পায়ের অপারেশন শেষ জাকিরের। এই মুহূর্তে কড়া নজরদারিতে রয়েছেন মন্ত্রী। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের নিমতিতা স্টেশনে। বোমার আঘাতে গুরুতর জখম রাজ্যের শ্রম দফতরের মন্ত্রী জাকির হোসেন। ঘটনার তদন্তে শুক্রবার নিমতিতা স্টেশনে যাচ্ছে এনআইএ।
আরও পড়ুন, জাকিরকে দেখতে SSKM-এ মমতা, ঘটনার তদন্তে CID, NIA-র দাবিতে অধীর
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই পায়ের অপারেশন শেষ হয়েছে। তবে আরও ২৪ ঘন্টা ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসকদের কড়া নজরদারিতে থাকবেন মন্ত্রী জাকির হুসেন। এরপর প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা জাকিরের ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গের চিকিৎসা এবং পুনর্গঠন করবেন। মূলত প্রাথমিকভাবে দেহের ৩ টি জায়গায় প্লাস্টিক সার্জারির পরিকল্পনা করা হয়েছে। বাঁ পায়ের গোড়ালির উড়ে যাওয়া অংশে কোষ এবং টিস্যু প্রতিস্থাপন করে পুনর্গঠন করা হবে। পায়ের ছিঁড়ে যাওয়া শিরা-উপশিরা হাত থেকে সংগ্রহ করা হবে। বুধবারই গোড়ালির কিছু অংশ পুনর্গঠন করা হয়। হাত থেকে ধমনি কেটে নিয়ে পায়ের ধমনী মেরামত করা হয়েছে। বুড়ো আঙুলেরও অপারেশন করা হয়েছে। প্রায় ৪ ঘন্টা অপারেশনের পর, জাকির হোসেন আপাতত বিপদ মুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
আরও দেখুন, Election Live Update- মার্চের শুরুতেই কি ভোট ঘোষণা, চলতি মাসের শেষেই রাজ্যে মোদী
আরও পড়ুন, জনগণের কথা ভাবলেই হবে জয়, পদ্মের মুখ হবেন কি, খোলসা করলেন লক্ষীরতন শুক্লা
অপরদিকে, বৃহস্পতিবারই কংগ্রেসের সভাপতি অধির রঞ্জন চৌধুরি এনআইএ-র তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। শুক্রবার নিমতিতা স্টেশনে যাচ্ছে এনআইএ। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্তে সিট গঠন করেছে রাজ্য সরকার। তদন্তকারী দলের মাথায় এডিজি সিআইডি অনুজ শর্মা। এই ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করেছে সিআইডি। বৃহস্পতিবারই তাঁরা খতিয়ে দেখতে নিমতিতা স্টেশনে যায়। ঘটনাস্থলে এখনও ছড়িয়ে রয়েছে বিস্ফোরণের চিহ্ন। তা পরীক্ষা করে দেখেন সিআইডি-র আধইকারিকরা। ২ নং প্ল্যাটফর্মের নীচে নেমেও তারা পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালান।
এদিকে পৈলানের সভা থেকে নিমতিতা বিস্ফোরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বক্তব্যের শুরুতেই তিনি তুলে আনে জাকির প্রসঙ্গ। প্রশ্ন তোলেন, কেন সেদিন রেল স্টেশনে আলো জ্বালানো ছিল না। কেন ঘটনা ঘটে যাবার পরেও রেলের দেখা মেলেনি বলে প্রশ্ন করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। উল্লেখ্য, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের নিমতিতা স্টেশনে বোমার আঘাতে গুরুতর জখম রাজ্যের শ্রম দফতরের মন্ত্রী জাকির হোসেন সহ ১১ জন সঙ্গী। তিনি বলেন জাকির আমার প্রিয় নেতা। আমার মনে এরা নির্বাচনটা মুর্শিদাবাদ দিয়ে শুরু করবে বলে নিশানা করেন বিজেপিকে। তাই জাকিরকে খুন করে সরিয়ে দেওয়াটাই ছিল এদের টার্গেট। এরপর তিনি বলেন, কারা এর পিছনে ঠিক খুঁজে বার করব।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাতে এই গোষ্ঠীদ্বন্ধ এবার চরমে পৌঁছল বলেই মনে করা হচ্ছে। বুধবার রাতে জঙ্গীপুর মহকুমার অন্তর্গত নিমতিতা স্টেশন থেকে কলকাতায় দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য প্লাটফর্মে দেহরক্ষী ও দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করেছিলেন রাজ্যের শ্রমদপ্তর এর প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন। আর সেই সময় মাত্র কয়েক ফুট দূর থেকে তাঁকে লক্ষ্য করে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে জোরালো শক্তিশালী বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। বোমা নিক্ষেপে পর চারপাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। হামলার আকস্মিতা কাটিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় প্রতিমন্ত্রীকে। তাঁর সঙ্গে থাকা নিরাপত্তারক্ষী থেকে শুরু করে আরও ৮ থেকে ১০ জন স্প্লিন্টারের আঘাতে জখম হন। জাকির হোসেনের বুক ও মাথার বেশ কিছু অংশ সেইসঙ্গে হাঁটু ও তার নীচে একাধিক জায়গায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয় বোমের আঘাতে। বিকট আওয়াজ শুনে তড়িঘড়ি আশেপাশের অন্যান্য লোকজন থেকে শুরু করে রেলওয়ে পুলিশ ছুটে আসে সেখানে। ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় প্রতিমন্ত্রী ও তাঁর সমর্থকদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। পরে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় এসএসকেমে।