জমির জল নিকাশের নামে যে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের জন্য প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল তাও উধাও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় কৃষকরা।
কাজ হয়নি এক চুলও। কিন্তু, তা সত্ত্বেও ১০০ দিনের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে জমিতে লাগানো হয়েছে ফলক। স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফেই সেই ফলক লাগানো হয়। এদিকে জলের মধ্যে ডুবে রয়েছে শতাধিক বিঘা চাষের জমি। যদিও সেদিকে প্রশাসনের কোনও নজর নেই বলে অভিযোগ। এমনকী, জমির জল নিকাশের নামে যে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের জন্য প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল তাও উধাও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় কৃষকরা।
মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের কুশিধা গ্রাম পঞ্চায়েতের পশ্চিম পাড়া এলাকা। ওই এলাকার বেশিরভাগ পরিবারই পেশায় কৃষক। প্রত্যেকেই ফসলের উপর নির্ভর করে জীবন যাপন করেন। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে জমিতে জলের তলায় থাকায় সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা। জমিতে কোনও ফসলের চাষ করতে পারছেন না। ফলে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। এই পরিস্থিতি বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন- দীর্ঘদিন বন্ধ আইসোলেশন ওয়ার্ড, দায়িত্ব নিয়েই খোলার নির্দেশ সিএমওএইচ-এর
পশ্চিম পাড়া এলাকা দিয়ে বিস্তীর্ণ চাষের জমির পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে সরু খাল। এলাকার জল নিকাশের কাজে লাগে এই খাল। তবে এই খাল দিয়ে জলের সঙ্গে নোংরা আবর্জনাও চলে যায়। সেই খাল সংস্কার না হওয়ায় বিভিন্ন অংশ বুঁজে গিয়েছে। জল বের হওয়ার কোনও পথ নেই। বর্ষায় সেই জল উপচে গিয়ে ভাসিয়েছে একরের পর একর জমি। দেখে মনে হবে ওই এলাকায় নদী তৈরি হয়ে গিয়েছে। গ্রামের লোকজন নিজেদের চেষ্টায় সেই জল বের করেছেন। পাশাপাশি জল নিকাশের কিছু ব্যবস্থা করলেও বিশেষ কিছু সুবিধা হয়নি। বৃষ্টির সেই জল শীতেও তিন একর চাষের জমিকে নদী বানিয়ে রেখেছে।
আরও পড়ুন- মেয়ের বিয়ের চিন্তায় ঘুম উড়েছিল, অসহায় বৃদ্ধার পাশে তৃণমূল নেতা
অন্যদিকে কুশিধা গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ওই খাল সংস্কারের জন্য প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সংস্কারের কোনও কাজ না করেই সেই টাকা উধাও হয়ে যায় বলে অভিযোগ কৃষকদের। কাজ না করলেও পঞ্চায়েতের তরফে সেই জলা জমিতেই ফলক তৈরি করে সেই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরা হয়েছে। এদিকে দিনের পর দিন জমি জলে ডুবে থাকায় বন্ধ চাষের কাজ। তার জেরে বন্ধ রয়েছে রোজগার। সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা। বহুবার পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের কাছে দরবার করেও কোনও ফল হয়নি বলে অভিযোগ। তাই বাধ্য হয়েই বিক্ষোভ শুরু দেখান এলাকার কৃষকরা।
আরও পড়ুন- 'মমতাই প্রথম বিরোধিতা করেছিলেন', নোটবাতিলের বর্ষপূর্তিতে মনে করালেন ডেরেক
তবে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে কুশিদা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মহম্মদ নূরআজম বলেন, "স্থানীয়রাই আর্বজনা ফেলে খাল বুজিয়ে দিয়েছেন। খাল সংস্কার হয়েছে। অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি সঠিক নয়। তবে সমস্যা আছে। ৫০/৬০ বিঘা জমি জলে ডুবে আছে। জল কমলেই ওই নালা আবারও সংস্কার করা হবে।" হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক বিডিও অনির্বাণ বসু জানিয়েছেন, "আপনাদের থেকে শুনতে পেরেছি, খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি দেখা হবে যদি এরকম কোনও সমস্যা থাকে তাহলে সমস্যার সমাধান খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে।"