করোনার ভয়কে জয় করল রসনা, সুস্থ হয়েই মুম্বই ফিরতে মরিয়া রায়গঞ্জের যুবক

  • বাড়ির একঘেয়ে 'মেনু'-তে অরুচি
  • করোনামুক্ত হয়েই মুম্বই ফিরতে মরিয়া রায়গঞ্জে যুবক
  • বান্দ্রায় একটি ক্যাফে কাজ করতেন তিনি
  • ছেলের সিদ্ধান্তে আপত্তি নেই পরিবারেরও
     

Asianet News Bangla | Published : Jun 12, 2020 10:57 AM IST

কৌশিক সেন, রায়গঞ্জ: করোনা আতঙ্কে সামাজিক বয়কটেও বিচলিত নন একেবারেই। বরং বাড়িতে দিনের পর দিন 'একই মেনু'-তে হাঁফিয়ে উঠেছেন রায়গঞ্জের এক পরিযায়ী শ্রমিক! ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার অপেক্ষা, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, মুম্বই-এ নিজের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তিনি।

আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে বহিরাগতদের কাজে যোগ দিতে 'বাধা', অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কারখানা

বাড়ি, রায়গঞ্জ ব্লকের বাহিন পঞ্চায়েতে মহারাজপুর গ্রামে। মুম্বই শহরের বান্দ্রা এলাকা একটি ক্যাফেতে কাজ করতেন শাহিন আলি নামে ওই যুবক। পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা যথেষ্টই। শাহিন জানিয়েছেন, '৬ বছর আগে জামাইবাবুর সঙ্গে মুম্বই গিয়ে ক্যাফে কিচেন স্টাফের চাকরি পাই। বিহারের ৬ জন যুবকের সঙ্গে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতাম। লকডাউন চালু হওয়ার পর মালিক মাইনে বন্ধ করেননি। মে মাসে ট্রেন চালু হওয়ার ঠিক করি বাড়ি ফিরে আসবো।' শুধু তাই নয়, ফেরার পর লকডাউনের জন্য মাস দুয়েক মতো চাল, ডাল, আলুতে বাড়িতে মজুত করে ফেলেন শাহিন। 

জানা গিয়েছে, ৭ মে মুম্বই থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে একটি স্পেশাল ট্রেন আসে রায়গঞ্জে। সেই ট্রেনে আরও অনেকের সঙ্গে ফেরেন শাহিনও। দিন দুয়েক পর লালারস বা সোয়াব পরীক্ষা করা হয় তাঁর, করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। মুম্বই ফেরত যুবককে ভর্তি করা হয় রায়গঞ্জের কোভিড হাসপাতালে। দিন দশেকের ভর্তি থাকার পর, রোগীকে সুস্থ বলে ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। এরপরই ঘটে বিপত্তি। সংক্রমণের ভয়ে শাহিন ও পরিবারের লোককে পাড়া-প্রতিবেশী এমনকী, বন্ধু-বান্ধবরাও এড়িয়ে চলছেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমনই যে, কার্যত গৃহবন্দি হয়ে দিন কাটছে সকলের। তাতে অবশ্য খাওয়া-দাওয়ার বা অন্য কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। কিন্তু স্রেফ ডাল, ভাত আর আলুসেদ্ধ আর কতদিনইবা মুখে রোচে! 

আরও পড়ুন: 'বাড়ি ফেরার অনুমতি দিতে হবে', কোয়ারেন্টাইনে সেন্টারে অনশনে পরিযায়ী শ্রমিকরা

শাহিন আলির সাফ কথা, 'দিনের পর দিন একই খাবার খেতে হচ্ছে। আমি বাড়িতে থাকলে আতঙ্কও কাটবে না। ট্রেন চালু হলেই মুম্বই-এ ফিরে যাবো।' তাঁর বাবা হুসেন আলিও বলছেন, 'নাতনিটাকে বাজার থেকে মাছ কিনে এনে খাওয়া পারছি না। ছেলের মুম্বই চলে গেলে চিন্তায় থাকবো। কিন্তু এছাড়া তো আর কোনও উপায়ও নেই।' 

Share this article
click me!