দলে থাকতে চাইলেও পদে আর থাকতে চান না বামফ্রন্টের দীর্ঘকালীন নেতা বিমান বসু। বর্তমানে পার্টির সমস্ত কমিটির কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন বর্ষীয়ান এই সিপিআইএম নেতা। এমন কি তিনি আর পলিটব্যুরো সদস্য হিসেবেও থাকতে চান না বলেই জানা গেছে।
এক সময় যে সকল দাপুটে বামফ্রন্ট নেতাদের (Left Front Leaders) সিদ্ধান্তই ছিল দলের শেষ কথা তাঁদের মধ্যে এক জন নেতা হলেন বিমান বসু (Biman Bose)। তবে শুধু বামফ্রন্ট দলে নয়, বিমান বসুর (Biman Bose) রাজনৈতিক জীবন নানা ছন্দে মোড়া। নিজের স্কুল জীবন থেকে রাজনৈতিক প্রচারে নামতে শুরু করেছিলেন তিনি। এরপর বামফ্রন্টের (Left Front) সঙ্গে যুক্ত পর তাঁর জীবনের ইতিহাসটা সকলেরই জানা। এখনও ছোট-বড় সিদ্ধান্তের ঘোষণার দায়িত্ব রয়েছে তাঁর কাঁধেই। সেই তিনিই আজ শর্তে চাইছেন দলীয় পদ থেকে। নিজের এই দায়িত্বভার অন্য কারোর উপর সপেঁ দিতে চাইছেন তিনি। বলতে বর্তমানে দলে থাকা বয়স্ক নেতাদের মধ্যে তিনি একজন। ৮১ বছরের ফ্রন্ট চেয়ারম্যান পার্টির একাধিক দায়িত্ব থেকে হয়তো সেই কারণেই এবার কিছুটা সরে আসতে চাইছেন এই বর্ষীয়ান নেতা। পাশাপাশি বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে দলের একজন অভিজ্ঞ এবং দক্ষ নেতা হিসাবে দলের ভালো-মন্দের কথাও ভাবতে চাইছেন তিনি।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে নতুনদের জায়গা কিছুটা ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে মনে করেছেন এই বামফ্রন্ট নেতা (Left Front Leader)। আলিমুদ্দিন সূত্রে জানা গেছে যে, বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান পদে (Left Front Chairman) আর থাকতে চান না বিমান বসু (Biman Bose)। এবার নিজের দায়িত্বভার কিছুটা হালকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বর্তমানে বয়সের কারণেই তিনি পার্টির সমস্ত পদ থেকে সরে আসতে চাইছেন বলে ও জানা গেছে। নিজের পর্দা থেকে সরে গিয়ে তিনি নতুন প্রজন্মের জন্য জায়গা উন্মুক্ত করে দিতে চান। শুধু তাই নয়, তিনি আর পলিটব্যুরো সদস্য হিসেবেও থাকতে চান না বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তবে পদ থেকে অব্যাহতি চাইলে ও এখনই দল ছাড়ার কথা ভাবছেন তিনি। দলের সদস্য থেকেই নিজের পদ ছেড়ে সরে আসার কথা জানিয়েছেন নেতা। অর্থাৎ, পদের ক্ষমতা আর চান না তিনি, নিছক সিপিআইএম (CPIM) দলের সদস্য হিসেবেই কাজ করতে চাইছেন বিমান বসু।
প্রসঙ্গত, এক সময় এক তরফা নিজেদের দাপটে থাকা এই দল আজ প্রায় বিলুপ্তপ্রায় এই বাংলার মাটিতে। ২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়ায় প্রকৃতপক্ষেই পরিবর্তন হয়েছিল ৩৪ বছরের বাম রাজত্বের। তৃণমূল ও কংগ্রেসের জোটের কাছে হার মানতে হয়েছিল সিপিআইএমের (CPIM) দীর্ঘদিনের ক্ষমতাকেও। সেই বছর বিরোধী দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করলেও অবশেষে ২০২১ সালে এসে বাম শূন্য বিধানসভা দেখতে হয়েছে বঙ্গবাসীকে। বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya) অবশ্য বলেছিলেন 'এই শূন্য থেকেই শুরু।' চলতি বছরে বিধানসভা নির্বাচনে একঝাঁক নতুন মুখকে সামনে তুলে ধরেছে সিপিআইএম (CPIM)।
আরও পড়ুন- Tripura- 'ত্রিপুরা থেকে ড্রাগ মাফিয়া পালিয়ে বাংলায় আশ্রয় নিয়েছে' বিস্ফোরক অভিযোগ বিপ্লব দেবের
আগে সিপিআইএমের (CPIM) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও (Sitaram Yechury) বারবার নতুনদের সুযোগ দেওয়ার কথা বলেছেন। সূত্রের খবর, ৭৫ ঊর্ধ্ব কোনও নেতাকেই আর সক্রিয়ভাবে পার্টির কাজে লাগানো হবে না বলেই স্পষ্ট করেন তিনি। সেই ঘটনার রেশ ধরেই এবার নিজ দায়িত্বপদ থেকে অব্যাহতির ইচ্ছা প্রকাশ করলেন সিপিআইএমের বর্ষীয়ান নেতা তথা ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু (Biman Bose)।
আরও পড়ুন- Dilip Ghosh-Babul Supriyo: 'বামেরা নয়, প্রকৃত সর্বহারা একজনই, বাবুল সুপ্রিয়', বললেন দিলীপ