এক সময় বাড়ি চারিপাশে জমজমাট ছিল সর্বক্ষণ। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতারের পরেই তাঁর নিচুপট্টির বাড়ি এখন শুনশান। শুধুমাত্র রাজ্য পুলিশের কর্মী থেকে কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া কাউকেই লক্ষ্য করা যায়নি।
এক সময় বাড়ি চারিপাশে জমজমাট ছিল সর্বক্ষণ। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতারের পরেই তাঁর নিচুপট্টির বাড়ি এখন শুনশান। শুধুমাত্র রাজ্য পুলিশের কর্মী থেকে কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া কাউকেই লক্ষ্য করা যায়নি। রীতিমত নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে অনুব্রত মণ্ডলের বিশাল দোতলা নীল রঙের বাড়িতে। বাড়ির ছাদে একটি প্যান্ডেল তৈরি হয়েছিল। তাও খুলে নেওয়া হয়েছিল। যা আরও প্রকট হচ্ছে হাহাকার।
বৃহস্পতিবার সাত সকালে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে পৌঁছে যায় সিবিআইয়ের প্রতিনিধি দল। প্রথমেই কেন্দ্রীয় বাহিনী তারা বাড়ির চার পাশ ঘিরে ফেলে। এরপর অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির রাস্তার ধারের নিরাপত্তারক্ষীদের অফিসে বসেন সিবিআই আধিকারিকরা। খবর পেয়ে সেখানেই সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে কিছুটা সময় চান। এরপরেই বাড়ির ভিতর গিয়ে শিব ভক্ত অনুব্রত মণ্ডল স্নান সেরে পুজো করেন। তারপর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করে সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে বেরিয়ে যান। অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় তিল ধারনের জায়গা ছিল না সেখানে। কিন্তু শুক্রবার দেখা গেল সম্পূর্ণ অন্য ছবি। বাড়ির সামনে শুনশান। বাড়িতে রয়েছেন মেয়ে। নিচে নিরাপত্তারক্ষীরা এখনও রয়েছেন। বাড়ির কয়েকজন পরিচারিকা নিজেদের মত কাজ করছেন। কিন্তু তারা কোন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন দুপুরে বাড়িতে নবনির্মিত গাড়ি গ্যারেজে আমদরবার বসাতেন। তার আগে ঘণ্টাখানেক ধরে পুজো করতেন। গ্যারেজে সেখানে দলের নেতা কর্মী থেকে বিভিন্ন স্তরের মানুষজন সমস্যা নিয়ে আসতেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে সঙ্গে সঙ্গে সমাধানের চেষ্টা করতেন। মধ্যাহ্ন ভোজের পর দলীয় কার্যালয়ে বসতেন, নয়তো দলীয় কর্মসূচীতে যেতেন। ফিরে বাড়িতেই মধ্যরাত পর্যন্ত গল্পগুজব করতেন কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে। কিন্তু এখন এসব অতীত। তবে এদিন বেলার দিকে অনুব্রতর বাড়িতে ঢুকতে দেখা গিয়েছে বোলপুর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান শেখ ওমর। অনুব্রতর জন্মভিটে হাটসেরান্দি গ্রামের কয়েকজন বোলপুরের বাড়িতে আসেন। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, বাড়িতে রয়েছেন অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল। তিনি সর্বক্ষণ কান্নাকাটি করছেন। ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করছেন না। তবে নিকটআত্মীয়রা সুকন্যার কাছাকাছি থেকে বাবার অভাবপূরণ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিবেশী জানান, প্রতিদিন বেলা ১১ টা থেকে রাস্তায় ভিড় জমে যেত। এলাকার মানুষের চলাফেরা সমস্যা হত। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারত না। অবশ্য সেই সমস্যার কথা ভেবেই অফিসের পাশেই একটি জায়গা কিনে অতিথিদের বসার জায়গা বানিয়ে ফেলেছিলেন। আগামী সোমবার তার উদ্বোধন করার কথা ছিল। সেই সঙ্গে ওইদিন বিশাল যজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই মতো বাড়ির ছাদে বিশাল প্যান্ডেল করা হয়েছিল। সেই প্যান্ডেল এদিন খুলে ফেলা হয়। সেই সঙ্গে অতিথি আবাস উদ্বোধন অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
স্বাধীনতা দিবসের আগে কি জঙ্গিদের নাশকতার ছক? কলকাতায় ড্রোন উড়িয়ে ধৃত ২ বাংলাদেশী
সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় ইডি 'না', কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ রাজ্যের তিন মন্ত্রী
কেষ্ট'র পর এবার সিবিআইয়ের নজরে কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যবসায়ী, সন্দেহের তালিকায় রাজনীতিকরাও