সংক্ষিপ্ত


২০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী হাওড়া সাঁকরাইলের পাল বাড়ির দুর্গাপুজোয় আজও সিঁদুর খেলা হয় অষ্টমীতে। পালবাড়ি পুজোয় যাতে ভবিষ্যতে কখনও কোনও সমস্যা না হয় সেই কারণে পূর্বপুরুষরাই হাওড়া আন্দুল একটি বিশাল জমি দেবোত্তর সম্পত্তি করে ট্রাস্ট তৈরি করে দিয়ে যান ।
 


২০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী হাওড়া সাঁকরাইলের পাল বাড়ির দুর্গাপুজোয় আজও সিঁদুর খেলা হয় অষ্টমীতে। গঙ্গার পাড়ে বিশাল অট্টালিকা । গোল গম্বুজ দিয়ে ঘেরা, মাঝ উঠান খোলা দুর্গা দালান আজও জানান দিচ্ছে পুরনো সেই ঐতিহ্যের কথা । বাড়ির আনাচে-কানাচে কান পাতলে শোনা যায় তখনকার দিনের সেই রাজকীয় কাহিনী । 

আরও পড়ুন,Durga Puja: ২৫০ বছর পুরোনো বর্ধমানের দে পরিবারে হরগৌরী রূপে পূজিত হন দেবী দুর্গা

চূড়ামণি পাল ছিলেন আন্দুল রাজাদের দেওয়ানী,  ১৮২০ সালে নির্মাণ করেন এই সুবিশাল অট্টালিকা

হাওড়া সাঁকরাইলের পালবাড়ি । পরিবারের লোকেরা জানাচ্ছেন,' তাদের পূর্বপুরুষ চূড়ামণি পাল ছিলেন আন্দুল রাজাদের দেওয়ানী । প্রথমদিকে গঙ্গার একেবারে পারে ছিল তাদের বসতবাড়ি । তবে গঙ্গা ভাঙ্গন এর ফলে সেই বাড়ি তলিয়ে যায় গঙ্গার জলে । তারপরে আন্দুলের রাজাদের তরফে হাওড়া সাঁকরাইলের রাজগঞ্জ-বানিপুর এলাকার তিনটি গ্রাম নিঃশুল্ক শর্তে প্রদান করা হয় চূড়ামণি পালকে । সেখানেই তিনি আনুমানিক ১৮২০ সালে নির্মাণ করেন এই সুবিশাল অট্টালিকা । তারপর থেকেই সেখানে শুরু হয় দেবী দুর্গার আরাধনা । তবে তার পুত্র নফর চন্দ্র পাল বা এন সি পাল তৎকালীন সময়ে শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে শিক্ষা অর্জন করে তৈরি করে একাধিক ইটভাটা । যা তখনকার দিনে কলকাতার অধিকাংশ স্থাপত্য তৈরীর কাজে ব্যবহার করেছেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির লোকেরা । তার আমলে এই পুজো অন্য মাত্রায় পৌঁছায় । প্রথা অনুসারে জন্মাষ্টমীর দিন দেবীর কাঠামো পুজো করে শুরু হয় মূর্তি গড়ার কাজ । মহালয়ার দিন মঙ্গল ঘট স্থাপন করে সূচনা হয় পুজো । ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন থেকে শুরু হয় বৈষ্ণব মতে পুজো, চলে সেই দশমী পর্যন্ত ।

আরও পড়ুন, Durga Puja 2021: একাধিক কমিটির বিল বেপাত্তা, পুজোয় ফের ৫০ হাজার অনুদানের ইস্যুতে উঠল প্রশ্ন

পাল বাড়ির দুর্গাপুজোয় আজও সিঁদুর খেলা হয় অষ্টমীতে 

 তখনকার দিনে সন্ধি পূজার সময় গৃহকর্ত্রীর ধুনো পরানো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে হাজির হতেন বহু মানুষ । পরিবারের সদস্যরা জানান প্রথা অনুসারে আন্দুল রাজবাড়ির তোপের আওয়াজ শোনার পরে শুরু হতো ধুনো পোড়ানো । যত রাতই হোক না কেন তা দেখতে ভিড় জমাতে সকলেই । এই বাড়ির আরেক বৈশিষ্ট্য অষ্টমীর দিন সিঁদুর খেলা । দশমীতে মা চলে যাবার বিষাদে বাড়ির মহিলারা সিঁদুর খেলতে না চাওয়ায় পুরনো ঐতিহ্য মেনে আজও সিঁদুর খেলা হয় অষ্টমীতে । এছাড়াও পালবাড়ি রথ উৎসব অত্যন্ত বিখ্যাত গোটা এলাকায় ।পালবাড়ি পুজোয় যাতে ভবিষ্যতে কখনও কোনও সমস্যা না হয় সেই কারণে পূর্বপুরুষরাই হাওড়া আন্দুল একটি বিশাল জমি দেবোত্তর সম্পত্তি করে ট্রাস্ট তৈরি করে দিয়ে যান । সেই ট্রাস্টের আয় থেকে বহন করা হয় দূর্গোপূজো, রথযাত্রা ও বাড়ির নিত্যদিনের পুজোর খরচ । তবে অর্থের কোন সমস্যা না হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমে আসছে লোক বল । চাকরি বা কর্মসূত্রে এখন অধিকাংশ পরিবারের সদস্যরাই থাকেন অন্যত্র । পুজোর কয়েকটা দিন তারা ছুটে আসেন বাড়ির পুজোর ঐতিহ্যের টানে । তবে কতদিন সেই ঐতিহ্য বজায় রাখতে পারবেন তা নিয়ে চিন্তিত বর্তমানে পাল বাড়ির সদস্যরা ।

   আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে  

আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়  

আরও দেখুন, বৃষ্টিতে বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ  

আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা  

 

YouTube video player