অনুব্রতকে ঘিরতে আরও কড়া হচ্ছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, রাজ্যের এই হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার সম্পর্কে তদন্ত কোন পথে চালিত হবে, কার্যত তা স্থির করতেই দিল্লির সদর দফতরে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে।
অনুব্রতকে ঘিরতে আরও কড়া হচ্ছে সিবিআই। বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে আরও বেশি তৎপর এখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মূলত গরুপাচার মামলা ও ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় ঝুলে রয়েছে অনুব্রত-র ভাগ্য। এদিকে তার মধ্যে এসএসকেম-এ দীর্ঘ সতেরো দিন কাটানোর পর এখনও অসুস্থ কেষ্ট। এই অবস্থায় তিনি সিবিআই একটি তলবেও উপস্থিত হতে পারেননি। তা নিয়ে রীতিমত মাথাব্যাথার কারণ তৈরি হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, রাজ্যের এই হেভিওয়েট তৃণমূল নেতার সম্পর্কে কোন পথে চালিত হবে, কার্যত তা স্থির করতেই দিল্লির লোধি রোডের সদর দফতরে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে।
সিবিআই তথ্য অনুসারে, সিবিআই-র শীর্ষ আধিকারিক ছাড়াও ভার্চুয়াল বৈঠকে এই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তদন্তের সঙ্গে যুক্ত ডিআইজি, এসপি পদ মর্যাদার অফিসারেরা। পাশাপাশি অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ছিলেন সিজিএইচএস ও এইমস-র চিকিৎসকেরা। সূত্রের খবর, একই সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের হাইপ্রোফাইল সাক্ষীর ক্ষেত্রে কীকী আইনি পদ্ধতি নেওয়া যেতে পারে,তা বোঝার জন্য সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা এই বৈঠকে ছিলেন।উল্লেখ্য, অনুব্রত মণ্ডলের বিদেশ যাত্রা আটকাতে তাঁর পাসপোর্ট, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, ইত্যাদি নথি চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। পাশাপাশি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁর কোনও পাসপোর্ট নেই। তবে তাঁর উত্তরে সন্তুষ্ট হননি তদন্তাকারী অফিসারেরা। উল্টে তাঁর তথ্য যাচাইয়ের জন্য আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন, দুর্ঘটনার মুখোমুখি অনুব্রত-র দেহরক্ষীর গাড়ি, ঘটনাস্থলেই ২ জনের মৃত্যু
আরও পড়ুন, ফের বসছে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প, আজই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী
প্রসঙ্গত, শুক্রবারই হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়েছিলেন তিনি। তারপর ২৪ ঘণ্টাও কাটতে না কাটতেই, তার আগেই হাজিরার জন্য সিবিআইয়ের তরফে নোটিস পাঠানো হয়। তবে এবারও সেই হাজিরা এড়িয়ে গেলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। গরু পাচার মামলার তদন্তে শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু, তিনি যেতে পারেননি। যাননি তাঁর আইনজীবীও। গরু পাচার মামলা ছাড়াও ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস মামলায় অনুব্রতকে তলব করা হয়েছে রবিবার দুপুরে। অবশ্য সেই হাজিরাও তিনি দেবেন না বলে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। সেই কথা জানিয়ে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয় বলে ইমেলের মাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন। পাশাপাশি হাজিরা দেওয়ার জন্য চার সপ্তাহ সময় চেয়ে নিয়েছেন তিনি।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, অণ্ড কোষের সমস্যার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। এদিকে ফের শোনা যাচ্ছে তিনি নাকি বেশ অসুস্থ। তবে কি ফের হাসপাতালে ভর্তি হবেন বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার তাঁর চিনার পার্কের বাড়িতে এসেছিলেন তার আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ। কেষ্টর ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে ওই আইনজীবী এদিন বলেন, শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ অনুব্রত মণ্ডল।তাই আবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। তবে কি আবার ভর্তি হবেন অনুব্রত। এই প্রশ্নের কোনও জবাব দেননি কেষ্টর আইনজীবী।