আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। তার মধ্যেই স্বামী অন্য বিয়ে করেছিলেন বলে অভিযোগ। এমন পরিস্থিতিতেই দীর্ঘদিন পর কলকাতা থেকে বর্ধমানগামী বাসে দেখা হয়ে গেল দম্পতির। আর তার পরে দাম্পত্য কলহে চলন্ত বাসেই তুলকালাম কাণ্ড। দু' পক্ষের বচসা গড়াল হাতাহাতিতে। পরে বর্ধমানে পৌঁছে স্বামীকে পোস্টে বেঁধে রাখলেন স্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে ওই যুবককে উদ্ধার করে।
শনিবার রাতে এই ঘটনা ঘিরেই জোর চাঞ্চল্য ছড়ায় বর্ধমান শহরের উল্লাস বাস স্ট্যান্ডে। যে যুবককে মারধর করা হয়, তাঁর নাম অনিরুদ্ধ কর। অনিরুদ্ধ বাবুর স্ত্রী মিতা করের অভিযোগ, পাঁচ বছর আগে তাঁকে এবং তাঁর মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন তাঁর স্বামী অনিরুদ্ধ। এর পরে অনিরুদ্ধ অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করেন বলেও অভিযোগ তাঁর।
মিতাদেবীর দাবি অনুযায়ী, প্রায় তিন বছর প্রেম করার পরে ২০০৮ সালে বিয়ে হয় তাঁদের। তাঁদের একটি কন্যাসন্তানও হয়। অভিযোগ, ২০১৪ সালে মারধর করে তাঁকে এবং তাঁর চার বছরের মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন অনিরুদ্ধ। এর পরে তাঁর স্বামীই বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেন বলে অভিযোগ মিতাদেবীর। তাঁর মেয়েও অসুস্থ বলে জানিয়েছেন মিতাদেবী। অনিন্দ্যবাবু তাঁকে কোনওরকম খরচও দেন না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। যদিও সব অভিযোগই খারিজ করেছেন স্বামী অনিন্দ্য কর।
আরও পড়ুন- পাঁচ বছর পর দেখা, স্বামী-স্ত্রীর মারামারিতে বর্ধমানগামী বাসে তুলকালাম, দেখুন ভিডিও
দাম্পত্য কলহের কারণে প্রায় পাঁচ বছর দু' পক্ষের দেখা সাক্ষাৎ প্রায় ছিল না। অনিন্দ্যবাবু থানাতেও হাজিরা দিচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ তাঁর স্ত্রীর। এই অবস্থায় শনিবার কলকাতা থেকে বর্ধমানগামী একটি সরকারি বাসে মিতার সঙ্গে দেখা হয় অনিরুদ্ধর। এর পরে বাসের মধ্যেই স্বামী- স্ত্রীর সঙ্গে কলহ শুরু হয়। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মধ্যেই বাস থেকে নেমে যাওয়ার চেষ্টা করেন অনিরুদ্ধ। তখন তাঁকে বাধা দেন মিতা এবং তাঁর দাদা। দু' পক্ষে হাতাহাতিও হয়। অনিন্দ্য এবং মিতা, দু' জনেই পরস্পরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনেছেন।
বর্ধমানে বাস পৌঁছনোর পরেও অনিন্দ্যকে ছাড়েননি মিতাদেবী ও তাঁর দাদা। উল্লাস বাসস্ট্যান্ড চত্বরে একটি ল্যাম্প পোস্টের সঙ্গে বেল্ট দিয়ে বেঁধে রাখা হয় অনিন্দ্যকে। ততক্ষণে দাম্পত্য কলহ দেখতে বাস স্ট্যান্ড চত্বরে কয়েকশো মানুষের ভিড় জমে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অনিন্দ্য কর নামে ওই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় কোনওপক্ষই থানায় আলাদা করে অভিযোগ দায়ের করেনি।