দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তাই এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অনাস্থা প্রস্তাব এড়াতে তৃণমূলের জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদত্যাগ করলেন। দল
বিরোধী কার্যকলাপ সহ একাধিক অভিযোগ ছিল মুর্শিদাবাদের নওদার দাপুটে নেতা তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোসারফ হোসেনের বিরুদ্ধে। পদত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগ দেন মোশারফ হোসেন।
বৃহস্পতিবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। দলবিরোধী কাজের অভিযোগ থাকায়, তাঁর বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই তিনি পদত্যাগ করেন।
দলত্যাগী মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। তা সূত্র মারফত জানার পরই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে পদ ছাড়েন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন। মোশারফ হোসেনের সঙ্গে যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ তথা জেলা সভাপতি আবু তাহের খান।
মুর্শিদাবাদে অধীর চৌধুরীর হাত ধরে মোশারফ হোসেনের রাজনীতিতে প্রথম আবির্ভাব। দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেস ঘরানার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তৃণমূলের তৎকালীন মুর্শিদাবাদ জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে মোশারফ যোগ দেন ঘাসফুল শিবিরে। গত পঞ্চায়েত ভোটে নির্বাচিত হয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদে বসেন মোশারফ। সম্প্রতি তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে দোলাচল দেখা দেয় মুর্শিদাবাদে।
একদিকে, একদা রাজনৈতিক গুরু শুভেন্দুর বিজেপিতে চলে যাওয়া, অন্যদিকে, নিজের দলের কাজে ক্রমশ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ায় তৃণমূলের তরফেও কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন মোশারফ। পরবর্তীতে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপরই কংগ্রেসে ফিরে যান তিনি। তৃণমূল থেকে মোশারফ বহিষ্কৃত হলেও জেলা পরিষদের সভাধিপতির পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার কোনও আইন নেই। ফলে পদে আসীন ছিলেন তিনি। এদিকে ঘরে ফিরে আসার ফলে বিধানসভা ভোটে মোশারফকে টিকিট দেয় কংগ্রেস। নওদা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। তবে চেষ্টা করেও জয়ী হতে পারেননি তিনি।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে মুর্শিদাবাদের তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান জানান, ২৪ মে অনাস্থা আনা হবে মোশারফ হোসেনের বিরুদ্ধে। পাশপাশি আইনি পদক্ষেপ করা হবে তাঁর সঙ্গে বাকি যাঁরা দলত্যাগ করেছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে। আর এই অনাস্থা এড়াতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদ ত্যাগ করেন মোশারফ হোসেন।
মোশারফ হোসেন এদিন বলেন," জেলার মানুষ যে রায় ভোটবাক্সে দিয়েছে ভোটে দিয়েছে, সেই রায় কংগ্রেসের একজন নেতা হিসেবে আমরা মাথা পেতে নিয়েছি। আবার নতুন করে শূন্য থেকে রাজনীতি শুরু করব। তৃণমূলে ফেরার আর কোন প্রশ্নই নেই। তাই অনাস্থা আনার আগেই নৈতিকভাবে জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদ থেকে পদত্যাগ করলাম"।