নন্দীগ্রামের হটসিটের লড়াইতে তিনি জয়ী হয়েছেন। কিন্তু তারপরেও যে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে তিনি লড়াইয়ে ইতি টানেছেন না তা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী ঘূর্ণঝড় যশের (Cyclone Yaas)এর পর্যালোচনা বৈঠকের পর। পূর্ব নির্ধারিত এই বৈঠক এড়িয়ে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলাইকুন্ডার বায়ু সেনার বিমান ঘাঁটিতে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলে আর রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত রিপোর্ট তুলে দিয়েই তিনি সেখান থেকে বেরিয়া যান। আর প্রধানমন্ত্রীর পর্যালোচনা বৈঠকের পর এই বিষয়টি নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী তীব্র সমালোচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পর্যালোচনা বৈঠকের পরেই একের পর এক টুইট করে শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নিশানা করেন। তিনি বলেন এই দিনটি ভারতের দীর্ঘদিনের ফেডারেলিজমের পক্ষে একটি অন্ধকার দিন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠকে উপস্থিত না হওয়াটা কোনও সাধারণ বিষয় নয়। শুভেন্দু অধিকারী পরের টুইটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় আরও একবার দেখিয়েছেন তিনি রাজ্যের মানুষের দুঃখ আর ভোগান্তির প্রতি কতটা অসংবেদনশীল।
এখানেই থেকে থাকেননি শুভেন্দু অধিকারী। ইংরেজিতে একের পর এক টুইট করে তিনি প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক এড়িয়ে যাওয়ার জন্য কার্যত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিশানা করেছেন। তিনি বলেছেন, এনডিএর বাইরে থাকা দলগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁর সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসেছেন। রাজ্যের বন্যা, ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করেছেন। সেই বার্তায় শুভেন্দু অধিকারী জয়লতিতা, পিনারাই বিজয়ন, ওমর আব্দুল্লাহ, নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে বৈঠকের ছবিও পোস্ট করেছেন। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, দেশের কোনও মুখ্যমন্ত্রী এজাতীয় আচরণ করেননি। আর একই সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন দিদির প্রশাসন আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে। ত্রাণ লুটপাট হয়েছিল বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তিনি আরও বলেন বাংলা যখন সংস্যায় পড়ে তখন দিদির প্রশাসন অনুপস্থিত থাকে। তিনি আরও বলেন দিদি আজ যা আচরণ করলেন তা সংবিধানের ওপর তাঁর সম্মান নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এটা রাজনীতি করার সময় নয়। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সময় বলেও মন্তব্য করেন শুভেন্দু অধিকারী ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে রাজ্য বিজেপি।
যদিও বৃহস্পতিবার রাত থেকেই এই কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা পর্যালোচনা বৈঠক নিয়ে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল। বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিত থাকবেন এটা জানার পর থেকেই বৈঠকে উপস্থিত হতে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মত দিল্লিকে পুরো বিষয়টি জানান হয়েছিল। এদিন সকাল থেকেই রাজ্যের প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি ক্ষতিয়ে দেখতে ৬টি বিধানসভা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। হিঙ্গলগঞ্জেই মমতা জানিয়ে দিয়েছিলেন একাধিক কর্মসূচি থাকায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। তবে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির হিসেব তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে।