মাটির বাড়িগুলি ভেঙে পড়ার ফলে একাধিক গবাদি পশু থেকে শুরু করে বাড়ির আসবাবপত্র সব জলে ভেসে গিয়েছে। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে যান পঞ্চায়েতের সদস্য থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্তারা।
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির জেরে এখনও জলমগ্ন দক্ষিণবঙ্গের একাধিক এলাকা। হাঁটুজল রয়েছে একাধিক গ্রামে। চাষের জমিও রয়েছে জলের তলায়। ভেঙে পড়েছে একাধিক বাড়ি। বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে মুর্শিদাবাদেও। জল বাড়তে থাকায় সেখানে ব্যাহত হয়েছে নিকাশি ব্যবস্থা। ফলে গ্রামের মধ্য়ে ঢুকেছে জল। চোখের সামনেই ভেঙে পড়ে একাধিক মাটির বাড়ি। জলে তলিয়ে গিয়েছে ঘরের আসবাব ও গৃহপালিত পশুরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী নিম গ্রাম এলাকায়।
ওই মাটির বাড়িগুলি ভেঙে পড়ার ফলে একাধিক গবাদি পশু থেকে শুরু করে বাড়ির আসবাবপত্র সব জলে ভেসে গিয়েছে। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে যান পঞ্চায়েতের সদস্য থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্তারা। এই ব্যাপারে পঞ্চায়েত প্রধান সুবর্ণ কুমার হালদার বলেন, "প্রাথমিকভাবে ওই পরিবারগুলিকে ত্রিপল ও কিছু ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ করতে বিডিও-র কাছে আর্জি জানানো হবে।"
স্থানীয়দের অভিযোগ, ক্রমশ বাড়তে থাকা বন্যার জলের প্রভাবে এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এমনকী, বহু বছর ধরে এলাকায় কোনও ধরনের নিকাশের ব্যবস্থা না থাকায় পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করেছে। ওই এলাকার বেশিরভাগ বাড়ি মাটির। আর তার ছাউনি টিনের। স্বাভাবিকভাবে ভারী বৃষ্টি হলেই এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন- ঝাড়গ্রামে ঐতিহ্যবাহী 'পাঞ্চি' শাড়ি পরে আদিবাসী নৃত্যের ছন্দে ভাসলেন মমতা
আরও পড়ুন- শহরে প্রথম গ্যাসচালিত বাসের যাত্রা শুরু, নিজেই বাস চালালেন ফিরহাদ
বাড়ি ভেঙে পড়েছে জামিরুল শেখ নামে এক বাসিন্দার। বিকট আওয়াজ করে তাঁর বাড়ি ভেঙে পড়ে। পরিযায়ী শ্রমিক জামিরুল লকডাউনের ফলে কাজ হারিয়ে এখন বাড়িতেই। ইতিমধ্যে ৪৭ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছাগল ও ভেড়া কিনেছিলেন। কিন্তু, বাড়ি ভেঙে মাটি চাপা পড়ে মোট ৮টি ছাগল ও ভেড়ার মৃত্যু হয়। এই বিষয়ে স্থানীয় সাবের আলি বলেন, "বাড়ি ভেঙে পড়ার আওয়াজ শুনে আমরা ছুটে আসি। যে অংশ ভেঙে পড়েছে তার বিপরিত দিকে পরিবারের সদস্যরা শুয়ে ছিল। বরাতজোরে তারা প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। না হলে বড়সড় ঘটনা ঘটে যেতে পারত।"
আরও পড়ুন- অভিষেকের সঙ্গে মিটিং করে সত্যি কি শাস্তির মুখে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, কী বলছে বিজেপি
প্রাণে বেঁচে জামিরুলের দাবি, "কাজ হারিয়ে আমি বাড়িতে বসে আছি। এখন সরকারের কাছে আবেদন আমার ঋণ মুকুব করে দেওয়া হোক এবং আমার পরিবার নিয়ে থাকার জন্য গৃহ নির্মাণের ব্যবস্থা করুক পঞ্চায়েত।" অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা, আকবর আলি বলেন, "এইভাবে যদি দীর্ঘদিন চলতে থাকে তাহলে পুরো গ্রাম ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত প্রশাসনের।"