নববর্ষের উপহার ফেরাল ন'বছরের ক্ষুদে সেই টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করেছে সে সঙ্গে প্রণাম জানিয়ে চিঠি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলিতে
লকডাউনের বাংলায় নববর্ষও উৎসবহীন। কিন্তু তাতে কি! প্রতিবারের মতো এবছরও একমাত্র মেয়েকে নতুন জামা কিনে দিয়েছিলেন বাবা-মা। কিন্তু রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত ন'বছরের ক্ষুদেও! নিজের স্বল্প সঞ্চয় ও নববর্ষের পারিবারিক উপহারের মূল্য সে তুলে দিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্রাণ তহবিলে। সঙ্গে প্রণাম জানিয়ে কচিকাঁচা হাতে লেখা আস্ত একটি চিঠিও পাঠাল 'পিসিমণি'-কে।
হুগলির রথতলায় বাড়ি ন'বছরের ত্রিজিতা সিংহ-এর। মঙ্গলবার সকালে যখন বাবা-মায়ের সঙ্গে ২১০০ টাকার চেক নিয়ে জেলাশাসকের দপ্তরে হাজির হয় একরত্তি মেয়েটি, তখন বেশ অবাক হয়ে যান পোড় খাওয়া আইএএস অফিসার ওয়াই রত্নাকর রাও। হঠাৎ কেন এমন কাজ করল সে? ত্রিজিতার জবাব, 'টিভিতে দেখছিলাম, করোনায় আক্রান্ত হয়ে অনেকে মারা যাচ্ছে, কেউ খেতে পাচ্ছে না। পয়লা বৈশাখে বাবা-মা নতুন জামা কিনে দিয়েছিল। আমি বলেছিলাম, এত লোক মারা যাচ্ছে, নতুন জামা পরব না। তাই বাবা-মা নতুন জামার টাকা ডিএম অফিসে দিয়েছে।'
কী বলছেন ত্রিজিতার বাবা-মা? বাবা সৌমিত্র সিংহ জানালেন, 'আমি আর ওর মা জামা কিনে আনার পর দেখি মেয়ের মুখ ভার। একটাই কথা বলছে, এ বছর আমার নতুন জামা চাই না। বহু মানুষ অসহায়। এ বছর নতুন জামা নাই বা হল। তবে কীভাবে ওর জমানো টাকা অসহায় মানুষদের দেবে তা নিয়েই প্রশ্ন করতে থাকে।' কী আর করবেন! মেয়ের জন্য কেনা নতুন জামা ফেরত দিয়ে আসেন সৌমিত্র। হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাওয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। নিজের ভাঁড়েও একশো টাকা জমিয়েছিল ত্রিজিতা। উপহারের মূল্যের সঙ্গে সেই টাকাও চেকের মাধ্যমে জেলাশাসকের হাতে তুলে দিয়েছে সে। তার ইচ্ছা, এই টাকা দিয়ে করোনায় যাঁরা অসহায়, তাঁদের জামা ও ওষুধ কিনে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।