বিজেপির টিকিটে এবার পুরভোটে লড়াই করার কথা ছিল লিপির। কিন্তু, তাঁকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। অভিযোগ, ছল চাতুরী করে টিকিট না দেওয়ার জন্য লিপি নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর প্রতীক হল সূর্য।
রাজ্যে পুরনিগম নির্বাচনের (West Bengal Municipal Corporation Election 2022) দামামা বেজে গিয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি চন্দননগরের পুরনিগম নির্বাচন (Chandannagar Municipal Corporation Election 2022) হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। প্রথমে ২২ জানুয়ারি ভোট (Election) হওয়ার কথা ছিল এই কেন্দ্রে। কিন্তু, করোনার (Corona) জেরে তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে আসন সংখ্যা ৩৩। আর চন্দননগর পৌরনিগম নির্বাচনে মোট প্রার্থীর (Candidate) সংখ্যা ১১৩ জন। এখানে নির্দল প্রার্থী (independent Candidate) হিসেবে একজন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। সেই প্রার্থীর নাম লিপি শর্মা (Lipi Sharma)।
প্রতিশ্রুতি দিয়েও টিকিট দেয়নি বিজেপি
বিজেপির টিকিটে এবার পুরভোটে লড়াই করার কথা ছিল লিপির। কিন্তু, তাঁকে টিকিট দেয়নি বিজেপি (BJP)। অভিযোগ, ছল চাতুরী করে টিকিট না দেওয়ার জন্য চন্দননগর পুরনিগম নির্বাচনে লিপি নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর প্রতীক হল সূর্য। এই ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে নির্দল প্রার্থীর প্রতীক। বাড়ি বাড়ি ঘুরে নকল ইভিএম মেশিন দেখিয়ে বুথের স্লিপ বিলি করছেন তিনি। নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে খুবই খুশি লিপি। বলেন, "আমার মনে হয় নির্দল হয়ে দাঁড়ানো সব থেকে ভালো। কারণ এক্ষেত্রে কোনও দলের চাপ থাকে না। কোনও দলের কোনও মুখ নেই। পাড়ার সব দাদা, বউদিরা আমার পাশে রয়েছেন। আমি নির্দল হওয়া সত্ত্বও সবাই একজোট হয়ে কাজ করছি।"
আরও পড়ুন- পুরভোটে টিকিট পাননি, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করতে চান তৃণমূল নেতা
পরিবারের অনেকেই বিজেপি করেন
এদিকে লিপির দাদা বিজেপির কনভেনর ছিলেন। পরিবারের অনেকে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরও তিনি নির্দল হিসেবে লড়াই করছেন। এনিয়ে লিপির কথায়, "পরিবারের অনেকে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত কী বলবেন। আমি মনে করি একটা পরিবারে এক একজন এক একটি দল করতে পারেন। কিন্তু, আমার কোনও দল নেই, কোনও ঝান্ডা নেই। আর আমার মনে হয় আমরা যদি মনে করি একসঙ্গে কাজ করব, তার জন্য আমাদের কোনও দল বা ঝান্ডা লাগে না। একসঙ্গে যদি আমরা কাজ করব বলে মনে করি তাহলে করি।"
আরও পড়ুন- অসন্তোষ অব্যাহত, মমতার নির্দেশ না মেনে প্রার্থী হলে নেওয়া হবে কড়া ব্যবস্থা
জেতার বিষয়ে আশাবাদী লিপি
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ. পাশ করেছেন লিপি। এরপর ভোটে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু, অবসর সময় কীভাবে কাটান? লিপি জানান, "করার পর বাচ্চাদের পড়াই। আসলে অনেক বাচ্চাই স্কুলে যেতে পারে না, তাদের কোনও বই খাতা নেই। সেই সব বাচ্চাকে পড়াই। একসঙ্গে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ বাচ্চা পড়তে আসে। যদি কোনও বাচ্চার টাকার-পয়সার দরকার পড়ে তাদের সেভাবে সাহায্য করি। আসলে আমি এগুলো কোনও দলের মুখ দেখে করিনি। নিজের ভালো লাগে তাই করেছি। ওই সব বাবা মা আমার পাশে রয়েছেন।" জেতার বিষয়ে পুরোপুরি আশাবাসী লিপি। বলেন, "এখন আমরা সবার বাড়িতে যাচ্ছি, সবার সঙ্গে কথা বলছি, সবাই সমর্থন করছেন। এই ওয়ার্ডে জেতার বিষয়ে আমি ১০০ শতাংশ আশাবাদী।"
আরও পড়ুন- মমতার সব স্লোগানকে ছাপিয়ে গেল 'খেলা হবে', যোগী রাজ্যেও কী পাবে সাফল্য
কিন্তু, পুরসভা ভোটে বড় বড় নেতাদের নিয়ে গিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। আর সেখানে লিপির দলের কোনও মুখ নেই। এই নিয়ে লিপি বলেন, "বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনে সাধারণ মানুষ বড় নেতা ও ঝান্ডা দেখে ভোট দেন। আর এই নির্বাচনে লোকেরা সে সব দেখে ভোট দেন না। তাঁরা মানুষকে দেখে ভোট দেন। ওই ওয়ার্ডের সব মানুষ আমাদের পাশে রয়েছেন।"