সংক্ষিপ্ত

গ্লাসগো জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনের খসড়া চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেছে ভারত ও চিন। এরই সঙ্গে যোগ দিয়েছে আরও ২০টি দেশ।

এই প্রথম বিশ্ব মঞ্চে চিন (China) ও ভারতের (India)একসুর শোনা গেল। সম্প্রতি প্রকাশিত গ্লাসগো জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনের (Glasgow climate summit) খসড়া চুক্তির (COP26 Draft) তীব্র বিরোধিতা করেছে এই দুই দেশ। এরই সঙ্গে যোগ দিয়েছে আরও ২০টি দেশ। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, সম্মেলনের ঘোষণা চূড়ান্ত হওয়ার পথে এখন সবচেয়ে বড় বাধা ভারত। কয়লা ও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর প্রস্তাবে নিজের অমতের কথা জানিয়েছে কয়লার ওপর অতিনির্ভর ভারত। তার সঙ্গে আপত্তি জানিয়েছে চিন, দক্ষিণ আফ্রিকা, নাইজেরিয়া ও ইরানও।

ভারত সহ এই ২২টি দেশের অভিযোগ বিশ্বের উন্নত দেশগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের বড় দায় উন্নয়নশীল দেশগুলির ওপর চাপাতে চাইছে। এই দেশগুলি নিজেদের লাইক মাইন্ডেড ডেভেলপিং কান্ট্রিস (LMDCs) বলে চিহ্নিত করেছে ও এই গ্রুপে নতুন করে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ইরান, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া। 

এই চুক্তিতে দূষণ নির্গমন হ্রাসের বিষয়ে যে সব কারণ ও লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল বিশ্বকে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই লক্ষ্য সফল হলে জলবায়ুর সবচেয়ে খারাপ প্রভাবগুলি এড়ানো যেতে পারে। তবে এই সম্মেলনে দেশগুলির বিরোধের মূল বিষয় হল, ২০২২ সালের শেষ নাগাদ COP27-এর জন্য তাদের নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো। 

খসড়া চুক্তির একটি অনুচ্ছেদ নিয়ে আপত্তি তুলে ভারতের পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব বলেন, জ্বালানির উৎস নিয়ে পরামর্শ দেওয়া রাষ্ট্রসংঘের কাজ নয়। ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলি কার্বন বরাদ্দের ন্যায্য ভাগ দাবি করে। এই দেশগুলি জীবাশ্ম জ্বালানির দায়িত্বশীল ব্যবহারে আগ্রহী। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমনকারী দেশ চিন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য ২০৬০ সালকে লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে। সম্মেলনে যোগ দিলেও এ বিষয়ে চিন নতুন আর কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি বলে জানা গিয়েছে। 

Rahul Gandhi-হিন্দুত্ব মানেই শিখ-মুসলিমকে পেটানো, বিজেপিকে কটাক্ষ রাহুল গান্ধীর

Terrorists Killed- সাফল্যের তালিকা, চলতি বছরে সেনা-সিআরপিএফের হাতে খতম ১৩৮ জঙ্গি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় কয়লা উৎপাদনকারী এই দেশটিতে জ্বালানির প্রধান উৎসও এই কয়লা। বিশ্বে ব্যবহৃত মোট কয়লার অর্ধেকেরও বেশি চিনেই ব্যবহৃত হয়। অধিবেশনে জি ৭৭ জোট এবং চিনের পাশে অবস্থান নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা জানিয়েছে, ‘সবার জন্য এক নীতি কোনো ভাল প্রস্তাব হতে পারে না।’ এর আগে এই মঞ্চে জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী 'এক্সিলারেটিং ক্লিন টেকনোলজি ইনোভেশন অ্যান্ড ডিপ্লয়মেন্ট অনুষ্ঠানে' বিশ্ব নেতাদের সম্বোধন করেন। তিনি বলেন শিল্প বিপ্লবের সময় জীবাশ্ম জ্বালানি অনেক দেশকেই ধনী হতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু এটি বিশ্বের পরিবেশকে দুষিত আর খারাপ করে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন শিল্প বিল্পব জীবাশ্ম জ্বালানির দ্বারা চালিত হয়েছিল। 

এই চুক্তির খসড়াকে অনেক বিরোধী দেশ "নতুন কার্বন ঔপনিবেশিকতা" বলে অভিহিত করেছে। তাদের দাবি ২০৫০ সালের নেট জিরো টার্গেট উন্নয়নশীল দেশগুলির উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেখানে উন্নত বিশ্বের দায়িত্বকে ছোট করে দেখিয়ে সাধারণ কিন্তু পার্থক্যমূলক দায়িত্বের (সিবিডিআর) নীতিগুলিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। ইউএন ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (UNFCCC) রিপোর্ট অনুযায়ী যে ছবি তুলে ধরা হয়েছে তারই বিরোধিতা করেছে ভারত, চিন সহ অন্যান্য ২২টি দেশ।