বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ৷ অতি বৃষ্টির ফলে ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে ৷ দু'দিন ধরেই ঘাটালে থাকা শিলাবতী, ঝুমি নদী ও কেঠিয়া খালের জলস্তর বাড়তে শুরু করেছিল। এর ফলে সেই জল জনবসতির মধ্যে প্রবেশ করতে শুরু করে।
এসকে হেনা, ঘাটাল- পশ্চিম মেদিনীপুরে (West Medinipur) গত তিনমাসে এই নিয়ে চতুর্থবার বন্যা পরিস্থিতির (Flood Situation) সৃষ্টি হয়েছে ৷ শুক্রবার ভোরে চন্দ্রকোনাতে নতুন করে শিলাবতী নদীর (Shilabati River) বাঁধ ভেঙে যায়। ফলে নতুন করে ১২টির বেশি গ্রাম প্লাবিত (Flooded)। ঘাটাল মহকুমা জুড়ে শিলাবতী, ঝুমি নদীর জলস্ফীতির কারণে এলাকায় পরিস্থিতির অবনতি হতে শুরু করেছে। ঘাটাল পৌরসভা এলাকায় বাড়ির সামনে জলে ডুবে ৬ বছরের এক নাবালকের মৃত্যু হয়েছে। মনসুকাতে দীর্ঘদিন জলে ডুবে থেকে একটি বাড়ি হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে।
আরও পড়ুন- টানা ভারী বৃষ্টি, বন্যা পরিস্থিতি পুরুলিয়া জেলার একাধিক ব্লকে, দেখুন ছবি
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ৷ অতি বৃষ্টির ফলে ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে ৷ দু'দিন ধরেই ঘাটালে থাকা শিলাবতী, ঝুমি নদী ও কেঠিয়া খালের জলস্তর বাড়তে শুরু করেছিল। এর ফলে সেই জল জনবসতির মধ্যে প্রবেশ করতে শুরু করে। ফলে ধীরে ধীরে এলাকার আরও অবনতি হচ্ছিল। শুক্রবার ভোরে চন্দ্রকোনার খামারবেড়া গ্রামে শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে নতুন করে ১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কয়েকদিন আগে শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে এই এলাকা প্লাবিত হয়েছিল। সেই সময় দ্রুত সেই বাঁধ বাঁধার কাজ শুরু করেছিল সেচ দফতর। আবারও সেই বাঁধ ভাঙায় সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন- 'ম্যান মেড বন্যা', জল ছাড়া নিয়ে DVC-কে নিশানা, শনিবার বন্যা দুর্গতদের কাছে যাচ্ছেন মমতা
ঘাটাল পৌরসভা এলাকার সব ওয়ার্ডেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার সকালে ঘাটালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচ বছর বয়সী এক নাবালক বাড়ির সামনেই জলে ডুবে যায়। এর জেরে তার মৃত্যু হয়েছে। মৃতের নাম সৌম্যদীপ চালক। তার বাবা শ্রীহরি চালক পানীয় জল আনতে বেরিয়ে ছিলেন। মায়ের অলক্ষ্যেই সে বাড়ির সামনে বেরিয়ে গিয়েছিল। আর সেখানেই জলে ডুবে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন- বিপদসীমার ওপরে নদীর জল, প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম, বন্যা পরিস্থিতি পূর্ব বর্ধমানে
ঘাটাল মহকুমার একাধিক জায়গায় গ্রামীণ সড়ক জলের তলাতে ডুবে গিয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়েছে যোগাযোগ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। পুনরায় গ্রামবাসীদের উদ্ধার করে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে রাখা শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকালে ঘাটালের মনসুকা এলাকায় জলে ডুবে থাকা একটি পাকার বাড়ি ভেঙে (House Collapsed) পড়েছে। তবে সেই বাড়িতে ওই সময় কেউ না থাকায় বড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
মেদিনীপুর সদর ব্লকে কংসাবতী নদীর পাড়ে ধ্বস নামার কারণে শুক্রবার সকাল থেকে বহু চাষ জমিতে নদীর জল প্রবেশ করতে শুরু করেছে। এর ফলে ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যার জেরে হতাশ কৃষকরা ৷ এছাড়াও জেলার কেশপুর, সবং, পিংলা ব্লকও প্লাবিত। শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় বন্যা দুর্গতের সংখ্যা সাড়ে ৭ লক্ষ। প্রায় ৮৮ হাজার বাড়ি নষ্ট হয়েছে, মৃত্য়ু হয়েছে ২১ জনের। জেলায় ১৫১টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। প্রায় ৯ হাজার মানুষ এই শিবিরগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন।