আশিস মণ্ডল, বীরভূম: পুলিশি হেফাজতে নাবালকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিজেপি-এর বনধকে কেন্দ্র ফের নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল বীরভূমের মল্লারপুর। বাড়ি ঘিরে রাখার পর শেষপর্যন্ত মৃতের বাবা-মা, এমনকী মেসোকেও তুলে নিয়ে গেলেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা! পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, ওই কিশোরকে পুলিশই পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। গেরুয়াশিবিরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে না পারেন, সেকারণে বাবা-মাকে অপহরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: স্পেশাল ট্রেনে উঠতে বাধা, সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে জিআরপি-র সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হাওড়া স্টেশন
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার। সেদিন মল্লারপুরের বাউড়ি পাড়ার বাসিন্দা শুভ মেহেনা নামে এক কিশোরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। কেন? পুলিশের দাবি, মাঝে-মধ্যেই নেশা করত শুভ। এমনকী, নেশার টাকা জোগাড় করার জন্য চুরি করতেও পিছুপা হত না সে। বস্তুত, চুরির অভিযোগে ওইই দলিত কিশোরকে আটক করে পুলিশ। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, আদালতে না পাঠিয়ে চারদিন ধরে থানার লকআপে ছেলে বেধড়ক মারধর করে পুলিশ। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে, শুক্রবার ভোর রাতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। হাসপাতালে শুভ মেহেনাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এরপর আবার মৃতের বাবা-মা-কেও আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার দিনভর দফায় দফায় বিক্ষোভে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় মল্লারপুর। সন্ধের দিকে পরিবারের হাতে না দিয়ে মৃত কিশোরের দেহ সৎকারও করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: লকগেট ভেঙে হু হু করে বেরোচ্ছে জল, দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে ফের জলসঙ্কটের আশঙ্কা
পুলিশি হেফাজতের নাবালকের মৃত্যুর প্রতিবাদে শনিবার মল্লারপুরে বনধ ডেকেছিল বিজেপি। দলের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-এর নেতৃত্বে থানা ঘেরাও কর্মসূচিও ছিল। এসবে ফাঁকে আবার মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল গেরুয়াশিবিরের এক প্রতিনিধি দলের। মৃতের দিদির দাবি, শুক্রবার রাতভর বাড়ি চারিদিকে ঘোরাফেরা করছেন পুলিশ ও তৃণমূলকর্মীরা। বাড়ির বাইরে শুয়ে ছিলেন বাবা-মা ও মেসো। ভোরের দিকে কিছু লোক তাদের তুলে নিয়ে যায়। তাঁর আরও অভিযোগ, পুলিশি হেফাজতে ভাইকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। বিজেপি প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা না করতে দেওয়ার জন্য় পরিকল্পনামাফিক বাবা-মা ও মেসো অপহরণ করেছেন রাজ্যের শাসকদলের কর্মীরা। তদন্ত করলেই সব সামনে আসবে।