কিছু জিজ্ঞেস করলেই লকআপে কান্নাকাটি, চিনা অনুপ্রবেশকারীকে নিয়ে বেশ সমস্য়ায় পুলিশ

  • বিপাকে পড়লেই কান্না-কাটি
  • নিজেকে এক সাধারণ মানুষ হিসাবে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা
  • বেশিরভাগ প্রশ্নেই মুখ বন্ধ করে থাকা
  • চিনা অনুপ্রবেশকারী হান জুলওয়েলকে এমনই সমস্যায় পুলিশ

Parna Sengupta | Published : Jun 16, 2021 7:43 AM IST / Updated: Jun 16 2021, 01:28 PM IST

বিপাকে পড়লেই কান্না-কাটি। নিজেকে এক সাধারণ মানুষ হিসাবে প্রতিপন্ন করার চেষ্টা। বেশিরভাগ প্রশ্নেই মুখ বন্ধ করে থাকা। আর বেশি চাপাচাপি করলেই কান্না না হলে ভাষা ঠিকমতো না বুঝতে পারার ভান। চিনা অনুপ্রবেশকারী হান জুলওয়েলকে নিয়ে এমনই সমস্যায় কালিয়াচক থানার পুলিশ। এখনও পর্যন্ত জেরায় খুব বেশি তথ্য দেয়নি হান। 

জেরার চাপ বাড়ালেই সে লকআপে কান্নাকাটি জুড়ে দিয়েছে। মালদহ জেলা পুলিশ সূত্রে এমনই খবর। ফলে চিনের এই অনুপ্রবেশকারী নাগরিককে নিয়ে বেজায় অসুবিধায় পড়ে জেলা পুলিশ। 

পুলিশ সূত্রে খবর এখনও পর্যন্ত ল্যাপটপের পাসওয়ার্ড বলেনি হান। সমানে বলে চলছে সে পাসওয়ার্ড ভুলে গিয়েছে। সাইবার বিশেষজ্ঞের কাছে ল্যাপটপ পাঠানোর একটা চিন্তা ভাবনা করেছিল মালদহ পুলিশ। কিন্তু, এসটিএফ তদন্তের ভার নিয়ে নেওয়ায় এখন জেলা পুলিশ আর সেই প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করেনি।

বিএসএফ এবং পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে হান-এর কাছ থেকে এমন কিছু নথি পেয়েছে- যেগুলি ভারতের মাওবাদ কার্যকলাপ নিয়ে। এমনকী পুলিশি জেরায় হান স্বীকার করেছে যে ভারতের মাওবাদী কার্যকলাপ নিয়ে সে পড়াশোনা করছিল এবং ভারতের মাওবাদীদের নিয়ে তার একটা সম্যক ধারনা রয়েছে। যদিও, ভারতের মাওবাদী কোনও লিঙ্কের সঙ্গে হান জড়িত কি না তার যথেষ্ট প্রমাণ এখনও বের করতে পারেনি পুলিশ। 

জেরায় নাকি হান জানিয়েছে, অতিমারির কারণে চিনাদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত গড়িমসি করছে। কিন্তু, তার একটি অতি জরুরি কাজ ভারতে পড়ে যাওয়ায় সে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের সিদ্ধান্ত নেয়। একজন শিক্ষিত, সুবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এমন বেআইনি অনুপ্রবেশের রাস্তা কেন নেবেন- তা বিচার বিশ্লেষণ করতে গিয়ে হানের দাবি করা গল্পে মোটেও ভরসা রাখেননি তদন্তকারী অফিসাররা। 

শহরে চালু হল মেট্রো পরিষেবা, কারা উঠতে পারবেন-জানাল রেল

Green fungus: এবার দেশে সবুজ ছত্রাকের হানা, করোনাজয়ীর শরীরে মিলল Green fungus

হান এখন পর্যন্ত জানিয়েছে, বাংলাদেশের কিছু দালালের হাত ধরে সে মিল্ক সুলতানপুরের সীমান্তে পৌঁছয়। এই সীমান্তে পৌঁছানোর আগে সে মহদিপুর সীমান্তের কাছে মরা পাগলা নদী হেঁটে পার হয়। এর জন্য নদীতে হাঁটু জল পেরিয়েই সে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। জেরায় নাকি হান আরও জানিয়েছে যে, এই মরা পাগলা নদীর উপরে বাংলাদেশ তাদের ভূখণ্ডে একটা ব্রিজ বানিয়েছে। কিন্তু হান সেই ব্রিজে না উঠে তার ডান পাশ দিয়ে নদীর জলে নেমে পড়ে। 

এরপর নদী পেরিয়ে সে মিল্ক সুলতানপুরে থাকা ভারতীয় ভূখণ্ডে এক জনবসতির মধ্যে প্রবেশ করে। জনবসতিটি সীমান্তে ভারতের দেওয়া কাঁটাতারের বাইরে। ফলে, কাঁটাতার দেওয়া সীমান্তের একস্থানে মিল্ক সুলতানপুরের মানুষের পারাপারের জন্য একটি স্থানে বাঁশের চেকপোস্ট করা রয়েছে। সেখানে স্থানীয় মানুষদের যথাযথ পরিচয় দিয়ে সেই চেকপোস্ট পেরিয়ে মূল ভূখণ্ডে আসতে হয়। 

আঙ্কলজি, দিল্লি থেকে দয়া করে ফিরবেন না, ধনকড়কে তীব্র কটাক্ষ মহুয়া মৈত্রর

হান জানিয়েছে, সে যখন ওই চেকপোস্টের সামনে হাজির হয় তখন সেখানে থাকা বিএসএফ জওয়ান তাকে জেরা করতে থাকে। এই জেরায় সে কোনও সঠিক কাগজ দেখাতে পারেনি। আর সেখান থেকেই বিএসএফ জওয়ানরা তাদের উর্ধ্বতন অফিসারদের ডেকে আনে এবং হানকে গ্রেফতার করা হয়। 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, হান মালদহে অনুপ্রবেশ করেছিল শুধুমাত্র নির্বিঘ্নে দেশের অন্য কোনও রাজ্যে পাড়ি দিতে। মালদহের বুকে তার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। সম্ভবত হায়দরাবাদে হয়তো যাওয়ার চেষ্টা করত হান। হায়দরাবাদের সঙ্গে হানের একটা যোগাযোগের সূত্র বের করা গিয়েছে। যদিও, হান এই নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।

Share this article
click me!