের দাবি, 'জেলার মানুষ আর ওদের পাশে নেই'
  •  'হেলিকপ্টারে ঘুরেও  কিছু করতে পারবে না', তোপ বিজেপির
     

Asianet News Bangla | Published : Apr 4, 2021 3:10 AM IST


'দিদি' নয়, মুর্শিদাবাদে রাজনীতিতে দাদার দাপটই বরাবরই বেশি। আর সেই দাদা বলে পরিচিত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী খাসতালুক মুর্শিদাবাদ জুড়ে উত্তর থেকে দক্ষিনে এমন নজির বিহীন বিদ্রোহ  আগে কেউ দেখেনি। বিশেষ সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, আর সেই  বিদ্রোহ দমিয়ে নিজের গড় বাঁচিয়ে রাখতে নতুন স্ট্যাটিজি নিয়ে বাছাই করা বিধানসভা কেন্দ্র গুলিতে রুদ্ধদ্বার কর্মী সভা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন  'দাদা' তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী।

আরও পড়ুন, 'নেত্রী নন্দীগ্রামে হারছেন', মমতার ঘনিষ্ঠমহল থেকেই দ্বিতীয় আসনে লড়ার খবর পেয়েছিলেন নাড্ডা  


 বিশেষত মুর্শিদাবাদে বিধানসভা ভোটের আগে রঘুনাথগঞ্জ, সুতি, সাগরদিঘি, নওদা ও রেজিনগরের মতো  কেন্দ্রগুলিতে দলের একটা বড় অংশের নেতা-কর্মীরা শীর্ষ নেতৃত্বের দিকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। মুর্শিদাবাদে দলের অন্দরমহলে এমন বিদ্রোহ আগে ভাবা যেত না। এমনটাই বলছেন জেলার পুরনো দিনের তাবড় তাবড় রাজনৈতিক কর্মীরা। তাঁদের মতে, নেতা কর্মীদের এমন বিদ্রোহ দলের কাছে যথেষ্টই অস্বস্তিজনক হয়ে উঠেছে। তাই এবার বিক্ষুব্ধদের সামাল দিয়ে হারানো মাটি উদ্ধার করার জন্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জেলাজুড়ে প্রচারে নামছেন। বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় গিয়ে দিনে তিন থেকে চারটি কর্মিসভা করবেন তিনি। জেলায় হেলিকপ্টারে চড়ে চষে বেড়াবেন। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে তিনি গাড়িতে চড়ে জেলায় প্রচার করতেন। কিন্তু এবার পরিস্থিতি অন্যরকম। জেলায় সেই সংগঠন নেই। এবার তাঁকে অনেক বেশি সময় দিতে হবে। তাই সময় অপচয় রুখতে তিনি হেলিকপ্টার ব্যবহার করবেন।

আরও পড়ুন, 'সিঙ্গুরবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন দিদি', তৃতীয়দফার আগে মোদীর নিশানায় মমতা 

 

দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,  তিনি লালবাগ, সালার ও বড়ঞায় কর্মিসভা করবেন। নওদা ,সাগরদিঘিতেও কর্মিসভা করবেন। সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রে দলের নেতাকর্মীরা প্রার্থী বদলের দাবিতে এখনও বিদ্রোহ চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকার বাইরের এক নেতাকে এখানে প্রার্থী করা হয়েছে। কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা কর্মীরা ভূমিপুত্র প্রার্থীর দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। কর্মিসভার আগে  সাগরদিঘির কয়েকজন বিক্ষুব্ধ নেতার সঙ্গে বহরমপুরে অধীরবাবুর বৈঠক করার কথা রয়েছে। সাগরদিঘির কংগ্রেস নেতা সইদুল রহমান বলেন, বৈঠকে গিয়ে আমরা আমাদের মতামত জানাব। ব্লকের বেশ কয়েকজন নেতাকে ডাকা হয়েছে। 

 

আরও পড়ুন, 'দেবশ্রী রায়কে নিয়ে ক্ষোভ ছিল-তাই প্রার্থী করিনি', বিস্ফোরক মমতা 


কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, প্রথম দফায় ‘দাদা’ দিনে তিন চারটি কর্মিসভা করে পরিস্থিতি সামাল দেবেন। পরে তিনি জনসভা শুরু করবেন। এবছর পরিস্থিতি একটু অন্যরকম রয়েছে, তা স্বীকার করতে অসুবিধা নেই। ওঁকে অনেক বেশি সময় দিতে হবে। তবে অধীরবাবুর লাগাতার কর্মিসভার পরেও আদৌ বিদ্রোহ থামবে কিনা তা নিয়েও অনেকে সংশয়ে রয়েছেন। রঘুনাথগঞ্জের কংগ্রেস নেতা নাসির শেখ বলেন, যে যাই বলুক না কেন, আমরা প্রার্থীকে মেনে নেব না। নির্দল প্রার্থী দেওয়া যায় কি না তা নিয়ে আলোচনা চলছে। দু-তিনদিনের মধ্যে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে কংগ্রেসের এই পরিস্থিতি দেখে বিরোধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না। বিজেপির জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, ওদের নেতা জেলায় হেলিকপ্টারে ঘুরেও আর কিছু করতে পারবে না।' তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, কংগ্রেস দলের মধ্যে আর সেই শৃঙ্খলা নেই। সব জায়গাতেই ওরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করছে। এই জেলার মানুষ আর ওদের পাশে নেই। তাই হেলিকপ্টার চড়ে দিনে চার-পাঁচটি কর্মিসভা করে কোনও কাজ হবে না।'

Share this article
click me!