কাটমানি কাণ্ডে এতদিন বিক্ষোভের মুখে পড়ছিলেন তৃণমূলের নিচুতলার নেতারা। অনেক ক্ষেত্রেই বিক্ষোভের পিছনে বিজেপি-র সন্ত্রাস রয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগও তুলছিল শাসক দল। এবার সরাসরি রাজ্যে মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাছে কাটমানি সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে নোটিশ পাঠাল কলকাতা হাইকোর্ট। মন্ত্রী এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ কাউন্সলিরের বিরুদ্ধে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে বিপুল পরিমাণ টাকা আদায় করার অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন দুই ব্যবসায়ী। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ এক কাউন্সিলরকে চার সপ্তাহের মধ্যে নিজেদের বক্তব্য হলফনামা আকারে জমা করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
কাটমানি বিতর্ক শুরু হওয়ার পরে এই প্রথম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার প্রথমসারির কোনও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে এল। তাও আবার হাইকোর্টের নোটিশের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন- 'মমতার ঘরেই সব কাট মানি আছে', মুখ্যমন্ত্রীকে বেনজির আক্রমণ মুকুলের, দেখুন ভিডিও
একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের খবর অনুযায়ী, রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের এজলাসে মামলা দায়ের করেছেন দুই ব্যবসায়ী সন্দীপ এবং পঙ্কজ আগরওয়াল। তাঁদের অভিযোগ, ২০১৭ সালে আসানসোলে একটি নার্সিং হোম খোলার জন্য সরকারি স্তরে প্রস্তাব জমা দেন তাঁরা। এর পরেই সেই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার নামে তাঁদের সল্টলেকের ওই কাউন্সিলরের অফিসে ডেকে পাঠানো হয়। অভিযোগ, সেখানে রীতিমতো বন্দুক দেখিয়ে হুমকি দিয়ে ব্যবসায়ীদের থেকে তিরিশ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়।
বাধ্য হয়ে তখনই তাঁরা চার লক্ষ টাকা দেন বলে হলফনামায় দাবি করেছেন দুই অভিযোগকারী। এর পরে আরও ১৬ লক্ষ টাকা দিতে হয়ে তাঁদের। অভিযোগ, দুই ব্যবসায়ী বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলেও কোনও রকম সাহায্য পাননি। তাই হাইকোর্টে মামলা করে ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন দুই ব্যবসায়ী। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত অবশ্য আদালতে দাবি করেন, কোন সংস্থা তদন্ত করবে তা বাছার অধিকার আবেদনকারীদের থাকতে পারে না।
যদিও সব অভিযোগই খারিজ করে দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর পাল্টা দাবি, অভিযোগকারী দুই ব্যক্তি আসলে বিজেপি কর্মী। এক বিজেপি নেতার কথাতেই তাঁরা মামলা দায়ের করেছেন। ওই দু' জনের বিরুদ্ধেই পুলিশের কাছে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে বলে পাল্টা দাবি করেছেন মন্ত্রী। অভিযোগকারী দুই ব্যবসায়ীর অবশ্য দাবি, তোলাবাজির অভিযোগ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হওয়ার পরেই তাঁদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।