তৃতীয়বার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর দলবদলুদের জন্য হাতছাড়া হতে চলা জেলা পরিষদ ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করল তৃণমূল। আজ মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনল তারা। ২৩ জন জেলা পরিষদ সদস্য ওই অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন। লিখিতভাবে ডিভিশনাল কমিশনারের কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন- বিজেপি কর্মী দেবাশিস আচার্যর রহস্য মৃত্যু, পরিকল্পিত হত্যা বলেই দাবি কণিষ্ক পণ্ডার
একুশের বিধানসভা ভোটের আগে মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ ১৮ জন তৃণমূল সদস্য বিজেপিতে যোগ দেন। ফলত জেলা পরিষদ তাদের দখলে চলে গিয়েছে বলে দাবি করেছিল বিজেপি। কিন্তু, ভোট মিটতেই বদলে যায় ছবিটা। ভোটের পর বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফেরেন ৬ জন সদস্য। শাসক দলে নাম লেখান বিজেপির ২ সদস্যও। মালদা জেলা পরিষদের সদস্য সংখ্যা মোট ৩৮। এখন জেলা পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার দাবি করেছে তৃণমূল। অন্যদিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। তবে অন্য জেলার পাশাপাশি বিধানসভা ভোটে মালদাতেও এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। ১২টি আসনের মধ্যে ৮ টি আসন গিয়েছে তৃণমূলের ঝুলিতে। আর ভোটে এই সাফল্যের পরই, এবার জেলা পরিষদের সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনায় আর দেরি করছে চাইছে না তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সভাধিপতির পদ খারিজ করার জন্য রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে ডিভিশনাল কমিশনারের কাছে অনাস্থা জমা দেন তৃণমূলের ২৩ জন জেলা পরিষদ সদস্য। সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানিয়েছেন মালদা জেলার তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর।
আরও পড়ুন- একসঙ্গে এল জোড়া স্পনসর, টোকিও অলিম্পিকে মিটল ভারতীয় দলের সমস্যা
মালদায় পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পরই শুভেন্দু অধিকারীর দৌলতে ২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেসের থেকে জেলা পরিষদের দখল নিয়েছিল তৃণমূল। এরপর সেই শুভেন্দুর মাধ্যমেই একুশের বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদে ধাক্কা দিয়েছিল বিজেপি। মালদা জেলা পরিষদের মোট আসন ৩৮টি। যদিও ভোট হয়েছিল৩৭টি আসনে। একজন প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় সেই আসনে ভোট স্থগিত হয়ে যায়। এর মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পায় ২৯টি আসন। বিজেপি পায় ৬টি আসন। কংগ্রেস পায় ২টি আসন। সভাধিপতি নির্বাচিত হন গৌড়চন্দ্র মণ্ডল। সহ সভাধীপতি নির্বাচিত হয় চন্দনা সরকার। বিধানসভা ভোটে চন্দনা সরকার বৈষ্ণবনগর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমুলের প্রার্থী হয়ে জয়ী হন।
গত মার্চে মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড়চন্দ্র মণ্ডল-সহ ১৪ জন সদস্য যোগ দেন বিজেপিতে। স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপির আসন দাঁড়ায় ২০টি। ম্যাজিক ফিগার ১৯। ফলত জেলা পরিষদে তাদের দখলে গিয়েছে দাবি করতে থাকে বিজেপি। তবে ভোটের পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেন ৮ জন। এভাবেই ফের ম্যাজিক ফিগার অতিক্রম করে তৃণমূল। আর তারপরই সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়।