আলোর উৎসবেও অন্ধকার জিয়াগঞ্জের বন্ধুপ্রকাশের বাড়ি, স্মৃতি হাতরে হা-হুতাশ মায়ের

  • সারা দেশ জুড়ে আলোর উৎসব
  • জিয়াগঞ্জে বন্ধুপ্রকাশের বাড়িতে কেবলই অন্ধকার
  • দীপাবলিতেও প্রদীপ জ্বলল না মৃত শিক্ষকের বাড়িতে
  • সারা পাড়া জুড়ে থমথমে আতঙ্কের পরিবেশ

 

Asianet News Bangla | Published : Oct 29, 2019 11:16 AM IST / Updated: Oct 29 2019, 04:48 PM IST

সারা দেশ জুড়ে আলোর উৎসব। দীপাবলিতে যখন সবাই মাতোয়ারা তখন মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে বন্ধুপ্রকাশের বাড়িতে কেবলই অন্ধাকারের হাহাকার। দীপাবলিতেও প্রদীপ জ্বলল না তাঁর বাড়িতে।

সারা পাড়া জুড়ে থমথমে আতঙ্কের পরিবেশ। অজানা ভয় যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে সকলকে। সবাই যেন দরজা জানালা বন্ধ করে নিজেদের বাড়িতে আটকে রাখতেই বেশি পছন্দ করছেন। স্মৃতি এখনও তাজা। এলাকার এক  প্রবীণ নাগরিক জানালেন,বিশেষ কিছু আর বলার ইচ্ছে নেই। এই বাড়িতেই গত বছরও দীপাবলি উৎসবে আলোর রৌশনাইতে ভেসে যেত। বাবার সঙ্গে ছাদ থেকে হরেক  টুনি দিয়ে বাড়ি সাজাত বন্ধুপ্রকাশ ও তাঁর ছেলে। আজ সব শেষ। ওই বাড়িই অথচ ওই বাড়ি এখন অন্ধকারময় , আলোর উৎসবে জ্বলেনি একটিও প্রদীপও । তার বদলে বাড়িটিকে দড়ি দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। বহিরাগত কেউ বাড়ির সামনে বেশিক্ষণ দাঁড়ালেই পাহারায় থাকা পুলিশের কেউ এসে মুহুর্তে তাকে সরিয়ে দিচ্ছেন। এমনকী যে কোনও রকমের প্রবেশ আটকাতে ওই পাল বাড়ি চত্বরে পালা করে চলছে পুলিশের অতন্দ্র প্রহরা।

দশমীর দুপুরে এই বাড়িতেই সপরিবারে খুন হন শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল । আলোর উৎসবেও ওই অন্ধকার বাড়িটিকে ঘিরে রহস্যের জাল এখনও বুনে চলেছেন জিয়াগঞ্জের বাসিন্দারা । গত ৮ অক্টোবর অর্থাৎ দশমীর দুপুরে জিয়াগঞ্জ থানার লেবুবাগান এলাকায় খুন হন শিক্ষক বন্ধু প্রকাশ পাল। খুনির  হাত  থেকে রেহাই পাননি তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী বিউটি পাল ও  ছ বছরের ছেলে অঙ্গন । তখন থেকেই ওই বাড়িটি পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। তালা বন্ধ বাড়ি। ফলে রহস্যে ঘেরা অন্ধকার বাড়িতে উৎসবের আলো এখন শোক আর সন্তাপে মুহ্যমান । 

এই বিষয়ে জিয়াগঞ্জের এক তরুণ বাসিন্দা নিমাই সরকার বলেন , দুর্গাপুজোর দশমীর  দিন থেকেই এলাকাকে শোক গ্রাস করেছে । দীপাবলিতেও তার রেশ কাটেনি । ওই শোক ভুলে আলোর উৎসবে মেতে উঠতে পারেননি লেবু বাগানের বাসিন্দারা । জানা গিয়েছে, শিক্ষক বন্ধু প্রকাশের বাড়ির  উল্টো দিকে সাহাপুর গ্রামে কালীর থান রয়েছে। সেখেনে তার উদ্যোগেই এতদিন কালী পুজো হয়ে এসেছে । গত বছরও সপরিবারে জিয়াগঞ্জ থেকে সাহাপুর গ্রামে এসে ওই শিক্ষক পুজার আয়োজন করেন । নিজের বাড়ি তো বটেই এলাকা সাজিয়ে দিয়েছিলেন রঙিন সব আলোক মালায় । এই ব্যাপারে বন্ধু প্রকাশের ছোট বেলার বন্ধু  টুটু মিত্র বলেন , ও কালী পুজার দিনে মোমবাতি আর মাটির প্রদীপ জ্বালাতে খুব ভাল বাসত । আবার ওর উদ্যোগেই পাড়াতে পুজো হত । নিয়ম মেনে এবারও পাড়াতে পুজো হচ্ছে ঠিকই ,কিন্তু সেখানে নেই কোনও আড়ম্বর।  জ্বালানো হয়নি মোমবাতির আলোও ।  এদিকে মৃতের মা মায়ারানি পাল সোমবার বাড়ির চাতালে বসে হা-হুতাশ করে বলেন , আমার জীবনের সব আলো শেষ। আর প্রদীপ বলে কিছুই থাকল না,সব নিষ্প্রদীপ।
 

Share this article
click me!