
ঝালদায় তপন কান্দু খুনে তদন্ত শুরু করল সিবিআই। যদিও গতকয়েকদিনে ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনে রহস্য বেড়েছে বই কমেনি। সিবিআই তদন্ত শুরুর আগেই আবার একটি ভাইরাল অডিও অনেককেই বিপাকে ফেলেছে। যেখানে প্রায় হুমকির সুরে তপন কান্দুকে তৃণমূলে আসার জন্য বলা হয়েছে। রাজ্যের গঠন করা সিট-এ নির্দোষ ঝালদা থানার আইসি। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, কে তাহলে বুনেছে অপরাধের জাল। কে পেশাদার খুনিকে টাকা দিয়ে খুন করিয়েছে। তবে ঘটনার সঙ্গে পরপর কয়েকটি নাম উঠে আসছে। যদিও রাজ্য পুলিশের পাট চুকেছে। হাইকোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যেই ঝালদায় তপন কান্দু খুনে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই।
তদন্ত শুরু করল সিবিআই, গভীর রাত পর্যন্ত কেস ডায়েরি নিয়ে আলোচনা
ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের তদন্তে বুধবার রাতে রঞ্জন কীর্তনিয়ার নেতৃত্বে একটি দল সরাসরি রামপুরহাট থেকে ঝালদায় পৌঁছয়। সিবিআই-এর এই দলটি পুরুলিয়ায় পুলিশ সুপারের অফিসে যায়নি। সরাসরি ঝালদা থানায় গিয়ে সিটের আইও এবং ডিএসপি অরুণাভ ঘোষের সঙ্গে দেখা করে। জানা গিয়েছে, গভীর রাত পর্যন্ত কেস ডায়েরি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিবিআই-এর আরও একটি দল আসছে। এদিন গোটা দিনে খুনের লোকেশন থেকে শুরু করে তপন কান্দুর পরিবার এবং স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পারে। এদিকে এর মধ্যেই ঘটে গিয়েছে অঘটন। বুধবার এই কেসের সবচেয়ে বড় সাক্ষী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। নিরঞ্জন বৈষ্ণবের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলতে পারে সিবিআই।
আরও পড়ুন, কয়লাকাণ্ডে ইডি-র তলবকে চ্যালেঞ্জ সস্ত্রীক অভিষেকের, আগামী সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্টে শুনানি
ঘটনার দিন একাই বাইরে বেরিয়ে যান তপন কান্দু, দুষ্কৃতিরা এত তথ্য কোথা থেকে পেল ?
প্রসঙ্গত, পুরুলিয়ার ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়, রাঁচির একটি বেসরকারি হাসপাতলে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। মৃত্য়ু হয় কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর। এদিকে ত্রিশঙ্কু ঝালদা পুরসভায় কংগ্রেসকে সংখ্যালঘু করতেই শাসকদল হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো। ঘটনার দিন নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের নিয়ে সংবর্ধনা সভা করেছিল কংগ্রেস। সেখানে সস্ত্রীক যোগ দিয়েছিলেন কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু। সভা থেকে বিকেলে একাই বেরিয়ে যান। আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, দুষ্কৃতিরা এত তথ্য কোথা থেকে পেল। তাঁদের এই খুনের প্রস্তুতিতে কে সাহায্য করেছে। রাস্তায় আচমকাই তিন দুষ্কৃতি গুলি করে পালায়। প্রথমে গুরুতর জখম তপন কান্দুকে নিয়ে যাওয়া হয় ঝালদা মহাকুমা হাসপাতালে। সেখান থেকেই স্থানান্তরিত করা হয়, রাঁচির বেসরকারি হাসপাতালে। এরপরেই মৃত্যু হয় তার।
আরও পড়ুন, 'আনারুলের নির্দেশেই আগুন লাগানো হয়', বগটুইহত্যাকাণ্ডে দাবি সিবিআই-র
তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ, মৃত্যুর আগে মাথা নোয়াননি কাউন্সিলর
তপন কান্দু হত্যাকাণ্ডে আদালতের নির্দেশ পেয়ে সিবিআই তদন্তে নামার আগেই ভাইরাল হয়েছে একটি অডিও। যেখানে পুরুলিয়ার ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর সঙ্গে তৃণমূল কর্মীর নাম অমল কান্দুর কথোপকথন শুনতে পাওয়া গিয়েছে। অডিওতে শোনা যাচ্ছে, ওই তৃণমূল কর্মী কংগ্রেস কাউনন্সিলরকে রীতিমত হুমকির স্বরে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে বলছেন, 'তোমাকে তৃণমূলে আসতেই হবে।' অশ্রাব্য গালিগালাজও করা হয়েছে। তবে কোনও চাপের মুখে মাথা নোয়াতে রাজি হননি তপন কান্দু। পাশাপাশি তৃণমূলে আসার জন্য ঝালদা থানার আইসিরও হুমকি ফোন এসেছে, আগেই জানিয়েছেন তপন কান্দুর স্ত্রী। তাই রাজ্য পুলিশের চোখে নির্দোষ। সাময়িক বরখাস্ত হলেও আপাতত স্বস্তিতে আইসি। তবে সিবিআই-র কাছে তিনি কতটা ছাড়া পাবেন, এই নিয়ে জোর জল্পনা।