২০১৭ সালের বন্যায় বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল মালদা জেলার বিভিন্ন অংশে। এখনও তার ফল ভোগ করতে হচ্ছে এলাকার মানুষকে। মেরামতের অভাবে ভাঙাচোরা, নড়বড়ে সেতু পেরিয়েই গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। যে কোনও সময়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা, সেই প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছেন এলাকার মানুষ।
মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালের একটু দূরে মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ফুলহরের শাখা নদী কোবিয়া খাল ও মির্জামুনি খালের ওপর অবস্থিত সেতুটির অবস্থা শোচনীয়। এখন তাই সেতুটি ভরসার নয়,আতঙ্কের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যোগাযোগের জন্য এলাকার লোকেরা ওই সেতুটির উপর যথেষ্ট নির্ভর করেন। গুরুত্বপূর্ণ সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ২০১৭ সালের ভয়াবহ বন্যায়। সেতুটির ওপর দিয়ে বন্যার জল চলে গিয়েছিল। ফলে সেতুটি দুর্বল হয়ে পড়ে।
এই সেতুটির বেশ কয়েকটি জায়গায় বড়ো বড়ো ফাটল দেখা দিয়েছে। সেতুর তলার দিকেও ফাটল দেখা দিয়েছে। দু'দিকের প্রাচীরও বানের জলে ভেসে গেছে। এক কথায় চরম সংকটজনক অবস্থায় রয়েছে সেতুটি। যেকোনো সময় গোটাটাই ভেঙে পড়তে পারে, এমনটাই আশংকা এলাকার বাসিন্দাদের। ওই দুর্বল সেতুটি মেরামতের জন্য বাসিন্দারা স্থানীয় বিডিও, এসডিও ও জেলাশাসককে একাধিকবার জানিয়েছেন। কিন্তু কেউই এব্যাপারে কর্ণপাত করছেন না বলে অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দা বিষ্ণু দেব জানান, "বহুবার জানানো হয়েছে এখানকার স্থানীয় নেতা মন্ত্রীদের। ভোটের আগে নানান প্রতিশ্রুতি দেয় এরা যে রাস্তা সারিয়ে দেবে, কিন্তু ভোট ফুরিয়ে গেলে আর কেউ পাত্তা দেয় না তাদের। বিগত বেশ কিছু বছর ধরে এই সেতুর দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা। কিন্তু রাস্তা সরানোর কাজে হেলদোল নেই নেতাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, ওই সেতুটির উপর দিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ এর ভিঙ্গল, মহেন্দ্রপুর, তুলসীহাটা ও হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা নিত্যপ্রয়োজনে যাতায়াত করেন। সেতুটির ওপর দিয়ে প্রতিদিন শ'য়ে শ'য়ে যানবাহনও যায়। যে কোনো সময় সেতুটি ভেঙে সাংঘাতিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবুও প্রশাসনের কোনো হুঁশ নেই। কোবিয়া ও মির্জামুনি খালের ওপর অবস্থিত সেতুটি সংকটজনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে আজও।
মালদা জেলার তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন,"সঠিক টাইম জানানো সম্ভব নয়। তবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা এই বিষয় নিয়ে প্রশাসনের কাছে জানাবো। প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে দিদির কানে একথা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করব, আশা করি খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান করা যাবে। আমরা তো আগেও দেখেছি যে বিগত দিনের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কিভাবে আমাদের সাহায্য করেছেন। দিদিকে বলোতে একটিবার ফোনেই আমরা রাস্তা, ব্রিজ সব কিছু পেয়েছি। আশা করি এবারও তাই হবে।