Durga Puja- সন্ধিপুজোর আগে কামান দাগা হত মহিষাদল রাজবাড়িতে

Published : Sep 28, 2021, 06:15 AM IST
Durga Puja- সন্ধিপুজোর আগে কামান দাগা হত মহিষাদল রাজবাড়িতে

সংক্ষিপ্ত

রাজ আমলে ধুমধাম করে পুজো হত। নানা অনুষ্ঠানও হত। কিন্তু, জমিদারি চলে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে পুজোর জৌলুস কমেছে। তবে রাজ আমলের ঐতিহ্য আজও বজায় রয়েছে পুজোতে। 

এখন রাজার (King) আর সেই রাজত্ব নেই। নেই রাজবাড়ির জাঁকজমক। রাজবাড়ি এখন বড়ই ফিকে। কিন্তু রাজ ঐতিহ্য মেনে আজও দুর্গাপুজো (Durga Puja) হয় মহিষাদল রাজবাড়িতে (Mahishadal Rajbari )। পুজো হলেও রাজ আমলের জৌলুস কমেছে। দুর্গাপুজোর কয়েকটা দিন যাত্রা থেকে শুরু করে নানা ধরনের অনুষ্ঠান, ভোগ বিতরণ, নিরঞ্জনের শোভাযাত্রা সব কিছুতেই আগের তুলনায় অনেকটাই জৌলুস কমে গিয়েছে। মহিষাদলে একাধিক বিগ বাজেটের দুর্গাপুজো হয়ে থাকে, তা সত্ত্বেও মহিষাদলের ঐতিহ্যপূর্ণ এই দুর্গাপুজোর টানে সবাই একটিবারের জন্য হলেও এই বাড়িতে আসেন। রাজবাড়ির দুর্গামণ্ডপে ভিড় জমান স্থানীয় বাসিন্দারা। 

জৌলুস যে কমেছে সে কথা স্বীকার করেছেন রাজবাড়ির সদস্যরা। রাজ আমলে ধুমধাম করে পুজো হত। নানা অনুষ্ঠানও হত। কিন্তু, জমিদারি চলে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে পুজোর জৌলুস কমেছে। তবে রাজ আমলের ঐতিহ্য আজও বজায় রয়েছে পুজোতে। এলাকার বাসিন্দারাও অন্য সর্বজনীন পুজো মণ্ডপের পাশাপাশি রাজবাড়ির পুজোতেও আসেন।

আরও পড়ুন,Durga Puja: ২৫০ বছর পুরোনো বর্ধমানের দে পরিবারে হরগৌরী রূপে পূজিত হন দেবী দুর্গা

জানা গিয়েছে, প্রায় আড়াইশো বছর আগে মহিষাদলের রানি জানকীর আমলে মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো শুরু হয়। সেই সময় থেকেই মহিষাদল রাজবাড়িতে ধুমধামের সঙ্গে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। তবে রাজত্ব চলে যাওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর জৌলুসও কমতে থাকে। রাজ আমলে মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে যাত্রাপালার অনুষ্ঠান হত। রাজবাড়ির মহিলা সদস্যরাও পর্দার আড়াল থেকে সেই যাত্রা দেখতেন। ষষ্ঠীতে ছয় মন, সপ্তমীতে সাত মন, অষ্টমীতে আট মন, নবমীতে নয় মন চালের প্রসাদ তৈরি করে এলাকার বাসিন্দাদের দেওয়া হত। কিন্তু রাজত্ব চলে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে। এখনও পুজোর দিনগুলিতে প্রসাদ করা হয়। কিন্তু তার পরিমাণ খুবই কম। 

আরও পড়ুন- ২০০ বছরের পুরনো হাওড়ার পাল বাড়ির দুর্গাপুজোয় আজও সিঁদুর খেলা হয় অষ্টমীতে

সন্ধিপুজোর সময় রাজবাড়ি থেকে কামান দেগে সন্ধিপুজো (Sandhi Pujo) শুরু হত। মহিষাদল রাজবাড়ির কামানের শব্দ পাওয়ার পর আশপাশের এলাকার পুজো মণ্ডপেও সন্ধিপুজো শুরু হত। কিন্তু, সরকার কামান দাগার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করার ফলে প্রায় ত্রিশ বছর আগে থেকে সেই রীতি বদলে গিয়েছে। তার পরিবর্তে পটকা ফাটিয়ে সন্ধিপুজো করা হয়। আগে রাজবাড়ির সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া হিজলি টাইডাল ক্যানেল হয়ে বড় নৌকা করে শোভাযাত্রা সহকারে গেঁওখালিতে রূপনারায়ণ নদীতে ঠাকুর নিরঞ্জন দিতে যাওয়া হত। ৫০ থেকে ৬০ বছর আগে তাও বন্ধ হয়েছে। এখন রাজবাড়ি লাগোয়া রাজদিঘিতে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়।

দুর্গাপুজোয় ১০৮টি নীল পদ্ম লাগে। তা ছাড়াও এখানে নবরাত্রি হয়। মহালয়ার পর থেকে রাজবাড়ির দুর্গামণ্ডপ লাগোয়া অশ্বত্থ গাছের তলায় নটি ঘট রাখা হয়। প্রতিমার একপাশে ঘট থাকে, অন্য পাশে বেদির উপরে ধান রাখা হয়। এলাকায় ভালো ফসল লাভের আসায় দেবীর পাশে থাকা বেদিতে ধান রাখা হয় বলে রাজবাড়ির তরফে জানানো হয়েছে। দুর্গামণ্ডপ লাগোয়া জায়গায় রাজ আমলে অনুষ্ঠানের জন্য স্থায়ী মঞ্চ ছিল। সেখানে যাত্রা থেকে শুরু করে নানা ধরনের অনুষ্ঠান হত। তবে বর্তমানে সেই মঞ্চ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অনুষ্ঠানের বহরও এখন ছোট। 

আরও পড়ুন- দশমীতে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ একসঙ্গে আলো দেখান চাঁচল রাজবাড়ির দুর্গাকে

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সরকারি নিয়ম মেনেই এবার পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় আমফান ও যশের তাণ্ডবে রাজবাড়ির ঠাকুরদালানের ছাদ উড়ে যায়। স্থানীয় বিধায়ক তিলক কুমার চক্রবর্তীর উদ্যোগে বিধায়ক কোটার টাকায় ঠাকুরদালান নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। দর্শনার্থীদের যাতে কোনও অসুবিধে না হয় তার জন্য রাজবাড়ির প্রতিনিধিদের পাশাপাশি মহিষাদল বিধানসভার বিধায়ক, মহিষাদলের প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে পুজোটি সুন্দরভাবে পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

PREV
click me!

Recommended Stories

BJP News: মুর্শিদাবাদে বদলাচ্ছে রাজনীতির সমীকরণ! বড়ঞায় বিজেপিতে যোগ দিল শতাধিক নেতৃত্ব
জুতো পায়ে আম্বেদকরকে শ্রদ্ধা নিবেদন! ভিডিও ভাইরাল হতেই বিতর্কে তৃণমূল নেতা