শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে পুরুলিয়ার ঝালদা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণ প্রকল্প রূপায়নের জন্য সচেতনতা শিবির এবং শিক্ষক সম্মান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।
শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন ব্লক সহ সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি, জেলা পরিষদ সদস্য থেকে অঞ্চল সভাপতিরা। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরই বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে পুরুলিয়ার ঝালদা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণ প্রকল্প রূপায়নের জন্য সচেতনতা শিবির এবং শিক্ষক সম্মান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। ঝালদা কো অপারেটিভ লজের এই অনুষ্ঠানে ঝালদা ব্লক এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু, মুহূর্তেই শিক্ষক দিবস অনুষ্ঠান এবং সচেতনতা শিবির তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় সভার রূপ নেয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়া শুরু হতেই জেলা পরিষদের সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিরা বাগমুন্ডি বিধানসভার বিধায়ক সুশান্ত মাহাত এবং ঝালদা ১ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অলোক চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন।
শিবিরের সরকারি সুযোগ সুবিধার বিষয়ে আলোচনার থেকে দলীয় কোন্দল নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিতে থাকেন কর্মীরা। এই সভায় দলীয় কর্মীরা উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না সুশান্ত মাহাত ও অলোক চট্টোপাধ্যায়। দলের ব্লক সহ সভাপতি বিপ্রদাস মাহাত ও ঝালদা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি শেক সুলেমান জানিয়েছেন, 'বিধায়ক আর ব্লক সভাপতির ব্যবহারে দলের কর্মীরা সন্তুষ্ট নন। চার মাস আগে বিধানসভা নির্বাচনে রাত দিন পরিশ্রম করে সুশান্ত মাহাতকে জেতানো হল। অথচ আজ পর্যন্ত একটি মিটিং ডাকার প্রয়োজন মনে করলেন না বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতি। উল্টে যাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি তাঁদেরই দলে যোগ দেওয়ানো হচ্ছে। ফলে দলের পুরোনো কর্মীদের গুরুত্ব কমছে। অঞ্চল সভাপতি বা কোনও নেতাকে সে খবর না জানিয়েই যোগ দেওয়ানো হচ্ছে। সমস্যার কথা জেলা কমিটিকে জানানো হয়েছে। আজও হয়নি সমাধান। এদিকে আজকের সভায় যাতে দলীয় কর্মীরা উপস্থিত না হয় তার অনেক চেষ্টা করেছেন দলের ব্লক সভাপতি। তবু হাজারের বেশি কর্মী আজ উপস্থিত হয়েছেন।'
আরও পড়ুন- শুভেন্দুকে রক্ষাকবচ হাইকোর্টের, অনুমতি ছাড়া করা যাবে না গ্রেফতার
আরও পড়ুন- রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকবেন, আজ ভবানীভবনে হাজিরা দিচ্ছেন না শুভেন্দু
এ প্রসঙ্গে অলোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, "যে সভা হয়েছে সেই সভার লাইভ ফুটেজ পেয়েছি। তাতে বিধানসভা নির্বাচনে যাঁরা দলকে চূড়ান্ত অপদস্থ এবং হেনস্থা করেছেন এবং যাঁরা বিজেপির সভা এবং অমিত শাহের সভায় থেকে কাজ করেছেন তাঁরা কবে তৃণমূল করেছেন তা আমার জানা নেই। আগামী দিনে দল যাতে প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে তার একটা চক্রান্ত চলছে। আমরা এখন একটা ভালো জায়গায় এসেছি। এই সভার ব্যাপারে আমাকে কোনও কিছু জানানো হয়নি। এটা পঞ্চায়েত সমিতির ব্যাপার ছিল। আমাকে এ ব্যাপারে জানানো হয়নি। এটা আমার দলের মিটিং ছিল না, দলের মিটিং হলে নিশ্চয়ই আমি থাকতাম। আমাদের দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে তাতে কিন্তু এ ধরনের মিটিংয়ের খবর দেওয়া হয়নি। বেছে বেছে কিছু লোককে ডাকা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে আমাকে জানানো উচিত ছিল। কিন্তু, একটি শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে এভাবে কেউ ব্যক্তি চরিতার্থ স্বার্থ করবে এটা ঠিক নয়। বিষয়টি দলকে জানানো হয়েছে দল ঠিক করবে এ বিষয়ে কি করা যায়।"