৪ মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য কাটতেন লটারি, মাত্র ৬০ টাকাতেই বাজিমাত রায়গঞ্জের দীপকের

দীপক পেশায় একজন ভুটভুটি চালক। চার মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে পরিবারে সদস্য সংখ্যা ছয়। কিন্তু, শুধুমাত্র ভুটভুটি চালিয়ে খাবারের জোগাড় হয়ে গেলেও মেয়েদের বিয়ে কীভাবে দেবেন তা যেন ভেবেই পাচ্ছিলেন না দীপক। রীতিমতো চিন্তায় দিন কাটছিল। কারণ ভুটভুটি চালিয়ে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয়।

Web Desk - ANB | Published : Dec 22, 2021 8:52 AM IST / Updated: Dec 22 2021, 02:33 PM IST

পরিবারে (Family) স্বচ্ছলতা ছিল না একেবারেই। আর্থিক অনটন (Financial Deprivation) লেগেই ছিল। এদিকে চার মেয়েকে কীভাবে সুপাত্রস্থ (Marriage of Daughters) করবেন তা ভেবেই পাচ্ছিলেন না। কোথা থেকে আসবে মেয়েদের বিয়ের টাকা (Money) সেই ভেবে রীতিমতো চিন্তায় পড়েছিলেন দীপক দাস। আর এই পরিস্থিতিতে পরিবারে যাতে কিছুটা স্বচ্ছলতা ফেরে সেই আশায় লটারি (Lottery) কিনতে শুরু করেছিলেন তিনি। ভাবেননি যে তাঁর ভাগ্যও কোনও দিন সদয় হতে পারে। অবশেষে মাত্রা ৬০ টাকার লটারি কিনে ১ কোটি (1 Crore) টাকা জিতলেন উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur District) রায়গঞ্জের দক্ষিণ বরুয়া গ্রামের বাসিন্দা দীপক। 

দীপক পেশায় একজন ভুটভুটি চালক। চার মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে পরিবারে সদস্য সংখ্যা ছয়। কিন্তু, শুধুমাত্র ভুটভুটি চালিয়ে খাবারের জোগাড় হয়ে গেলেও মেয়েদের বিয়ে কীভাবে দেবেন তা যেন ভেবেই পাচ্ছিলেন না দীপক। রীতিমতো চিন্তায় দিন কাটছিল। কারণ ভুটভুটি চালিয়ে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া কোনওভাবেই সম্ভব নয়। তা চালিয়ে কোনওরকমে পরিবারের সদস্যদে মুখে অন্য সংস্থান করেন তিনি। কিন্তু, তা দিয়ে চার মেয়েকে ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া একেবারেই যে সম্ভব নয় তা ভালোভাবেই জানতেন দীপক। ফলে কী করবেন কোথা থেকে টাকা পাবেন তা ভেবে পাচ্ছিলেন না। তারপর লটারি কাটা শুরু করেন। প্রায় দেড় বছর ধরে লটারি কিনছিলেন তিনি। তা নিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা কখনও পাননি। দু একবার ২ হাজার ও ৫ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। কিন্তু, তা দিয়ে তো আর বিশেষ কিছু হয় না। ফলে মাঝে মধ্যেই লটারি কিনতেন। অবশ্য কেমন কিছু না পেতে পেতে প্রায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন তিনি। 

আরও পড়ুন- দরজায় কড়া নাড়ছে ধনলক্ষ্মী, লটারি কেটে রাতারাতি কোটপতি জয়নগরের প্রৌঢ়

কিন্তু, মঙ্গলবার দিনটি বদলে দেয় দীপকের জীবন। ওই দিন দুপুরে কাজের ফাঁকে ৬০ টাকা দিয়ে লটারি কেটেছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন প্রতিবারের মতো এবারও টাকা জলেই গেল। এরপর কৌতুহল বশত সন্ধের দিকে কাজ থেকে ফেরার পথে লটারির দোকানে গিয়ে নম্বর মিলিয়ে দেখেন তিনি। মেলানোর পর অবাক হয়ে যান। প্রথমে অবশ্য নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারেননি। তারপর ফের মেলান তিনি। দেখেন যে নাহ! সত্যিই লটারিতে প্রথম পুরস্কার জিতে নিয়েছেন তিনি। আর সেই পুরস্কার হল ১ কোটি টাকা। খুশিতে ফেটে পড়েন দীপক। আর এই ঘটনার খবর মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। 

আরও পড়ুন- মাত্র ৩০ টাকাতেই ফিরল ভাগ্য, রাজমিস্ত্রি থেকে কোটিপতি যুবক

লটারি জিতে কোটিপতি দীপক দাস বলেন, "বাড়তি আয় আর মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার টাকা জোগাড়ের জন্যই লটারির টিকিট কাটতাম। এতদিন পর ভগবান মুখ তুলে চেয়েছেন। এখন আমি আমার চার মেয়ের খুব ভালোমতো বিয়ে দিতে পারব।" এ প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য রীপন সরকার বলেন, "দিনমজুর হতদরিদ্র ভুটভুটি চালক দীপক দাসের ১ কোটি টাকার লটারি পাওয়ার খবর শোনা মাত্রই রায়গঞ্জ থানার পুলিশ তাঁকে যথেষ্ট নিরাপত্তা সহকারে থানায় নিয়ে যায়। তারপর সেখানে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। রায়গঞ্জ থানার পুলিশের এই ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।" আর লটারিতে প্রথম পুরস্কার জেতার পর এখন খুশির জোয়ারে ভাসছেন দীপকের পরিবারের সদস্যরা। 

Share this article
click me!